অনেকেই ইচ্ছামতো ট্যাটুতে শরীর ভরিয়ে তুলছেন। ছবি: সংগৃহীত
হাত, বুক, পিঠ, কব্জি, গলা— নানা অঙ্গে ট্যাটু করার চল হয়েছে। আধুনিক সাজ মানেই এখন যেন ট্যাটু। আগে ভারতের বেশ কিছু সম্প্রদায়ের মানুষ জীবনের বিশেষ কোনও ঘটনাকে স্মরণীয় করে রাখতে শরীরের বিভিন্ন অংশে উল্কি করাতেন। তবে সময় যত গড়িয়েছে, ট্যাটুর অর্থ এবং কার্যকরণ অনেক বদলে গিয়েছে। কেউ হাতে খোদাই করছেন সঙ্গীর নাম। আবার কারও শরীরটা হয়ে উঠছে গোটা একটা ক্যানভাস। এ সময়ে ফ্যাশনের অন্যতম অঙ্গ হয়ে উঠেছে ট্যাটু। পাশের বাড়ির মেয়েটি থেকে অফিসের সহকর্মী— অনেকেই ইচ্ছামতো ট্যাটুতে শরীর ভরিয়ে তুলছেন।
ইদানীং ট্যাটু শুধু হাত, পা, পিঠে আবদ্ধ নেই, মাথাতেও ট্যাটু করার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। টাক পড়ে গেলে আর তা নিয়ে মন খারাপ না করে, সেই টাকই দিব্যি সাজিয়ে নেওয়া হচ্ছে ট্যাটু দিয়ে। কেউ শুধু কালো কালি দিয়ে ট্যাটু করাচ্ছেন। কেউ আবার চুল পড়ে যাওয়ার দুঃখ ঢাকছেন নানা রং দিয়ে। গোটা মাথা সাজিয়ে তুলছেন রকমারি রঙের আঁকিবুঁকিতে। বিদেশে এই ‘ফ্যাশন’ ইতিমধ্যেই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। আর এ দেশে কতটা পরিচিত মাথায় ট্যাটু করার এই সাজ? কলকাতায় কি কেউ করাচ্ছেন?
কাদের মধ্যে বেশি এই ধরনের ট্যাটু করার ঝোঁক? এর পরিচর্যাই বা কেমন করে করতে হয়? এ সংক্রান্ত বেশ কিছু প্রশ্নের উত্তর জানতে আনন্দবাজার অনলাইন যোগাযোগ করেছিল সল্টলেকের এক ট্যাটু পার্লারের কর্ণধার শ্রেয়া বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘‘বিদেশে মাথায় ট্যাটু করানো খুব জনপ্রিয়। শুধু টাক পড়লেই নয়, অনেকে তো চুল কেটে ফেলে তার পর ট্যাটু করাচ্ছেন। তবে এখানে সংখ্যাটা সত্যিই খুব কম। শুধু কলকাতাতে নয়, গোটা দেশেই মাথায় ট্যাটু করেছেন এমন মানুষের সংখ্যা হাতে গোনা বলা চলে। এই ধরনের ট্যাটু করার চল এসেছে ইউরোপ থেকে। এখন অন্যরাও করছেন। আমেরিকাতেও অনেকেই করছেন। একটু ভিন্নধারার সংস্কৃতিতে ‘হেড ট্যাটু’র জনপ্রিয়তা রয়েছে।’’
মাথায় ট্যাটু করাতে কি অন্য সব জায়গার থেকে বেশি যন্ত্রণা হয়? কী ভাবেই বা পরিচর্যা করতে হয়? শ্রেয়া বলেন, ‘‘হেড ট্যাটু করতে দরকার সহ্যশক্তি এবং ধৈর্য। কারণ এটি করতে বেশ সময় লাগে। সেই সঙ্গে যন্ত্রণাও করে। প্রতি সপ্তাহে মাথায় গজানো ছোট ছোট চুল তুলে ফেলতে হবে। আমার পার্লারে ২৫-৩০টা মতো এমন ট্যাটু হয়েছে। অ্যালোপেশিয়ায় যাঁরা ভুগছেন, তাঁদের ক্ষেত্রে এই ধরনের ট্যাটু একটা বিকল্প হতে পারে। পুরো মাথায় করালে ২০ হাজার টাকা মতো খরচ পড়ে। খরচটা আসলে বিভিন্ন বিষয়ের উপর নির্ভর করে। অন্তঃসত্ত্বা এবং ডায়াবিটিস— এই দু’টি ক্ষেত্রে এই ধরনের ট্যাটু করার উপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। আর কোনও সমস্যা নেই এই ট্যাটু করাতে।’’
অনেকের টাক পড়ে যাওয়ার পর ট্যাটু করেন। তাঁদের ক্ষেত্রে বিষয়টি এক রকম। আবার অনেকে আছেন যাঁরা চুল কেটে মাথায় ট্যাটু করালেন। তাঁরা যদি বছরখানেক পর আবার আগের মতো এক মাথা চুল ফিরে পেতে চান, তা কি পাওয়া সম্ভব? এই ধরনের ট্যাটু কি পরবর্তীতে চুলের বৃদ্ধিতে কোনও সমস্যা তৈরি করতে পারে? কেশসজ্জাশিল্পী জলি চন্দর কথায়, ‘‘আবার আগের মতো চুল ফিরে পাওয়া অসম্ভব নয়। তবে ট্যাটু থাকাকালীন পরিচর্যাটা খুব যত্ন নিয়ে করতে হবে। মাথায় ট্যাটু করার আগে অতি অবশ্যই কোন কালি দিয়ে ট্যাটু করছেন, তা ভাল করে দেখে নেওয়া জরুরি। এ ক্ষেত্রে ট্যাটু শিল্পীকেও এ বিষয়ে পারদর্শী হতে হবে। তিনিই আসল। তাঁর দক্ষতার উপর সবটা নির্ভর করছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy