ভুঁড়ি বাড়লে বাড়তে পারে যকৃতের সমস্যা। ছবি: সংগৃহীত
শুধু যে মদ্যপানেই যকৃতের অসুখ হয়, তা নয়। ভুঁড়ি বাড়লেও এর ঝুঁকি বাড়ে। ‘নন অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার’-এর সবচেয়ে বড় কারণ কোমর ও পেটের চর্বি।
ছোট থেকে বড়— সকলেরই ভুঁড়ি বাড়লে যকৃতে মেদ জমার আশঙ্কা বাড়ে। এর ফলে যকৃত স্বাভাবিক ভাবে কাজ করতে পারে না। মদ্যপানের নেশা না থাকলেও শুধুমাত্র ভুঁড়ির কারণে ফ্যাটি লিভারের সমস্যা-সহ নানা অসুখের আশঙ্কা বাড়ে। তেমনই বলছেন চিত্তরঞ্জন ন্যাশনাল ক্যানসার ইনস্টিটিউটের মেডিক্যাল সুপারিন্টেন্ডেন্ট এবং এনএবিএল-এর উপদেষ্টা চিকিৎসক শঙ্কর সেনগুপ্ত।
প্রশ্ন: হজমের গোলমাল, অ্যাসিডিটি, গ্যাস হওয়া বা পেটের গণ্ডগোল মানেই কি যকৃতের অসুখ?
উত্তর: সব সময় তা নয়। বেশির ভাগ সময় আমাদের অজান্তেই যকৃতের কাজ করার ক্ষমতা কমতে শুরু করে। কখনও কখনও বিলিরুবিন বেড়ে যায়, অর্থাৎ শরীর হলুদ হয়ে যায়। আবার অনেক সময় সে রকম কোনও উপসর্গই থাকে না।
প্রশ্ন: তাহলে কী কী উপসর্গ দেখলে সতর্ক হতে হবে?
উত্তর: প্রথম উপসর্গ অবশ্যই কোমর ও পেটের মাপ স্বাভাবিকের থেকে বেড়ে যাওয়া। তেমন হলেই দ্রুত শরীরচর্চা ও সঠিক খাদ্যাভ্যাসের সাহায্য নিয়ে ভুঁড়ি কমাতে হবে। যকৃতের কাজ করার ক্ষমতা কমে গেলে শুরুতে খাবারে অরুচি হয়। ওজন কমতে শুরু করে। গা গুলাতে শুরু করে। বমিও হতে পারে। মাথা ঝিমঝিম করে। কাজকর্মে উৎসাহ কমে যায়। দূর্বল লাগে।
প্রশ্ন: যকৃতের কাজ কমে গেলে নাকি অবসাদের আশঙ্কা থাকে?
উত্তর: যকৃতে মেদ জমলে তার প্রভাব পড়ে মনের ওপরেও। ক্রনিক মাথাব্যথা, মনখারাপ ও অবসাদ, উদ্বেগ— এ রকম কিছু উপসর্গের আশঙ্কা বাড়ে।
প্রশ্ন: মদ্যপান ও ভুঁড়ি বেড়ে যাওয়া ছাড়া আর কোন কোন কারণে যকৃতের ক্ষমতা কমে যায়?
উত্তর: কিছু ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবেও নন অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার হতে পারে। তাই কিছু বিশেষ ওষুধ খাওয়ার আগে যকৃতের এনজাইম পরীক্ষা করিয়ে নেওয়া উচিত। টানা অনেক দিন কোনও ওষুধ খাওয়ার প্রয়োজন হলেও যকৃতের এনজাইম পরীক্ষা করিয়ে নেওয়া দরকার। স্ত্রীরোগের কারণে অনেক দিন হরমোনের ওষুধ খেলেও তার প্রভাব যকৃতে পড়তে পারে। তেমন হলে ‘লিভার ফাংশন টেস্ট’ করাতে হবে।
প্রশ্ন: ‘লিভার ফাংশন টেস্ট’ কী?
উত্তর: ‘লিভার ফাংশন টেস্ট’-এর মধ্যে আছে অ্যালবুমিন (এএলবি), অ্যালামাইন ট্র্যান্স অ্যামাইলেজ (এএলটি)। অনেকে দ্বিতীয়টিকে এসজিপিটি বলেন। এ ছাড়া এএসটি বা ‘অ্যাসপারটেট ট্র্যান্স অ্যামাইলেজ’ (এটির চেনা নাম এসজিওটি), অ্যালকালাইন ফসফেট বা এএলপি, টোটাল বিলিরুবিন বা টিবিআইএল ইত্যাদি পরীক্ষা করা হয়। যকৃতের উৎসেচকগুলির (লিভার এনজাইম) মাত্রার হেরফের হয়েছে কি না দেখা হয়। মনে রাখতে হবে, যকৃতের অসুখের অন্যতম কারণ স্বাভাবিকের থেকে বেশি ওজন আর ভুঁড়ি। নিয়মিত ব্যায়াম, সকালে হাঁটা এবং খাবার নিয়ন্ত্রণ করে মেদ কমিয়ে যকৃত সুস্থ রাখা সম্ভব।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy