Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
ADHD

প্রচণ্ড অস্থিরতা, বারে বারে ভুলে যাওয়া, মনই বসছে না কাজে! মেয়েরা কি ভুগছেন এমন সমস্যায়?

যদি দেখা যায়, অস্থিরতার পাশাপাশি আচরণগত সমস্যাও দেখা দিচ্ছে, কোনও ভাবে মনোযোগ আসছে না, ভুলে যাওয়ার প্রবণতা বিপজ্জনক হয়ে উঠছে, তখন সতর্ক হতে হবে।

Why are so many women being diagnosed with hyperactivity disorder now

মনের অস্থিরতা, ছোট ছোট বিষয় ভুলে যাওয়া কীসের লক্ষণ? ছবি: সংগৃহীত।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ মে ২০২৪ ১৩:১৬
Share: Save:

১৮ বছরের রিয়া অসম্ভব চঞ্চল। কৈশোর পেরিয়ে এলেও তার দুরন্তপনা যায়নি। এক দণ্ড স্থির হয়ে বসতে পারে না সে। সময়ের হিসেবই রাখতে পারে না। কোন কাজে কতটা সময় যাচ্ছে, তা বুঝে উঠতেই সময় চলে যায়। সেই সঙ্গে মনঃসংযোগের অভাব। ছোট ছোট বিষয় ভুলে যাওয়া তো আছেই।

৩০ বছরের সঞ্জনা কখনওই অফিসে নির্দিষ্ট সময়ে পৌঁছতে পারে না। ঘড়ির কাঁটার হিসেব তার তালগোল পাকিয়ে যায়। প্রচণ্ড অস্থিরতা, অকারণ উৎকণ্ঠায় কাজে গোলমাল লেগেই আছে। সব সময়েই তার মনখারাপ থাকে, তাই কোনও কাজেই মন বসে না। কিছু ক্ষণ আগে ঘটা ঘটনাও তার স্মৃতি থেকে উধাও হয়ে যায় মাঝে মাঝে।

এই লক্ষণগুলি এখনকার সময়ে খুবই চেনা। প্রাথমিকের শিশু হোক, বয়ঃসন্ধির নাবালিকা বা অফিসে কর্মরতা যুবতী— অস্থিরতা ও মনঃসংযোগের অভাবে ভুগছেন অনেকেই। ছোটবেলায় একটু আধটু সব শিশুই চঞ্চল হয়। কিন্তু, বড় হওয়ার পরেও চঞ্চলতা, অল্পস্বল্প ভুলে যাওয়ার অভ্যাস থাকে অনেকের। সে ক্ষেত্রেও তাকে রোগ বলা যাবে না। কিন্তু যদি দেখা যায়, অস্থিরতার পাশাপাশি আচরণগত সমস্যাও দেখা দিচ্ছে, কোনও ভাবে মনোযোগ আসছে না, ভুলে যাওয়ার প্রবণতা বিপজ্জনক হয়ে উঠছে, তখন সতর্ক হতে হবে। মনোবিদেরা এই ধরনের সমস্যাকে বলেন ‘অ্যাটেনশন ডেফিসিট হাইপারঅ্যাকটিভ ডিসঅর্ডার’ (এডিএইচডি)’।

‘ন্যাশনাল সেন্টার ফর বায়োটেকনোলজি ইনফরমেশন’ (এনসিবিআই)-এর রিপোর্ট বলছে, শুধু শহর নয়, গ্রামের দিকেও মহিলারা এডিএইচডি নামক এই মানসিক ও আচরণগত সমস্যায় ভুগছে। সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, ১৮ থেকে ২৯ বছর বয়সি ৮২.৭ শতাংশ মহিলাই এই অসুখের শিকার। ৩০ থেকে ৪৯ বছর বয়সি অন্তত ৬০ শতাংশ মহিলা ভুগছেন এই রোগে। আর পঞ্চাশোর্ধ্ব ৫০ শতাংশ মহিলারই এডিএইচডি রয়েছে। অর্থাৎ, আমাদের দেশের কমবয়সিদের একটা বড় অংশ এমন মানসিক সমস্যায় ভুগছে।

কী ধরনের চিকিৎসা জরুরি?

১) সব সময়েই অস্থিরতা, যে কোনও কাজ করার আগে বা কাজের সময় অকারণে উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা, ভয় হলে সতর্ক হতে হবে। এমন লক্ষণ টানা ৬ মাস বা তার বেশি সময় ধরে চললে মনোবিদের কাজে যাওয়া জরুরি।

২) অনেকের ক্ষেত্রে দেখা যায়, শুধু মনোযোগের অভাব, কারও আবার অস্থির ভাব ও মনোযোগের অভাব, দুই-ই থাকে। আচরণগত সমস্যাও থাকে। সে ক্ষেত্রে ‘বিহেভিয়োরাল থেরাপি’ কাজে দিতে পারে।

৩) আচমকা কোনও বড় অঘটন বা অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে তার থেকেও মনে প্রভাব পড়তে পারে। আপনজনের মৃত্যু, সংসারে অশান্তি, শারীরিক বা মানসিক নিগ্রহের ঘটনা ঘটলে এমন ব্যাধি হতে পারে। তাই পরিবারে এমন কোনও রোগী থাকলে তাঁর বিশেষ খেয়াল রাখা দরকার। চারপাশের পরিবেশ সুস্থ রাখা খুব জরুরি।

৪) মনোবিদেরা বলছেন, ওষুধ দিয়ে এই রোগের চিকিৎসা হয়। সে জন্য নিয়ম করে ওষুধ খেতে হবে। অত্যধিক মানসিক চাপ থেকেও এমন হতে পারে। তাই আপনজনের মধ্যে এমন সমস্যায় কেউ ভুগলে তাঁর সঙ্গে চেঁচিয়ে কথা বলা, অভব্য আচরণ, কটুকথা বলা চলবে না। তা হলে সমস্যা আরও জটিল আকার নেবে।

৫) নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমোনোর অভ্যাস খুব জরুরি। ঘুমোনোর এক ঘণ্টা আগে টিভি, কম্পিউটার, মোবাইল-সহ বাড়ির বিভিন্ন বৈদ্যুতিন যন্ত্র বন্ধ করে দিতে হবে।

৬) প্রতিদিনের খাবারে যেন নির্দিষ্ট পরিমাণ কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, ফ্যাট, ভিটামিন ও খনিজ থাকে। সুষম আহার এ ক্ষেত্রে খুব জরুরি।

অন্য বিষয়গুলি:

Hyperactive Mental Health Mental Stress
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy