শিশু ঘন ঘন বমি করে? বাবা-মায়েরা কী করবেন? ছবি: ফ্রিপিক।
শিশুর কি ঘন ঘন বমি করার অভ্যাস রয়েছে? সকালে ঘুম থেকে উঠে বা রাতের খাবার খাওয়ার পরেই বমি হয়? এমন যদি রোজ হতে থাকে, তা হলে অবহেলা না করাই ভাল। সদ্যোজাত থেকে পাঁচ বছর বা তার বেশি বয়স অবধিও অনেক শিশুর বমি করার সমস্যা থাকে। নিছক পেটের গোলমাল বা জ্বর হলেই যে শিশু বমি করবে, তা নয়। এর পিছনে আরও অনেক সমস্যা লুকিয়ে থাকতে পারে। শিশু যদি রোজই রাতে বমি করে, তা হলে তার খাওয়াদাওয়া নিয়ে যেমন সচেতন হতে হবে, তেমনই কিছু লক্ষণ দেখেও চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে।
এই বিষয়ে শিশু চিকিৎসক প্রিয়ঙ্কর পাল জানাচ্ছেন, এমন অনেক খাবার আছে, যা শিশুর সহ্য না-ও হতে পারে। যেমন অনেক শিশুরই দুধ হজম হয় না। রাতে যদি দুধ বা দুগ্ধজাত কোনও খাবার খাওয়ানো হয়, তা হলে বমি হয়ে যেতে পারে। আবার রাতে বেশি ভারী খাবার খাওয়ালেও অম্বলের কারণে বমি হতে পারে। শিশু যদি ঘন ঘন বাইরের খাবার খায়, তা হলে অন্ত্রে বিষক্রিয়ার কারণেও বমি শুরু হতে পারে। অনেক সময়েই এমন হয় যে, শিশু বমি করার পরে পেট ফাঁকা হয়ে গিয়েছে ভেবে বাবা-মায়েরা আবারও ভারী খাবার খাইয়ে দেন। ফলে শিশুর অস্বস্তি আরও বাড়ে। বমি করার পরে কেবলমাত্র তরল খাবারই দেওয়া যেতে পারে। অথবা বারে বারে নুন-চিনির জল বা ওআরএস খাওয়াতে হবে।
কী কী কারণে রাতে বমি হতে পারে শিশুর?
১) শিশু যদি রাতে খেয়েই শুয়ে পড়ে, তা হলে খাবার হজম হতে দেরি হবে। অ্যাসিড রিফ্লাক্সের সমস্যা দেখা দেবে ছোট থেকেই। তখন খাদ্যনালি দিয়ে অ্যাসিড উঠে আসতে থাকবে। গলা-বুক জ্বালা করবে এবং সেই কারণে শিশু বমি করবে।
২) পেটে আলসার হয়ে থাকলেও বমি করার প্রবণতা দেখা যেতে পারে। তখন শিশুর খিদে কম হবে, কিছু খেলেই পেট ভার হয়ে থাকবে, পেটে ব্যথা হবে। ঘন ঘন বমি ভাব আসবে।
৩) মূত্রনালিতে সংক্রমণ হলে তার থেকেও বমির প্রবণতা আসে। বাবা-মায়েদের খেয়াল করতে হবে, শিশু প্রস্রাব করতে ভয় পাচ্ছে কি না। বারে বারে প্রস্রাবের বেগ, প্রস্রাবের জায়গায় জ্বালা, গায়ে হালকা জ্বর, বমি ভাব— এ সবই মূত্রনালির সংক্রমণের লক্ষণ হতে পারে।
৪) হাঁপানির টানের কারণেও বমি হতে পারে রাতে। শিশু ঘুমোনোর সময়ে মুখ দিয়ে শ্বাস নিচ্ছে কি না, তা খেয়াল করতে হবে। যদি শ্বাস নিতে কষ্ট হয়, শুকনো কাশি হতে থাকে, তা হলেও সাবধান হতে হবে। অনেক সময়ে রাতে হাঁপানির টান উঠলে কাশি শুরু হয়, তখন বমি হতে পারে।
৫) ফ্যারেনজাইটিসের সমস্যা থেকেও বমি হতে পারে ঘন ঘন। অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায়, গলার পিছনের দেওয়ালের গ্র্যানিউলগুলি (গুটি গুটি লাল দানার মতো) বড় হয়ে গিয়েছে। একে বলা হয়, গ্র্যানিউলার ফ্যারেনজাইটিস। তখন খাবার গিলতে কষ্ট হয়, শ্বাস নিতেও সমস্যা হয়। পাঁচ থেকে বারো বছর বয়সিদের এই সমস্যা বেশি হয়। বাড়াবাড়ি হলে ইএনটি চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
কখন চিকিৎসকের কাছে যাবেন?
বাবা-মায়েরা যদি দেখেন টানা ২-৩ দিন ধরে দিনে তিন বারের বেশি বমি হচ্ছে, তা হলে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। এর সঙ্গেই কিছু লক্ষণ দেখা দিতে পারে, যেমন পেটে ব্যথা, গলা ও মাথায় ব্যথা, এমনকি সারা গায়ে র্যাশও বেরোতে পারে শিশুর। জলশূন্যতার সমস্যাও দেখা দিতে পারে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy