শিশুদের হাঁপানি এত বাড়ছে কেন, কী বলছে গবেষণা। ছবি: সংগৃহীত।
গোটা দেশেই দূষণ যে ভাবে বাড়ছে, তাতে হাঁপানি আরও প্রবল ভাবে আসর জমিয়ে বসছে। হাঁপানির কষ্টে ভোগেন সারা বছর জুড়ে, এমন মানুষের সংখ্যা অনেক। গরমে, বর্ষায়, শীতে বা ঋতু বদলেও হাঁপানির হাত থেকে রেহাই নেই। হয়তো তীব্রতার তারতম্য আছে, কিন্তু কষ্ট কমবেশি লেগেই থাকে।
দীপাবলি, ছটপুজোতে আতশবাজির বাড়বাড়ন্ত পেরিয়ে শীতের কুয়াশা, গাড়ির ধোঁয়া, ফুলের রেণু, কার্বন-মনোক্সাইড সব মিলিয়ে প্রাণভরে শ্বাস নেওয়ার রাস্তাটুকুও বন্ধ থাকে। তখন হাঁপানির তীব্রতা খুব বেশি। বর্ষার সময়ও হাঁপানিতে তীব্র কষ্ট পান অনেকেই। গরমেও তাই। ঋতু পরিবর্তনেও বাড়ে হাঁপানি।
শিশু হোক বা বয়স্ক, হাঁপানির টান উঠলে স্বভাবতই কষ্ট বাড়ে। অল্প হাঁটলেই বুকে ব্যথা শুরু হয়। ঘুমোতে গেলে বুকের ভিতর ‘সাঁই সাঁই’ শব্দ। সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে, ভিটামিন ডি-র অভাব হলে তার জেরেও হাঁপানি হতে পারে।
‘ন্যাশনাল সেন্টার ফর বায়োটেকনোলজি ইনফরমেশন’ (এনসিবিআই)-এর তথ্য বলছে, যে সব শিশুর শরীরে ভিটেমিন ডি-র মাত্রা কম, তাদেরই বেশি হাঁপানিতে ভুগতে দেখা যায়।
বাড়িতে ধূপের ধোঁয়া, রান্নার ঝাঁজ, বাবা বা মায়ের ধূমপানের অভ্যাস, বেশি ক্ষতি করছে শিশুদের। তাদের হাঁপানিতে ভোগার সম্ভাবনা বাড়ছে। যে সব শিশুদের রক্তে ভিটামিন ডি যথেষ্ট পরিমাণে রয়েছে, তাদের উপর এ সবের প্রভাব অনেক কম পড়ছে।
স্থূলতাও আরও একটা বড় সমস্যা। যে শিশুদের ওজন বেশি এবং তার সঙ্গে রক্তে ভিটামিন ডি-র মাত্রা কম, তাদেরই শ্বাসজনিত রোগ বেশি হওয়ার সম্ভাবনা আছে বলে দাবি গবেষকদের।
হাঁপানির টান উঠলে শ্বাসনালির চারপাশের মাংসপেশি সঙ্কুচিত হয়ে যায়। ফলে নিঃশ্বাস-প্রশ্বাসে সমস্যা হতে থাকে। তখন শ্বাস নেওয়ার সময় বুকে ‘সাঁই সাঁই’ শব্দ হয়, দম বন্ধ হয়ে আসতে থাকে। গবেষকদের দাবি, ভিটামিন ডি শ্বাসনালির সঙ্কোচনে বাধা দেয়। শ্বাসযন্ত্রের ভিতরে প্রদাহ হতে দেয় না। ফলে শ্বাসকষ্টের সমস্যা কমে।
‘জার্নাল অফ অ্যালার্জি অ্যান্ড ক্লিনিকাল ইমিউনোলজি’-র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১২০ জন শিশুর উপরে পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে, স্থূলত্ব, ভিটামিন ডি-র অভাব ও দূষণ শিশুদের হাঁপানির অন্যতম তিন কারণ।
ভিটামিন ডি-কে দু’ভাগে ভাগ করা হয় ভিটামিন ডি৩ ও ভিটামিন ডি২। সূর্যের আলোয় বা রোদে ভিটামিন ডি৩ আমাদের ত্বকেই তৈরি হয়। তবে এই রোদ হতে হবে সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টোর মধ্যে।
ভিটামিন ডি-র ৮০ শতাংশ আসে সূর্যের আলো থেকে। বাকি ২০ শতাংশ বিভিন্ন খাবার থেকে পাওয়া যায়। স্যামন ও টুনা মাছ ভিটামিন ডি-র ভাল উৎস। এই মাছ রোজের ডায়েটে রাখলে ক্যালশিয়াম ও ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিডেরও ঘাটতি মেটে।
যে কোনও দানাশস্যেই যথেষ্ট ভিটামিন ডি থাকে। তাই রোজের ডায়েটে ওট্স রাখা ভাল। প্রাতরাশে দুধ-ওট্স খাওয়াতে পারেন শিশুদের।
শুকনো ফলও ভিটামিন ডি-র উৎস। এ ক্ষেত্রে কাঠবাদাম, খেজুর, আখরোট খুবই উপকারী। পালং শাকে ভরপুর মাত্রায় ভিটামিন ডি ও ক্যালশিয়াম থাকে। তবে শিশুর ডায়েট ঠিক করার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। শিশুর হাঁপানি হলে আতঙ্কের কারণ নেই। চিকিৎসকের পরামর্শমতো চললে এবং ঠিকমতো চিকিৎসা করালে রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy