ভারী জিনিস সচরাচর তোলেন না। কিন্তু ঘুরতে যাওয়ার সময়ে বেশ কয়েকটি ভারী ব্যাগ বইতে হয়েছে। সেই থেকেই কাঁধে প্রচণ্ড ব্যথা। সঙ্গে দু’দিকের বাহুমূলের তলা থেকে কোমরের উপর পর্যন্ত, অর্থাৎ পাঁজরেও ব্যথা অনুভব করছেন। গরম সেঁক, ব্যথা কমানোর মলম— কোনও কিছুতেই কাজ হয়নি। যোগ প্রশিক্ষকেরা বলছেন, জিমে ভারী যন্ত্র হোক বা বাড়ির ভারী কোনও জিনিস— ওজন তোলার অভ্যাস না থাকলে পেশিতে টান লেগে যাওয়া স্বাভাবিক। চিকিৎসা বিজ্ঞানের পরিভাষায় যাকে ‘মাস্ল স্ট্রেন’ বা ‘মাস্ল স্প্যাজ়ম’ বলা হয়। প্রচণ্ড ব্যথা হলে ওষুধ ছাড়া গতি নেই। তবে নিয়মিত পরিঘাসন অভ্যাস করলে কাঁধ, পাঁজরের পেশি মজবুত হয়। তাই চট করে পেশিতে লেগে যাওয়ার ভয় থাকে না।
সংস্কৃতে ‘পরিঘ’ শব্দের অর্থ প্রবেশদ্বার। ইংরেজিতে যাকে ‘গেট’ বলা হয়। এই আসন অভ্যাস করার সময়ে দেহের ভঙ্গি অনেকটা তেমনই হয়। সম্ভবত পরিঘ থেকেই এই আসনের নাম হয়েছে পরিঘাসন। এই আসন অভ্যাস করা খুব কঠিন নয়। যে কোনও বয়সিরাই পরিঘাসন অভ্যাস করতে পারেন। শিখে নিন পদ্ধতি।
কী ভাবে করবেন?
- প্রথমে ম্যাটের উপর হাঁটু মুড়ে বসুন। ধীরে ধীরে হাঁটুর উপর ভর দিয়ে শরীরটা মাটি থেকে উপর দিকে তুলুন।
- বাঁ পা দেহের বাঁ দিকে প্রসারিত করুন। ডান পা কিন্তু ওই ভাবেই থাকবে।
- এ বার দু’টি হাত প্রথমে মাথার উপর তুলুন। কোমর থেকে দেহের উপরের অংশ ধীরে ধীরে বাঁ দিকে হেলিয়ে দিন।
- শ্বাস নিতে নিতে বাঁ হাত দিয়ে বাঁ পায়ের গোছ স্পর্শ করুন। একান্তই না পারলে যতটা সম্ভব তার কাছাকাছি নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করবেন। ডান হাতও হেলিয়ে মাথার উপর রাখবেন।
- এই অবস্থানে থাকতে হবে ৩০ সেকেন্ড। তার পর একেবারে প্রথম পর্যায়ে ফিরে আসুন। শ্বাস নিন। একই ভাবে ডান পায়ে এই আসনটি অভ্যাস করুন।
- প্রত্যেক পাশে এক বার করে এই ভঙ্গিটি করলে তবে এক রাউন্ড সম্পূর্ণ হবে। এই ভাবে মোট দু’-তিন রাউন্ড অভ্যাস করা যেতে পারে।
কেন করবেন?
পেশির ব্যথায় তো আরাম পাবেনই, সঙ্গে যদি ‘সিওপিডি’ বা ফুসফুস সংক্রান্ত কোনও সমস্যা থাকে, তারও নিরাময় হবে পরিঘাসন অভ্যাস করলে। হজম সংক্রান্ত সমস্যা নিয়ন্ত্রণে রাখতেও এই আসন অভ্যাস করা যায়। কার্ডিয়োভাসকুলার রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কিছুটা হলেও প্রতিরোধ করা যায়।
সতর্কতা:
যাঁদের কাঁধে, হাঁটুতে কিংবা ঘাড়ে আগে থেকে কোনও রকম সমস্যা রয়েছে, তাঁরা এই আসন অভ্যাস করবেন না। সম্প্রতি কোনও রকম অস্ত্রোপচার হয়ে থাকলে শরীরচর্চা না করাই ভাল। এ ছাড়া মেরুদণ্ডে কোনও চোট বা আঘাত লেগে থাকলেও কোনও রকম আসন অভ্যাস করা থেকে বিরত থাকবেন।