শিশুর হার্টে সমস্যা হচ্ছে, কী কী লক্ষণে বুঝবেন? ছবি: ফ্রিপিক।
হার্টের সমস্যা শুধু বড়দের নয়, শিশুদেরও হতে পারে। শিশুদের ক্ষেত্রে হৃদ্পিণ্ডের সমস্যা দু'প্রকারের হয়ে থাকে। প্রথমটি হল জন্মগত। আর দ্বিতীয়তটি জন্মের পরে হওয়া সমস্যা। সচেতন হয়ে ঠিক সময়ে ঠিকমতো চিকিৎসা করালে শিশুরা সুস্থ জীবনযাপন করতে পারে।
এই বিষয়ে শিশুরোগ চিকিৎসক প্রিয়ঙ্কর পাল বলেছেন, “জন্মগত বা সায়ানোটিক সমস্যায় শুরু থেকেই চিকিৎসা হওয়া উচিত। আর নন সায়ানোটিকের ক্ষেত্রে দেখা যায়, শিশুর ওজন বাড়ছে না। খাওয়া কমে যাচ্ছে। খাওয়ার সময় শিশু ঘেমে যাচ্ছে। এমন লক্ষণ দেখা দিলে সতর্ক হতে হবে।” আবার উল্টোটাও হয়। চিকিৎসক জানাচ্ছেন, শিশুর ওজন যদি বেড়ে যায়, স্থূলত্ব দেখা দেয় ছোট থেকেই, তা হলে তার হাত ধরেই ডায়াবিটিস, হার্টের রোগ দেখা দেয়। খাওয়াদাওয়ায় অত্যধিক অনিয়ম, সুষম খাবার না খাওয়া, খেলাধূলা না করার কারণে অনেক শিশুরই পেট-কোমরে মেদ জমতে থাকে ছোট থেকেই। খাবার খেলেও তা ঠিকমতো হজম হয় না। গ্যাস-অম্বলের সমস্যাও দেখা দেয়। একে বলে ‘মেটাবলিক সিনড্রোম’। এই সমস্যা দেখা দিলে পরবর্তী সময়ে হৃদ্রোগের আশঙ্কা অনেক বেড়ে যায়।
শিশুর হার্ট ভাল রাখতে কী কী করবেন বাবা-মায়েরা?
১) প্রিয়ঙ্করের পরামর্শ, বাইরের খাবার পুরোপুরি বন্ধ করতে হবে। চিপ্স, নরম পানীয় অথবা বার্গার-পিৎজ়া একেবারেই চলবে না। খেতে হবে বাড়িতে কম তেলে রান্না করা খাবার। ভাতের সঙ্গে ডাল, মরসুমি সব্জি, মাছ অথবা মাংস বা ডিম খাওয়াতে হবে শিশুকে। মাছ বা মংস সব্জি দিয়ে হালকা করে রান্না করতে হবে। শিশু নিরামিষ খেলে পনির, ছানা, সয়াবিন খাওয়ানো যেতে পারে। দিনে অন্তত একটা করে ফল খাওয়াতেই হবে।
২) শিশুকে নিয়ম করে শরীরচর্চার অভ্যাস করাতে হবে। বাইরে গিয়ে খেলাধুলো করার কোনও বিকল্প নেই। তা যদি না হয়, তা হলে বাড়ির ছাদে অথবা ঘরেই যোগাসন করতে পারে, স্পট জগিং করাও খুব ভাল। হাঁটাহাঁটি, দৌড়নো, সাইকেল চালানো, সাঁতার খুবই ভাল ব্যায়াম। শিশু নিয়ম করে করলে হার্ট ভাল থাকবে।
৩) শিশুর অম্বলের সমস্যা হলেই অ্যান্টাসিড দেবেন না। চিকিৎসক জানাচ্ছেন, অনেক বাবা-মা গ্যাস-অম্বলের ওষুধ খাইয়ে দেন শিশুকে। এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া মারাত্মক। শিশু যদি ঘরে তৈরি হালকা খাবার খায়, তা হলে অম্বলের সমস্যা হবেই না।
৪) রোজের খাবারে প্রোটিন রাখতে হবে। শিশুকে ছোট মাছ বা জিওল মাছ খাওয়ালে খুব ভাল। শিঙি, মাগুরের মতো জিওল মাছ খাওয়াতে পারেন শিশুকে। মাছ থেকে ভরপুর ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড পাবে শিশু, যা হার্টের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ভাল।
৫) শিশুর যদি জন্মগত ভাবে হার্টের সমস্যা থাকে, তা হলে নিয়মিত চেকআপ করাতেই হবে। আর যদি অল্পেই হাঁপিয়ে যাওয়া, শ্বাসকষ্ট, বুকে ব্যথা হওয়ার মতো সমস্যা মাঝেমধ্যেই দেখা দিতে থাকে, তা হলে অবশ্যই অভিজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy