শিশুর ওজন কমে গেলে বৃদ্ধিও বাধা পাবে। বাবা-মায়েরা কী কী খাওয়াবেন জেনে নিন। ছবি: ফ্রিপিক।
সন্তানের খাওয়াদাওয়া নিয়ে সব বাবা-মাকেই চিন্তা করতে হয়। অধিকাংশ বাবা-মায়ের অভিযোগ, শিশু খেতে চায় না। আর যে খাবারগুলো তার সবচেয়ে বেশি পছন্দের সেগুলোতে পুষ্টিগুণ নেই। বরং খেলে ক্ষতিই বেশি। শিশু চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, একদম সদ্যোজাত থেকে বয়ঃসন্ধি অবধি, সন্তানের খাদ্যাভ্যাসে বিশেষ নজর রেখে চলতে হবে অভিভাবকদের। বিশেষ করে বাড়ন্ত বাচ্চার ডায়েট এমন হতে হবে যাতে তার পুষ্টিগুণে কোনও ঘাটতি না থাকে। বয়স অনুপাতে শিশুর ওজন ও উচ্চতা নির্দিষ্ট হয়। সন্তান সেই মাপকাঠির আওতায় আছে কি না সেদিকে নজর দেওয়া দরকার। পাঁচ বছর অবধি শিশুর খাওয়াদাওয়ার রুটিন এমন ভাবে করতে হবে, যাতে তার পুষ্টি ও বৃদ্ধি সঠিক অনুপাতে হয়। যদি বাবা-মায়েরা দেখেন, শিশুর ওজন বয়স অনুপাতে সে ভাবে বাড়ছে না, তাহলে তার রোজের খাবারে কিছু বদল আনতেই পারেন।
১) সবচেয়ে আগে বাইরের খাবার খাওয়ানো বন্ধ করতে হবে। অনেক বাবা-মাই সময়ের অভাবে শিশুকে রাস্তা থেকে কেনা খাবার খাওয়ান। সেটা ঠিক নয়। বাড়িতেই হাতে গড়া রুটি, সব রকম সব্জি দিয়ে তরকারি, মরসুমি ফল খাওয়াতে হবে শিশুকে। খুদের পাতে মাছ, মাংস, ডিম থাকবে পরিমিত পরিমাণে। বাড়িতে বানানো চাউমিন, ম্যাগিও কম খাওয়ান শিশুকে।
২) ওজন অনেকটা কম থাকলে আলু ও মিষ্টি আলু খাওয়াতে পারেন শিশুকে। অনেক বাবা-মাই ভাবেন আলু খেলে বুঝি শিশু বেশি মোটা হয়ে যাবে। শিশু চিকিৎসেরা জানাচ্ছেন, আলু কী ভাবে খাওয়াচ্ছেন তার উপর নির্ভর করছে। রোজের পাতে আলু সেদ্ধ, আলু মরিচ দিতে পারেন শিশুকে। তেল ছাড়া আলু ভাতে মেখে দিন। আলু, সব্জি দিয়ে কম তেল ও মশলা তরকারি রান্না করে দিন। তবে আলু ভাজা, ফ্রেঞ্চ ফ্রাই বেশি না খাওয়ানোই ভাল।
৩) প্রাতরাশে দুধ-কর্নফ্লেক্স, দুধ দিয়ে ওট্স দিতে পারেন। উপরে ছোট ছোট করে ফল কেটে ছড়িয়ে দিন। অনেক শিশুই দুধ খেতে পছন্দ করে না বা দুধে অ্যালার্জি থাকে। সে ক্ষেত্রে ডালিয়ার খিচুরি, সব্জি দিয়ে ওট্স বানিয়ে দিন। শিশু হয়তো একই খাবার রোজ খেতে চাইবে না। ঘুরিয়ে ফিরিয়ে খাবার দিন। মুগ ডালের চিলা, চিঁড়ের পোলাও, উপমা বানিয়ে দিতে পারেন।
৪) বাইরে থেকে কেনা প্যাকেটজাত মিল্কশেক না দিয়ে, বাড়িতেই বানিয়ে দিন বাদাম দিয়ে মিল্কশেক। এক মুঠো কাঠবাদাম বেশ কিছু ক্ষণ ভিজিয়ে রেখে খোসা ছাড়িয়ে বেটে নিন। এ বার দুধ ঘন করে সেই দুধে কেশর বাদাম কুচি মিশিয়ে বেটে রাখা বাদাম আর চিনি দিয়ে ফুটিয়ে নিন। মিশ্রণটি ঘন হয়ে গেলে ঠান্ডা করে ফ্রিজে রেখে দিতে পারেন। চিজ্, বাড়িতে বানানো লস্যি, দই শিশুর জন্য উপকারী। এইসব দুগ্ধজাত খাবার শিশুর হাড় মজবুত করবে।
৫) শিশুর পুষ্টি ও বুদ্ধির জন্য উপকারী খাবার হল কলা। এতে ভিটামিন সি, ই, কে, পটাশিয়াম, ফোলেট থেকে শুরু থেকে সমস্ত উপকারী ভিটামিন ও খনিজ থাকে। কলা ফাইবারেও ভরপুর।
৬) প্রোটিনের জন্য মাছ, ডিম খাওয়াতেই হবে শিশুকে। রেড মিট না দিয়ে মুরগির মাংসের হালকা কোনও পদ রেঁধে দিন। অনেক শিশুই মাছ খেতে চায় না, বায়না করে। সে ক্ষেত্রে খাওয়াতে পারেন চিকেন স্ট্যু। তাতে গাজর, বিন্স, পেঁপে থাকতেই হবে।
৭) বিভিন্ন রকম বাদাম খাওয়াতে হবে নিয়ম করে। সুস্বাস্থ্যের জন্য শুধু চিনে বাদাম নয় আখরোট, কাঠবাদাম, কাজু, পেস্তা— সব মিশিয়ে একমুঠো করে রোজ খাওয়াতে হবে। বয়ঃসন্ধির মুখে হরমোনের ভারসাম্যে যাতে কোনও সমস্যা না হয়, তার জন্য খাওয়াতে পারেন কুমড়ো, সূর্যমুখী-সহ বিভিন্ন রকমের বীজ।
মনে রাখবেন, বয়স ও উচ্চতার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে শিশুদের ওজন যথাযথ হওয়া জরুরি। না হলে শিশুর বৃদ্ধি বাধা পাবে, শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও কমে যাবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy