রাত জাগলে কী কী নিয়ম মানবেন? ছবি: ফ্রিপিক।
দিনভর কাজের পর পরিশ্রান্ত হয়ে ফিরেও রাতে ঘুম নেই। বিছানায় শুয়ে হয় হাতে মোবাইল বা ট্যাব নিয়ে স্ক্রল করা চলছে, নয়তো টিভি বা ল্যাপটপে জমিয়ে ওয়েব সিরিজ় দেখা হচ্ছে রাতের পর রাত। তার উপর হাজারো দুশ্চিন্তা তো রয়েছেই। কর্মক্ষেত্রের কাজের চাপ ও সংসারের দায়দায়িত্ব একসঙ্গে সামলাতে গিয়ে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠাও কিছু কম হচ্ছে না। সব মিলিয়ে রাতের ঘুমের দফারফা। আর সকাল থেকেই শরীর জুড়ে ক্লান্তি, মাথাব্যথা, আর কত কী সমস্যা! এখানেই শেষ নয়। রাত জাগলে আবার খিদেও কেমন যেন চাগাড় দিয়ে ওঠে। রাত জেগে অফিসের কাজ বা টিভি দেখতে দেখতে টুকটাক মুখ চালানোর অভ্যাসও আছে অনেকের। সেটি চকোলেট হতে পারে বা আইসক্রিম, কিংবা কেক-পেস্ট্রি, অথবা মুচমুচে কোনও স্ন্যাকস। রাতের পর রাত জাগলে, এবং পাশাপাশি ভাজাভুজি খাওয়ায় আসক্তি থাকলে ওজন যেমন বাড়বে, তেমনই হানা দেবে ডায়াবিটিসের মতো অসুখও। স্পেনের ‘ইউরোপিয়ান অ্যাসোসিয়েশন অফ দ্য স্টাডি ফর ডায়াবিটিস’-এর সমীক্ষা বলছে, যাঁরা বেশি রাত জাগেন, তাঁদের টাইপ-২ ডায়াবিটিস হওয়ার আশঙ্কা বহু গুণে বেড়ে যায়।
মাঝেমধ্যে এক-দু’ রাত জাগা তেমন খারাপ নয়। তেমন কোনও ক্ষতি হয় না তাতে। পরে ঘুমিয়ে তা কিছুটা হলেও পুষিয়ে নেওয়া সম্ভব। তা সম্ভব না হলে একটু–আধটু ঘুম ঘুম ভাব থাকে, ক্লান্ত লাগে, খিদে কম পায়, ব্যস এই পর্যন্তই ৷ কিন্তু রাতের পর রাত জাগতে হলে ব্যাপারটা আর অত সহজ থাকে না ৷ নানা দিক থেকে বিপদ এসে হাজির হয় ৷
মেডিসিনের চিকিৎসক অরুণাংশু তালুকদারের মতে, রাত জাগার অনুপান হিসেবে এটা–সেটা খেলে, ওজন বাড়তে শুরু করে ৷ ক্রনিক অসুখবিসুখ থাকলে বা বয়স বেশি হলে রোগের প্রকোপ বাড়ে বা অসুস্থ হয়ে পড়ার আশঙ্কা থাকে। তা ছাড়া রক্তে শর্করার পরিমাণও বাড়তে থাকে। দেখা গিয়েছে, যাঁরা রাত বেশি জাগেন, তাঁদেরই ডায়েট অনিয়মিত হয়ে যায়। কারণ শরীরের একটা ঘড়ি আছে, যা সময় ধরেই চলে। সঠিক সময়ে খাওয়া আর নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমই জরুরি। এই নিয়মের ব্যতিক্রম হলেই তখন স্বাভাবিক ঘুমের চক্র যেমন ব্যাহত হয়, তেমনই শরীরও এই পরিবর্তনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারে না। তখন রক্তচাপের হেরফের হতে পারে, হরমোনের ভারসাম্য বিগড়ে যেতে পারে। ডায়াবিটিস কেবল নয়, বেশি রাগ জেগে ভুলভাল খাওয়া আর অতিরিক্ত নেশা করায় আসক্তি থাকলে হৃদ্রোগও হানা দিতে পারে যখন-তখন। হার্টের ধমনীতে ব্লকেজের সম্ভাবনা বেড়ে যেতে পারে। এ ছাড়াও স্ট্রোক বা কার্ডিয়োভাস্কুলার রোগের ঝুঁকিও বাড়ে।
রাত যদি জাগতেই হয়, তা হলে কম তেল–মশলায় রান্না করা ঘরোয়া খাবার খেতে হবে। রাত জেগে ধূমপান বা মদ্যপান করা চলবে না। ঘন ঘন চা-কফি বা ক্যাফিন আছে এমন পানীয়ও খাওয়া চলবে না। বরং বেশি রাতে খিদে পেলে ড্রাই ফ্রুটস রাখুন সঙ্গে। সব্জি দিয়ে হালকা স্ট্যু বানিয়ে নিতে পারেন। মাসখানেক ধরে টানা রাত জাগলে অম্বল, বদহজম, কোষ্ঠকাঠিন্যের প্রকোপ এড়াতে ফাইবার-সমৃদ্ধ হালকা সুষম খাবার খান৷ সেই সঙ্গে ব্যায়ামও করতে হবে। ঘুমের ছন্দ ঠিক করতে ঘুমের ওষুধ ভুলেও খাবেন না। তাতে অনিদ্রা চেপে ধরবে। তার চেয়ে ঘুমোনোর আগে প্রাণায়াম বা ধ্যান করুন। অভিজ্ঞ প্রশিক্ষকের থেকে শিখে নিন কী ভাবে করলে উপকার পাওয়া যাবে। নিয়মিত মেডিটেশন করলে মন স্থির হবে, ঘুমও আসবে তাড়াতাড়ি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy