স্তন ক্যানসার থেকে সম্পূর্ণ নিরাময় সম্ভব: চিকিৎসক সায়ন পাল
মহিলাদের শরীরে বাসা বাঁধা ক্যানসারগুলির মধ্যে একটি হল স্তন ক্যান্সার। পরিসংখ্যান বলছে, বিশ্বে প্রতি ৮ জনের মধ্যে এক জন নারী স্তন ক্যানসারে আক্রান্ত হচ্ছেন। বাদ যাচ্ছেন না পুরুষরাও। ভারতের পরিসংখ্যানও বেশ উদ্বেগজনক । দেখা গিয়েছে, প্রতি ২২ জন ভারতীয় মহিলাদের মধ্যে ১ জন স্তন ক্যানসারে আক্রান্ত হচ্ছেন। আবার বিশ্বে যেখানে স্তন ক্যানসারে আক্রান্তদের গড় বয়স প্রায় ৫০ বছর, সেখানে ভারতে ২০-৩০ বছরের মহিলারাও আক্রান্ত হচ্ছেন স্তন ক্যানসারে।
তবে ক্যানসার মানেই কি যন্ত্রনাদায়ক চিকিৎসা? বাঁচার সম্ভাবনা ক্ষীন? ক্যানসার মানেই কি জীবন থেকে সমস্ত খুশি সরিয়ে দিয়ে একপেশে হয়ে যাওয়া? এই উন্নত সমাজে কোন চিকিৎসা পদ্ধতি ক্যানসার রোগীদের সুস্থ করতে পারে? শারীরিক ও মানসিক যন্ত্রণা কমাতে পারে? আলোচনায় অ্যাপোলো হাসপাতাল কলকাতার সিনিয়র ক্যানসার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডাঃ সায়ন পাল।
স্তন ক্যানসার এমন এক ধরনের ক্যানসার যা রেডিওথেরাপি, সার্জারি, কেমোথেরাপি এবং হরমোনাল থেরাপি ইত্যাদি বিভিন্ন পদ্ধতির সংমিশ্রনে চিকিৎসা করা হয়ে থাকে। এই ধরনের ক্যানসার সম্পূর্ণ নিরাময়যোগ্য। চিকিৎসক ডাঃ সায়ন পাল জানাচ্ছেন, “স্তন ক্যানসার থেকে সম্পূর্ণ মুক্তি পাওয়া সম্ভব। কিন্তু সাধারণত যে পদ্ধতিতে চিকিৎসা করা হয় তা অত্যন্ত সময়সাপেক্ষ। সার্জারি, কেমোথেরাপি, রেডিয়েশন সব মিলিয়ে প্রায় ৭-৮ মাস সময় লেগে যায়। কিন্তু আধুনিক পদ্ধতিতে রেডিয়োথেরাপির চিকিৎসা তিন সপ্তাহের বদলে মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যেই সম্পুর্ণ করা সম্ভব।”
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসা বিজ্ঞান উন্নত হচ্ছে। নিমেষে সারিয়ে ফেলা সম্ভব হচ্ছে জটিল, কঠিন রোগকেও। ক্যানসার নিরাময়ে এখনও বিভিন্ন ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে। তেমনই এক পদ্ধতি হল ফাস্ট ফরোয়ার্ড রেডিয়োথেরাপি। ডাঃ সায়ন পাল জানালেন, রেডিয়োথেরাপির এই বিশেষ পদ্ধতিটির প্রাথমিক ট্রায়াল হয়েছিল ব্রিটেনে। প্রায় চার হাজারেরও বেশি স্তন ক্যানসারে আক্রান্ত রোগীদের উপরে এই পরীক্ষামূলক পদ্ধতিটি প্রয়োগ করা হয়েছিল। যার ফলাফল ছিল চোখে পড়ার মতো। সেই পথ ধরেই বর্তমানে ভারত এবং বিশ্বের বেশ কয়েকটি চিকিৎসা কেন্দ্রে স্তন ক্যানসারের চিকিৎসায় এই চিকিৎসা পদ্ধতির প্রয়োগ করছেন চিকিৎসকেরা। " কলকাতা তে এই পদ্ধতি তে চিকিৎসা শুরু করছেন ডাঃ সায়ন পাল।
চিকিৎসার সময়সীমা কমে যাওয়ার ফলে বেশ কয়েকটি সুবিধা হচ্ছে রোগীদের। সাধারণত, স্তন ক্যানসারের চিকিৎসার ক্ষেত্রে ১৫ ( তিন সপ্তাহ) দিন রোজ সংশ্লিষ্ট রোগীকে হাসপাতালে আসতে হয়। এক জন ক্যানসার রোগীর পক্ষে যা অত্যন্ত কষ্টকর। তবে এই আধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতিতে রেডিয়েশনের সময়সীমা কমে গিয়েছে। মাত্র ৫ দিনেই( এক সপ্তাহে) এই পদ্ধতি শেষ করা সম্ভব। পাশাপাশি এই পদ্ধতির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও সামান্য । ফলে রোগীর যাতয়াত, থাকা ও অন্যান্য সংশ্লিষ্ট খরচাও উল্লেখযোগ্য ভাবে কমে গিয়েছে। পাশাপাশি চিকিৎসার জন্য রোগী ও তাঁদের আত্মীয় দের কাজের সময়ের ক্ষতি এড়ানো সম্ভব হয়েছে। অতিমারির সময়, যখন মানুষ ঘর থেকে বের হতে বা হাসপাতালে যেতে ভয় পাচ্ছিলেন, তখন এই পদ্ধতিটি বেশ কার্যকর হয়েছে।
বর্তমানে কলকাতার অ্যাপোলো মাল্টিস্পেশালিটি হাসপাতালে এই আধুনিক পদ্ধতিতে চিকিৎসা করা হচ্ছে স্তন ক্যানসারে আক্রান্ত রোগীদের। শুধুমাত্র চিকিৎসকদের কথাতেই নয়, সেরে ওঠা রোগীদের কথাতেও একটি বিষয় স্পষ্ট যে এই পদ্ধতি আশার আলো দেখাচ্ছে। যা আত্মবিশ্বাস বাড়াচ্ছে সকলের। চিকিৎসা বিজ্ঞানে সব থেকে বড় সাফল্য এটাই।
এই প্রতিবেদনটি অ্যাপোলো মাল্টিস্পেশালিটি হাসপাতালের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে প্রকাশিত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy