অনেকে অ্যালার্ম বাজলেও আরও একটু ঘুমিয়ে নিতে অ্যালার্ম ‘স্নুজ’ করে দেন। প্রতীকী ছবি।
অফিস থেকে ফিরতে দেরি হওয়া, ফিরেও অফিসের কাজ নিয়ে বসা, প্রিয়জনদের সঙ্গে গল্পগুজব, টিভি-সিরিজ দেখা— এ সব করতে গিয়ে রাতে ঘুমোতে যেতে দেরি হয় অনেকেরই। বিছানায় শোয়ার পরও সহজে ঘুম আসতে চায় না। নানা রকম ভাবনাচিন্তা মাথার মধ্যে ঘুরপাক খেতে থাকে। ঘুম আসতে বেশ দেরিই হয়। ছুটির দিন ছাড়া আগের রাতে যত দেরি করেই ঘুমোন না কেন, অফিস থাকলে সেই সকালে ওঠা ছাড়া গতি নেই। অ্যালার্ম ছাড়া অনেকেই ঘুম থেকে উঠতে পারেন না। আবার অ্যালার্ম বাজলেও আরও একটু ঘুমিয়ে নিতে অ্যালার্ম ‘স্নুজ’ করে দেন। অর্থাৎ, কিছু ক্ষণের জন্য অ্যালার্ম বাজা বন্ধ হয়ে যায়। আবার কয়েক মিনিট পর থেকে তা বাজতে থাকে। অনেকেই এই ‘স্নুজ অ্যালার্ম’-এর উপর ভরসা রেখে বিছানা ছাড়ার নির্দিষ্ট সময়ের কয়েক মিনিট বেশি ঘুমিয়ে নেন।
চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, ‘স্নুজ অ্যালার্ম’ স্বাস্থ্যের জন্য ভাল নয়। এই ধরনের অ্যালার্মের ফলে দৈনন্দিন ঘুমের গুণমানকে ব্যহত করে। কয়েক মিনিট অন্তর অন্তর ঘুম থেকে তুলে দেওয়ার এই পদ্ধতি শরীরের উপর প্রভাব ফেলে। সার্বিক সুস্থতার অন্যতম ভিত্তি হল পর্যাপ্ত ঘুম। সেই ঘুমই যদি বারে বারে ভেঙে যায়, শরীরের কার্যকলাপ ভাল থাকবে কী করে? চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, ঘুমের বিভিন্ন ধাপ রয়েছে। যেমন এনআরইএম (নন র্যাপিড আই মুভমেন্ট) এবং আরইএম (র্যাপিড আই মুভমেন্ট)। শুরুতেই খুব গভীর ঘুম আসে না। ধীরে ধীরে ঘুম গভীর ও গাঢ় হয়। বিশেষ করে ‘আরইএম’ পর্যায়ে ঘুম অনেক স্বস্তিদায়ক হয়। এই সময়ে হঠাৎ ঘুম ভেঙে গেলে শরীরের এর প্রভাব পড়তে পারে। ঘুমের চক্র সাধারণত স্থায়ী ৯০ মিনিট। তার পর একটু ভাঙে। আবার এই চক্র শুরু হয়। এমন করে ৪-৬ বার ঘুমের এই চক্রের পুনরাবৃত্তি ঘটে। অ্যালার্ম ‘স্নুজ’ করার ফলে সবচেয়ে বেশি ব্যহত হয় ঘুমের ‘আরইএম’ পর্যায়। এই ধাপে মানুষ সবচেয়ে গভীর ঘুমে লিপ্ত হন। সেটা খুব অল্প সময়ের জন্য হতে পারে। অ্যালার্মের শব্দে এক বার ঘুম ভেঙে যাওয়ার পর ১০ মিনিটের জন্য স্নুজ করে দিলে যে ঘুমটা আসে, সেটাও ‘আরইএম’ পর্যায় হিসাবে ধরা হয়। ৫-১০ মিনিট পর পর ফের অ্যালার্ম বাজতে শুরু করলে হৃদ্স্পন্দন এবং রক্তচাপ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। সুস্থ থাকতে তাই প্রথম অ্যালার্মেই ঘুম থেকে ওঠার পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকরা। তার জন্য ঘুমাতে যাওয়ার আগে কয়েকটি নিয়ম মেনে চলা প্রয়োজন। যাতে বাড়তি ঘুমের প্রয়োজন না হয়।
কী কী নিয়ম মানবেন?
১) ঘুমোতে যাওয়ার আগে কফি বা অ্যালকোহল জাতীয় পানীয় খেতে বারণ করছেন চিকিৎসকরা। এতে ঘুমের স্বাভাবিক চক্র ব্যাহত হতে পারে।
২) রাতে বেশি ক্ষণ মোবাইল ঘাঁটলেও ঘুমের সমস্যা হতে পারে। সে কারণে ঘুমোতে যাওয়ার অন্তত ঘণ্টাখানেক মোবাইলের ব্যবহার বন্ধ করা জরুরি।
৩) ঠিক সময়ে অ্যালার্ম দিন। খুব আগেও নয়, আবার খুব দেরিতেও নয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy