প্রাণিজ দুধ না উদ্ভিজ্জ দুধ, কোনটির খাবেন? প্রতীকী ছবি।
দুধকে সুষম খাবারই বলেন পুষ্টিবিদেরা। প্রোটিন, ভিটামিন, ক্যালশিয়াম-সহ বিভিন্ন খনিজ উপাদান দুধে এত বেশি থাকে, যে শরীরের পুষ্টি ও বৃদ্ধির জন্য দুধ খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। দুধ বলতে গরুর, মোষ বা ছাগলের দুধই খাওয়া হত আগে। এখন আবার উদ্ভিদজাত নানা দুধের বেশ রমরমা। পুষ্টিবিদেরাও বলে দেন, গরুর দুধ হজম না হলেও চিন্তা নেই। ল্যাকটোজ় ইনটলারেন্টরা দিব্যি খেতে পারবেন আমন্ড মিল্ক, ওট্ মিল্ক, কোকোনাট বা সয়া মিল্ক। তাতে বিন্দুমাত্র পুষ্টির ঘাটতি হবে না। উপরি পাওনা হল, হজমের সমস্যা দূর হবে এবং ওজনও কমবে। ‘ভিগান’ খাদ্যাভ্যাসে যাঁরা অভ্যস্ত, তাঁরাও এখন এই উদ্ভিজ্জ দুধের দিকেই ঝুঁকেছেন। এখন কথা হল, প্রাণিজ দুধ আর উদ্ভিজ্জ দুধ— কোনটি বেশি ভাল? শরীর বুঝে কারা কেমন দুধ খেতে পারবেন?
এই বিষয়ে মেডিসিনের চিকিৎসক অরুণাংশু তালুকদারের মত, দুধ বলতে গরুর বা মোষের দুধের কথাই মাথায় আসে। তবে এখন আরও নানা রকম দুধ বেরিয়েছে। গুণাগুণ অবশ্যই প্রাণিজ দুধের চেয়ে আলাদা। গরুর দুধে যতটা প্রোটিন থাকে, উদ্ভিজ্জ দুধে ততটা থাকে না। এই ধরনের দুধে প্রোটিনও দ্বিতীয় শ্রেণির। তবে ক্যালশিয়াম ও ভিটামিন ডি ভরপুর মাত্রায় থাকে। তা ছাড়া এই ধরনের দুধ সহজপাচ্য, ফ্যাটের পরিমাণ কম থাকায় ওজন কমাতে চাইছেন যাঁরা, তাঁদের জন্য আদর্শ।
ডায়াবিটিস থাকলে গরু বা মোষের দুধের চেয়ে কাঠবাদামের দুধ বা সয়া মিল্ক খাওয়াই ভাল। কারণ, প্রাণিজ দুধে শর্করার মাত্রা বেশি থাকে। এত বেশি পরিমাণে ল্যাকটোজ় থাকে, যা বুঝেশুনে না খেলে মুশকিল হতে পারে। উদ্ভিজ্জ নারকেলের দুধ বা ওট্সের দুধ, অথবা কাঠবাদাম, সয়া দুধের গ্লাইসেমিক ইনডেক্সও কম। এমন দুধ নিয়মিত খেলেও ডায়াবিটিস রোগীদের ক্ষতির সম্ভাবনা নেই।
এ বার আসা যাক ওজন কমানোর প্রসঙ্গে। চিকিৎসক জানাচ্ছেন, গরুর দুধ ভাল করে ফুটিয়ে চিনি ছাড়া খেলে কোনও ক্ষতি নেই। তবে, কাঁচা দুধ খাবেন না। গরু বা মোষের দুধে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন, ক্যালশিয়াম থাকে, যা শরীরের জন্য ভাল, তবে স্যাচুরেটেড ফ্যাটও থাকে। তাই খুব দ্রুত ওজন কমাতে চাইলে উদ্ভিজ্জ দুধে ভরসা করাই ভাল। তা ছাড়া এগুলি না ফুটিয়েও খাওয়া যায়। সয়া মিল্কে ভিটামিন ডি, ক্যালশিয়াম, ভিটামিন বি১২, আয়রন থাকে। ওট্স বা অন্য দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার এতটাই ফাইবারসমৃদ্ধ হয়, যা ওজন কমাতে সাহায্য করে। পাশাপাশি এই ধরনের দুধে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড বেশি থাকে। তাই হার্টের সমস্যা, উচ্চ রক্তচাপ বা কিডনির সমস্যা থাকলে, উদ্ভিজ্জ দুধ খাওয়ারই পরামর্শ দেওয়া হয়।
তবে ছোটদের উদ্ভিজ্জ দুধ খাওয়ানোর আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। একটু বড় হলে সে যদি প্রাণিজ দুধ খেতে না পারে, তা হলে ধীরে ধীরে তাকে এই ধরনের দুধে অভ্যস্ত করানোর চেষ্টা করা যেতে পারে। তবে প্রথমেই দেখতে হবে, তা সে পরিপাক করতে পারছে কি না। হজমের সমস্যা হলে খাওয়ানো উচিত হবে না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy