কিছু রোজের খাবার যা আমরা সাধারণ বা স্বাস্থ্যকর বলে মনে করি, তা-ই ভুল পদ্ধতিতে রান্না করি বা খাই। ফলে শরীরে বাঁধে হাজারও গোলমাল। ছবি: সংগৃহীত
বাঙালির পেটের গন্ডগোল লেগেই আছে। ইনো, পুদিনহারা, র্যানটাক ছাড়া নাকি তাদের জীবন অচল। অথচ সব সময়ে যে কব্জি ডুবিয়ে লুচি-পাঁঠার মাংস খাওয়া হচ্ছে, তা-ও নয়। রোজের ভাত-ডাল-পাতলা মাছের ঝোল আর রুটি-তরকারি খেয়ে কী করে এত অ্যাসিডিটি, গ্যাস, বদহজম হচ্ছে, তা বুঝতেই রাত কাবার হয়ে যায় বাঙালির। তবে অনেকেরই জানা নেই, কিছু রোজের খাবার যা আমরা সাধারণ বা স্বাস্থ্যকর বলে মনে করি, তা-ই ভুল পদ্ধতিতে রান্না করি বা খাই। ফলে শরীরে বাঁধে হাজারও গোলমাল। এই ভুলগুলি এতই সাধারণ যে অধিকাংশ মানুষই দিনের পর দিন এগুলি করে ফেলে। জেনে নেওয়া যাক সেগুলি কী—
১। রুটি ভুল ভাবে তৈরি
এক বেলা রুটি-তরকারি খাওয়ার প্রচলন অনেক বাঙালি ঘরেই রয়েছে। অনেকে আবার রাতে তৈরি রুটির মধ্যে কয়েকটা রেখে দেন পর দিনের জলখাবারের জন্যেও। কিন্তু এই রুটিগুলি তৈরি করেন কী করে? বেশির ভাগ হেঁশেলে রুটি বেলার পর চাটুতে দু’পিঠ একটু সেঁকে নিয়ে গ্যাসের আঁচের উপর ফেলে ফুলিয়ে নেওয়া হয়। এতে রুটি রীতিমতো ফুলে ওঠে। কিন্তু আপাতদৃষ্টিতে নিরীহ এই রুটি হজম করতে অনেক সময় লাগে। কারণ বাইরেটা ভাল করে সেঁকা হলেও এই পদ্ধতিতে রান্না করলে রুটির ভিতরের কিছু অংশ কাঁচা থেকে যায়। তার চেয়ে রুটি পুরোটাই করুন চাটুর উপরে। ফোলানোর জন্য চাটুতেই রুটির এক দিকে একটি সুতির কাপড় দিয়ে চেপে চেপে ফুলিয়ে নিন। ২-৩ মিনিট সময় বেশি লাগলেও এই রুটি হজম করতে কোনওই সমস্যা হবে না। রুটির আটা মাখার সময়ে দুধ দিয়ে মাখবেন না। কারণ সেই রুটি, তরকারি দিয়ে খেলেই গ্যাস হবে। যদি ওজন কমাতে চান, তা হলে রুটিতে ঘি না লাগিয়ে তরকারিতে এক চামচ ঘি মিশিয়ে দিন।
২। পেঁয়াজ রান্নায় গোলমাল
পেঁয়াজ খেলে শরীর গরম হবে, এমন কথা অনেকেই বলে থাকেন। অনেকে উপোস করার পর কিছুতেই পেঁয়াজ-রসুনের রান্না খান না। আবার অনেকে একদমই তাঁদের খাদ্যাভ্যাস থেকে বাদ রাখেন পেঁয়াজ। আয়ুর্বেদিক মত অনুযায়ী, পেঁয়াজ ধাতে তমসিক। মানে বেশি খেলে অ্যাসিডিটি, বদহজম লেগেই থাকবে। তবে ভারতীয় রান্নার বেশির ভাগ পদ পেঁয়াজ ছাড়া অসম্পূর্ণ। আবার পেঁয়াজে রয়েছে নানা রকম পুষ্টিগুণও। স্যালাডের মধ্যে অল্প পরিমাণে কাঁচা পেঁয়াজ খাওয়া স্বাস্থ্যের পক্ষে উপকারী। আর রান্না করলে পেঁয়াজ অল্প সতেঁ করুন। বাদামি হওয়া পর্যন্ত ভাজবেন না। তা হলেই আর হজমে সমস্যা হবে না।
৩। ভুল ধরনের কলা খাওয়া
কলা অত্যন্ত উপকারী এক ফল। যে কোনও সময়ে যে কোনও জায়গায় খাওয়া যায়, পকেটেও সে ভাবে টান পড়ে না। কলায় রয়েছে নানা রকম পুষ্টিগুণ। খাওয়ার পর চট করে শরীর স্ফূর্তিও পায়। কিন্তু অনেকে বলেন, কলা খেলে অ্যাসিডিটি হচ্ছে। তাঁরা হয়তো খেয়াল করেন না, কোন ধরনের কলা তাঁরা কিনে খাচ্ছেন। পরিষ্কার হলুদ চকচকে কলা ঠিক মতো পাকে না, কিংবা হয়তো কৃত্রিম ভাবে পাকানো হয়। এই দুই-ই শরীরের পক্ষে ভাল নয়। হয় কেনার সময়ে দেখে নিন, কলায় অল্প অল্প কালচে দাগ আছে কি না। না হলে কেনার পর দু’-তিন দিন রেখে দিন। কলার গায়ে কালচে দাগ ফুটে উঠলে বুঝবেন, ঠিক মতো পেকেছে। পাকা কলার স্বাদও হয় মিষ্টি।
৪। মধু রান্নায় দেওয়া
মধুকে অনেকে ভারতীয় সুপারফুড বলে থাকেন। বলার কারণও রয়েছে। চিনির বদলে মধু খাওয়া স্বাস্থ্যের পক্ষে অনেক বেশি ভাল। মধুতে রয়েছে নানা রকম পুষ্টিগুণও। মধু খেলে সর্দি-কাশি কিংবা শরীরের কোনও রকম প্রদাহ কমে যায় তাড়াতাড়ি। কিন্তু মধু ফুটিয়ে খেলেই তার ধরন বদলে যায়। সেই মধু খেলে পেটের গন্ডগোল বাঁধতেই পারে। অনেক রকম চাইনিজ রান্নায় মধু দেওয়ার কথা বলা হয়। ফুটন্ত জলে মধু দেওয়ার ঠিক নয়। তবে গরম দুধে খেতে পারেন। কিংবা ঈষদুষ্ণ জলে মধু মিশিয়েও খেতে পারেন। এই দুই-ই শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী। চা-কফি বা শরবতেও চিনির বদলে মধু দিতে পারেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy