মানুষের শরীরে ধাতব হার্ট! ছবি: সংগৃহীত।
অসাধ্যসাধন করলেন আমেরিকার চিকিৎসকেরা। রক্তমাংসের নয়, রোগীর শরীরে প্রতিস্থাপন করা হল ধাতুর তৈরি হৃৎপিণ্ড। সেই হার্ট দিব্যি ৮ দিন ধরে রোগীকে বাঁচিয়েও রাখল। শুকরের হৃৎপিণ্ড মানুষের শরীরে প্রতিস্থাপন নিয়ে হইচই হয়েছিল। এ বার টাইটানিয়াম ধাতু দিয়ে তৈরি হার্ট প্রতিস্থাপন করা হয় ৫৮ বছরের এক রোগীর শরীরে।
টেক্সাসের বেলর সেন্ট লিউক মেডিক্যাল সেন্টারে হৃৎপিণ্ড প্রতিস্থাপনের এই অস্ত্রোপচার করা হয়। 'বাইভ্যাকর টোটাল আর্টিফিসিয়াল হার্ট' নামে একটি সংস্থা টাইটানিয়ামের হৃৎপিণ্ডটি তৈরি করেছে। সেটি রোগীর শরীরে বসিয়ে দেওয়া হয়। জানা গেছে, রোগীর হৃৎপিণ্ড কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছিল। বহু বার হার্ট অ্যাটাকও হয় তাঁর। তার পরই তাঁর হৃৎপিণ্ড প্রতিস্থাপনের সিদ্ধান্ত নেন চিকিৎসকেরা। কিন্তু উপযুক্ত দাতার খোঁজ না পাওয়া অবধি, ধাতুর তৈরি হৃৎপিণ্ড প্রতিস্থাপনের কথা ভাবেন বেলর সেন্ট লিউক মেডিক্যাল সেন্টারের কার্ডিয়োলজিস্টরা।
'বাইভ্যাকর'-এর কর্ণধার ড্যানিয়েল টিমস জানিয়েছেন, টাইটানিয়াম ধাতু দিয়ে তৈরি হৃৎপিণ্ড বহু দিন কর্মক্ষম থাকতে পারবে। রক্তমাংসের হার্টের মতো সেটিতে হৃৎস্পন্দনের হার ওঠানামা করে না। বরং একটি মোটর লাগানো আছে তার ভিতরে, যা সারা শরীরে রক্ত সঞ্চালনের কাজ করে। ধাতব হার্টের কাজই হল রক্ত সঞ্চালন ঠিক রেখে রোগীকে বাঁচিয়ে রাখা। মানুষের রক্তমাংসের সঙ্গে মিশে গেলেও ধাতু থেকে কোনও রকম পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হবে না বলেই দাবি ড্যানিয়েলের। তিনি জানাচ্ছেন, মানুষের শরীরে প্রতিস্থাপনের আগে আরও অনেক পশুর শরীরে ধাতব হার্ট বসিয়ে পরীক্ষা করা হয়েছে। কোনও ক্ষেত্রেই খারাপ ফল পাওয়া যায়নি।
অস্ত্রোপচারের পরে প্রতিস্থাপিত অঙ্গের সঙ্গে দেহের অন্যান্য অঙ্গ মানিয়ে নিতে পারে না অনেক সময়েই। যার জেরে একাধিক সমস্যা তৈরির ঝুঁকি বেড়ে যায়। বিশেষ করে হৃৎপিণ্ডের ক্ষেত্রে এমন হয়। হৃৎপিণ্ডের অন্যান্য অস্ত্রোপচারের তুলনায় প্রতিস্থাপনের ক্ষেত্রে সাফল্যের হার কম। তা ছাড়া সঠিক সময়ে দাতার থেকে হৃৎপিণ্ড পাওয়া, তার সংরক্ষণ, সঠিক উপায়ে প্রতিস্থাপন এবং প্রতিস্থাপনের পরে রোগীর শরীরে কী কী বদল হচ্ছে তা পর্যবেক্ষণে রাখা— সবগুলিই ঝুঁকির কাজ। সেখানে ধাতুর তৈরি হার্ট প্রতিস্থাপনের প্রক্রিয়াকে আরও সহজ করে দিয়েছে বলেই দাবি ড্যানিয়েল ও তাঁর টিমের। যদিও রোগীর শরীরে মাত্র ৮ দিনই ছিল ওই ধাতুর তৈরি হার্ট, পরে রক্তমাংসের হার্টই প্রতিস্থাপন করা হয় রোগীর শরীরে। তবে ওই ৮ দিন রোগীর কোনও রকম শারীরিক সমস্যা হয়নি বলেই দাবি করেছেন চিকিৎসকেরা। দীর্ঘ মেয়াদি ক্ষেত্রে ধাতব হার্ট কতটা কার্যকরী হতে পারবে, এখন সেটিই দেখার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy