Advertisement
১৮ অক্টোবর ২০২৪
Fitness Routine

সামান্থা রুথ প্রভুর দিন কেমন যায়? সকাল থেকে রাত পর্যন্ত কী কী করেন অভিনেত্রী?

২০২২ সালে প্রথম পেশির প্রদাহজনিত অসুখ মায়োসাইটিসে ভোগার কথা জানান সামান্থা। তার পর থেকেই রোগের সঙ্গে লড়াই চলছে। একটু একটু করে সুস্থ হচ্ছেন। রোজের কিছু অভ্যাসই তাঁকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে দিয়েছে।

Samantha Ruth Prabhu’s daily routine and balanced diet

সামান্থা দিন শুরু করেন কী ভাবে? ছবি: সংগৃহীত।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ অক্টোবর ২০২৪ ১৮:০৩
Share: Save:

গত কয়েক বছরে ব্যক্তিগত জীবনে একের পর এক ঝড় সামলে আপাতত কিছুটা থিতু হয়েছেন অভিনেত্রী সামান্থা রুথ প্রভু। নাগা চৈতন্যর সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদের পরে মানসিক ভাবে একেবারে ভেঙে পড়েছিলেন সামান্থা। তার পরেই মায়োসাইটিস নামক বিরল রোগ ধরা পড়ে তাঁর। ২০২২ সালে প্রথম পেশির প্রদাহজনিত এই অসুখে ভোগার কথা জানান সামান্থা। তার পর থেকেই রোগের সঙ্গে লড়াই চলছে। একটু একটু করে সুস্থ হচ্ছেন। কাজেও ফিরেছেন। কড়া ডায়েট ও শরীরচর্চার মাধ্যমে রোগ নির্মূল করার চেষ্টা করছেন। সামান্থার রোজের জীবনযাপনে অনেক বদল এসেছে। আগের মতোই ত্বকের দীপ্তি ফিরে পেতে ও সক্রিয় থাকতে সামান্থা ঠিক কী কী করছেন, তা জানিয়েছেন নিজেই।

মায়োসাইটিসে আক্রান্ত হওয়ার পর থেকে লম্বা সময় ধরে শারীরিক যন্ত্রণা সহ্য করতে হচ্ছে তাঁকে। কারণ, এই রোগটিতে পেশিতে প্রদাহ বাড়ে। এমন এক ‘অটো ইমিউন’ রোগ যাতে নিজের শরীরের প্রতিরোধ ব্যবস্থা ভুলবশত দেহেরই সুস্থ-সবল পেশিকে আক্রমণ করে। ফলে পেশির দুর্বলতা বাড়তে থাকে। প্রথম প্রথম দেহের বিভিন্ন অঙ্গে শুরু হয় ব্যথা। হাত, পা, ঘাড়ের পেশিতে যন্ত্রণা হয়। পেশি এতই দুর্বল হয়ে যায় যে, রোগী মাঝেমধ্যেই পড়ে যেতে পারেন। একটানা দাঁড়িয়ে থাকলে কিংবা দীর্ঘ ক্ষণ বসে থাকলে ক্লান্ত লাগে শরীর। সেই সঙ্গে শ্বাসপ্রশ্বাসের সমস্যাও শুরু হয়। সামান্থা জানিয়েছেন, বিরল এই রোগ সারিয়ে ওঠা খুবই কঠিন ছিল। কিন্তু দৈনন্দিন জীবনে নিয়ম মেনেই তিনি সুস্থতার পথে হাঁটছেন। অভিনেত্রীর পরামর্শ, ডায়েট, শরীরচর্চা, মেডিটেশন ও কিছু অভ্যাস সঠিক ভাবে মেনে চললেই সুস্থ থাকা সম্ভব।

সামান্থার রোজের রুটিন কেমন?

সামান্থার দিন শুরু হয় সকাল সাড়ে ৬টা থেকে। ঘুম থেকে উঠেই রোদে কিছু ক্ষণ হাঁটাহাঁটি করেন। গায়ে রোদ লাগানোর পরে তাঁর পরবর্তী কাজ ‘অয়েল পুলিং’। এমন এক পদ্ধতি, যেখানে জলের বদলে মুখ কুলকুচি করা হয় তেল দিয়ে। প্রাচীন ভারতীয় আয়ুর্বেদ শাস্ত্রেই এমন পদ্ধতির উল্লেখ আছে। তেল দিয়ে কুলকুচি করে দাঁত ও মাড়ি ভাল থাকে, মুখে দুর্গন্ধ হয় না, মুখের ভিতর কোনও রকম জীবাণুঘটিত সংক্রমণের আশঙ্কাও থাকে না।

এর পর শরীরচর্চা শুরু হয় সকাল ৭টা থেকে। অভিজ্ঞ প্রশিক্ষকের সাহায্যেই বিভিন্ন রকম ওয়েট ট্রেনিং ও কার্ডিয়ো করেন সামান্থা। যে হেতু মায়োসাইটিস রোগের কারণে তাঁর পেশি দুর্বল হয়ে পড়েছে, তাই পেশির শক্তি বাড়াতেই ওজন তুলে ব্যায়াম করেন সামান্থা। এই শরীরচর্চার অভ্যাসই তাঁকে সুস্থ করে তুলছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

দীর্ঘ দিনের অসুখে চোখ-মুখের দীপ্তি একেবারেই হারিয়ে গিয়েছিল অভিনেত্রীর। তাঁর কোটরে বসা চোখ, মুখচোখে কালচে ছোপ, চোখের তলায় কালি দেখে চমকে গিয়েছিলেন অনুরাগীরাও। সামান্থা জানিয়েছেন, রোগের জন্য কড়া ওষুধ খেতে হয়। এই ওষুধের প্রভাব পড়ে তাঁর ত্বকের উপরে। পিগমেন্টেশন, শুষ্কতা ও ফোলা ভাবও তৈরি হয়। এর থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য ‘রেড লাইট থেরাপি’ শুরু করেছেন তিনি। ত্বকের জৌলুস ফেরাতে অনেকেই এখন এই থেরাপির সাহায্য নিচ্ছেন। লেজ়ার আলো দিয়ে ত্বকে এই থেরাপি করা হয়। আবার অনেক ক্ষেত্রে একটি মুখোশ পরিয়ে দেওয়া হয়। মুখোশের মধ্যে একাধিক লাল এলইডি আলো দেওয়া থাকে। ত্বকের মধ্যে সরাসরি সেই আলো প্রবেশ করে। বিভিন্ন তরঙ্গ দৈর্ঘ্যের এই আলো ত্বকের বিভিন্ন গভীরতায় প্রবেশ করে ক্ষতিগ্রস্ত কোষগুলিকে মেরামত করে। ত্বকের প্রদাহ দূর করে, ত্বকের বয়সও কমায় এই লাল আলোর থেরাপি।

রেড লাইট থেরাপির পরে বরফ জলে বেশ কিছু ক্ষণ মুখ ডুবিয়ে রাখেন সামান্থা। এটিও এক ধরনের ফেশিয়াল থেরাপি, যা ত্বকের প্রদাহ, বলিরেখা ও ব্রণের সমস্যা দূর করে। কেবল সামান্থা নন, বলিউডের অনেক অভিনেত্রীই এই ‘আইস ওয়াটার থেরাপি’ করেন।

সন্ধ্যা ৬টায় ফের রেড লাইট থেরাপির পরে পিক্‌লবল খেলতে চলে যান সামান্থা। টেনিসের মতোই এই খেলা র‌্যাকেটের বদলে খেলা হয় প্যাডল দিয়ে। টেনিস কোর্টের থেকে আকার ও আয়তনে ছোট হয় পিক্‌লবল কোর্ট। দু’জন বা চার জন খেলতে পারেন। এই খেলা নিয়মিত অভ্যাস করলে হাত-পায়ের পেশির সক্রিয়তা বাড়ে। খেলা শেষে কিছু ক্ষণ মেডিটেশন করেন সামান্থা। তার পর ১০টার মধ্যেই শুতে চলে যান তিনি। অভিনেত্রী জানিয়েছেন, এই রুটিন মেনেই তিনি এখন সুস্থ তো বটেই, তাঁর চনমনে ভাবও ফিরে এসেছে।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE