ডায়াবেটিকের ফুট আলসারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি কেন? ছবি: সংগৃহীত।
ডায়াবিটিস মানেই জীবনে চলে আসে একাধিক বিধিনিষেধ। জীবনযাপনে হাজার বেনিয়মের কারণে ডায়াবিটিস রোগ এখন ঘরে ঘরে। সব চেয়ে দ্রুত বেড়ে চলা রোগগুলির মধ্যে ডায়াবিটিস অন্যতম। দীর্ঘ দিন ধরে অতিরিক্ত মাত্রায় ক্যালোরি এবং কার্বোহাইড্রেট খাওয়ার ফলে ঘুম কম হওয়া, অবসাদ, উদ্বেগজনিত বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে থাকে। শরীরের সঙ্গে এই অনিয়মের ফলে রক্তে শর্করার মাত্রা ওঠানামা করতে শুরু করে। শরীরে বাসা বাঁধে ডায়াবিটিস।
ডায়াবিটিস রোগ শরীরে বাসা বাঁধলেই সঙ্গে নিয়ে আসে আরও হাজারটা রোগ। লিভারের সমস্যা, কিডনির সমস্যার পাশাপাশি ডায়াবেটিকদের মধ্যে শতকরা প্রায় ১০ শতাংশের বেশি মানুষের ‘ডায়াবেটিক ফুট আলসার’-এর ঝুঁকি থাকে। পা ঘেমে যাওয়া, লালচে ভাব, পায়ের চাম়ড়া থেকে তরল পদার্থ বেরিয়ে আসা, পায়ে দুর্গন্ধ— এমন কয়েকটি লক্ষণ দেখা যায় এ ক্ষেত্রে।
পায়ের আলসারের অন্যতম কারণ হল ‘ডায়াবেটিক নিউরোপ্যাথি’। হাইপারগ্লাইসিমিয়া, অর্থাৎ রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে গেলে তার প্রভাব পড়ে স্নায়ুর উপরেও। ক্রনিক ডায়াবিটিস রোগীদের পায়ের স্নায়ুর কার্যকারিতা নষ্ট হয়ে যাওয়ার পাশাপাশি পায়ের পেশি, হাড়, ত্বক— একে একে সবই ক্ষতিগ্রস্ত হতে শুরু করে।
ঠিক কী কী সমস্যা হয়?
১) পায়ে তীব্র যন্ত্রণা ও চামড়ার রং পরিবর্তন হওয়া।
২) পায়ের চামড়ায় ক্ষত তৈরি হওয়া।
৩) পায়ের মাংস, লিগামেন্টে ক্ষত সৃষ্টি।
৪) পায়ের হাড়ে ক্ষত তৈরি হওয়া।
৫) নখে পচন ধরে যাওয়া।
৬) পুরো পায়ের পাতায় পচন ধরে যাওয়া।
ডায়াবেটিক ফুট আলসার বার বার হওয়ার আশঙ্কা থাকে। যাঁদের বার বার সংক্রমণ হয়, তাঁদের ১০-৩০ শতাংশ ক্ষেত্রে আঙুল, পায়ের কিছু অংশ অথবা পুরো পা কেটে ফেলার সম্ভাবনাও থাকে। তাই ডায়াবিটিস আছে এমন রোগীদের পায়ের যে কোনও সমস্যা দেখলেই দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। ডায়াবেটিক ফুট আলসার থাকলে কী ভাবে পায়ের যত্ন নেবেন কী ভাবে?
১) পায়ের নখ বড় হওয়ার আগেই কেটে ফেলুন। মাঝে মাঝেই গরম জলে পা ডুবিয়ে রেখে মৃদু সাবান দিয়ে পরিষ্কার করুন। পায়ে নারকেল বা ক্রিম লাগিয়ে নরম করে রাখতে হবে।
২) বাড়িতেও খালি পায়ে হাঁটাহাঁটি না করাই ভাল। আঁটসাঁট জুতো না পরে হালকা খোলামেলা জুতো পরুন।
৩) বর্ষায় এমনিতেই পায়ের সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ে। রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে পায়ের তলা এবং আঙুলের ফাঁকে অ্যান্টিফাঙ্গাল পাউডার মেখে নিন।
৪) এই রোগে আক্রান্ত হলে অনেক সময় পায়ে সাড় থাকে না। তেমন হলে পায়ে গরম সেঁক দিতে পারেন।
৫) পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রেখে চলতে হবে। মোজা, জুতো নিয়মিত পরিষ্কার করা উচিত। বর্ষার মরসুমে এই বিষয়ে বিশেষ সতর্ক থাকা জরুরি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy