প্রতীকী ছবি। ছবি: সংগৃহীত
জন্মের সময়ে একটি শিশুর যা ওজন থাকে, তার তুলনায় তিন গুণ ওজন বাড়া উচিত প্রথম বছরে। শিশু কী খাচ্ছে তার উপর নির্ভর করবে এই ওজন। ফর্মুলার তুলনায় মাতৃদুগ্ধ একটি শিশুর পক্ষে অনেক বেশি উপকারি। তাই করোনাকালে মায়েদের কোভিড হলেও স্তন্যপান করানো বন্ধ রাখা উচিত নয়। এমনটাই মত স্ত্রীরোগ চিকিৎসক এবং বন্ধ্যাত্ব বিশেষজ্ঞ সি জয়শ্রী রেড্ডির। ‘বিশ্ব মাতৃদুগ্ধ সপ্তাহ’এ তিনি নতুন মায়েদের আরও কিছু জরুরি প্রশ্নের উত্তর দিলেন ‘আনন্দবাজার অনলাইন’এ।
প্রশ্ন: মায়ের শরীরে পর্যাপ্ত দুধ তৈরি না হলে কী করণীয়?
উত্তর: অনেক কারণে মায়ের শরীরে পর্যাপ্ত মাতৃদুগ্ধ তৈরি নাও হতে পারে। সে ক্ষেত্রে স্তনকে জানান দিতে হবে যে আরও দুধের প্রয়োজন। ব্রেস্ট ম্যাসাজ অনেক সময় কাজে লাগে। তার চেয়েও বেশি উপকারি শিশুকে স্তন্যপান করিয়ে যাওয়া। যতটা দুধ শরীরে তৈরি হচ্ছে সেটা শেষ না হলে শরীর আবার দুধ তৈরি করবে না। তাই ব্রেস্ট পাম্পের সাহায্যেও দুধ বার করে রাখতে পারেন। পর্যাপ্ত পরিমাণে জল খান, ক্যাফিন কম করুন, স্তন্যপান করানোর আগে ঈষদুষ্ণ গরম জলে স্নান বা হিটিং প্যাডের ব্যবহার করতে পারেন। এবং এই নিয়ে খুব একটা মানসিক চাপে থাকবেন না। মানসিক চাপে শরীর আরও কম দুধ তৈরি করতে পারে। অভিজ্ঞতা উপভোগ করার চেষ্টা করুন।
প্রশ্ন: কখনও কখনও মাতৃদুগ্ধের বদলে ফর্মুলার দুধে বেশি অভ্যস্ত হয়ে পড়ে শিশুরা। সে ক্ষেত্রে কী করা উচিত?
উত্তর: মনে রাখবেন, মাতৃদুগ্ধ সব সময়েই ফর্মুলার চেয়ে বেশি উপকারি যে কোনও শিশুর ক্ষেত্রে। মাতৃদুগ্ধের মাধ্যমে মায়ের শরীর থেকে অ্যান্টিবডি শিশুর শরীরে যায়। ফর্মুলাতে সেটা থাকবে না। তাই রোগ-ব্যাধি হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। যদি শিশু মাতৃদুগ্ধ খেতে না চায়, তা হলে কিছু উপায়ে চেষ্টা করে দেখতে পারেন।
১। বাচ্চাকে অন্য ভাবে কোলে শুয়িয়ে দেখুন। অনেক সময়ে বাচ্চারা একটি স্থানে অস্বস্তিবোধ করে। হাল ছেড়ে দিলে চলবে না। জায়গা বদল করে করে দেখতে হবে কী ভাবে খাওয়ালে শিশু স্তন্যপান করছে।
২। আপনার জায়গা বদল করুন। অনেক সময়ে খুব আওয়াজের মধ্যে শিশু স্তন্যপান করতে চাইবে না। একটু শান্ত জায়গায় গিয়ে দেখুন।
৩। খিদে পেলে তখনই স্তন্যপান করান। বাচ্চার পেট ভর্তি থাকলে জোর করে খাওয়ালে সে কিছুতেই খেতে চাইবে না।
৪। মায়ের শরীরের সঙ্গে শিশুর শরীরের স্পর্শ খুবই জরুরি। তখনই শিশু স্বচ্ছন্দে স্তন্যপান করবে।
প্রশ্ন: স্তন্যপান করানো মায়েরা কোভিড টিকা নিতে পারেন, জানিয়েছে কেন্দ্র। আপনার কী মত?
উত্তর: অবিলম্বে সকলেরই কোভিড-টিকা নিয়ে নেওয়া উচিত। নতুন মায়েদের টিকাকরণ হয়ে গেলে তাঁরা নিজেকে বেশি সুরক্ষিত রাখতে পারবে এবং শিশুও সুরক্ষিত থাকবে। মায়েদের টিকাকরণ হলে তাঁদের শরীরে আইজিজি এবং আইজিএ অ্যান্টিবডি তৈরি হবে। যা মাতৃদুগ্ধের মাধ্যমে শিশুর শরীরে প্রবেশ করে শিশুকেও সুরক্ষিত রাখবে। এমনিতেও মাতৃদুগ্ধ শিশুদের অনেক রোগ-ব্যাধি থেকে বাঁচায়। এ ক্ষেত্রেও তা হওয়া উচিত। এখনও পর্যন্ত যে প্রতিষেধক বাজারে রয়েছে, সেগুলির কোনওটাই মাতৃদুগ্ধের পক্ষে ক্ষতিকর বলে জানা যায়নি। তাই নিশ্চিন্তে টিকাকরণ করিয়ে নেওয়া উচিত।
প্রশ্ন: মায়ের কোভিড হলে কি শিশুকে স্তন্যপান করানো যাবে? কী ভাবে করানো উচিত?
উত্তর: কোভি়ড আক্রান্ত মায়েদের মাতৃদুগ্ধ থেকে এখনও পর্যন্ত কোনও রকম ভাইরাল আরএনএ পাওয়া যায়নি। তাই মাতৃদুগ্ধের মাধ্যমে কোভিড সংক্রমণের কথাও শোনা যায়নি। তবে স্তন্যপান করানোর আগে হাত ভাল করে ধুতে হবে। কোনও জিনিসে হাত দেওয়ার পর বাচ্চাকে ধরতে গেলে হাত স্যানিটাইজ করতে হবে। নিজেকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে। মাস্ক পরে স্তন্যপান করান। বাচ্চাকে স্তন্যপান করানোর সময়ে কাশি আটকানোর চেষ্টা করুন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy