বয়স ৬০ পেরিয়ে যাওয়ার পরেই মূলত মস্তিষ্কের জটিল স্নায়ুর রোগ পার্কিনসন্সে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়। এই রোগের যে উৎস কোথায়, তা কেউ নির্দিষ্ট করে বলতে পারেন না। এ নিয়ে বিভিন্ন দেশে নিরন্তর গবেষণা চলছে। তবে সাম্প্রতিক একটি গবেষণা বলছে, স্নায়ুর এই জটিল রোগের সঙ্গে অন্ত্রের যোগ রয়েছে। ‘গাট’ পত্রিকায় এই তথ্যটি প্রকাশিত হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, দীর্ঘ দিন ধরে থাকা ইরিটেবল বাওয়েল্স, কোষ্ঠকাঠিন্য, ক্ষুধামান্দ্যের মতো সমস্যা পার্কিনসন্সে আক্রান্ত হওয়ার পূর্বাভাস হলেও হতে পারে।
আরও পড়ুন:
যদিও গবেষকেরা বলছেন, প্রাথমিক ভাবে দূষণের মাত্রা বেড়ে যাওয়া, খাবারে টক্সিনের উপস্থিতি এবং জিনঘটিত কারণেও পার্কিনসন্সের মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। কোনও ব্যক্তি এই রোগে আক্রান্ত হলে মস্তিষ্কের স্নায়ুকোষ বা নিউরন নষ্ট হতে থাকে। ফলে ব্যাহত হয় স্নায়বিক কার্যকলাপ এবং নড়াচড়ার উপর ক্রমেই নিয়ন্ত্রণ হারাতে থাকেন রোগী। দেহের ভারসাম্য নষ্ট হয়। অন্ত্রের সঙ্গে জটিল এই স্নায়ুর রোগের আদৌ কোনও যোগ আছে কি না, তা খুঁজে বার করাই গবেষণার উদ্দেশ্য ছিল। ২৪ হাজার ৬২৪ জন পার্কিনসন্স রোগী এই গবেষণার সমীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছিলেন। বিজ্ঞানীরা তাঁদের অন্ত্রের স্বাস্থ্যের পরিপ্রেক্ষিতে রোগীদের দু'টি দলে ভাগ করে দিয়েছিলেন। একটি দলে রাখা হয়েছিল সেই সব পার্কিনসন্স আক্রান্ত রোগীদের, যাঁদের অন্ত্রের তেমন কোনও সমস্যা নেই। আর অন্য দলে রাখা হয়েছিল তাঁদের, যাঁরা নিয়মিত পেটের সমস্যায় ভুগছেন।
আরও পড়ুন:
দীর্ঘ পাঁচ বছর ধরে সমীক্ষায় অংশগ্রহণকারীদের গতিবিধির উপর নজর রেখেছিলেন বেলজিয়ামের লিউভেন বিশ্ববিদ্যালয় এবং মেয়ো ক্লিনিকের একদল গবেষক। গবেষণা শেষে তাঁরা জানান, যাঁদের খাবার খেতে বা খেয়ে হজম করতে সমস্যা হয়, কোষ্ঠ পরিষ্কার হয় না, ইরিটেবল বাওয়েলের মতো সমস্যা রয়েছে, তাঁদের পার্কিনসন্স-এর মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা ১৭ শতাংশ বেশি।