প্রতীকী ছবি।
গত পাঁচ বছরে কলকাতায় এক লাফে অনেকটা বেড়েছে মহিলা ধূমপায়ীর সংখ্যা। চোখে দেখেই বলতে পারেন অনেকে। তবে সমীক্ষাও তেমন বলছে। এ শহরের একটি সমীক্ষা বলছে, কমবয়সি মেয়েদের মধ্যে ধূমপানের অভ্যাস সবচেয়ে বেড়েছে। ১৯.৬ শতাংশ কিশোরী (১৫ থেকে ১৯ বছরের মধ্যে) দিনে পাঁচ-ছ’টি সিগারেট বা বিড়ি খায়। সমবয়সি ছেলেদের ক্ষেত্রে তা ১৫.৭ শতাংশ।
মহিলা ধূমপায়ীর সংখ্যার নিরিখে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে আমাদের দেশ। এমনই বলছে ‘ব্রিটিশ মেডিক্যাল জার্নাল’-এ প্রকাশিত এক সমীক্ষার রিপোর্ট। প্রথম স্থানে আমেরিকা। আর গোটা দেশে কলকাতায় সবচেয়ে বেশি সংখ্যক ধূমপায়ী রয়েছে, বলছে কেন্দ্রের করা একটি সমীক্ষা। সেই রিপোর্ট অনুযায়ী কলকাতায় ৪৯ শতাংশ বাসিন্দা ধূমপান করেন। গোটা দেশে সে সংখ্যাটি হল ৪৩ শতাংশ।
এক কালে বলা হতো, মেয়েরা ফ্যাশনের জন্য সিগারেটে টান দেন। কিন্তু চিকিৎসকদের বক্তব্য, মূলত বাড়তে থাকা মানসিক চাপেই শহরে বাড়ছে নারী ধূমপায়ীর সংখ্যা। কর্মক্ষেত্র থেকে শিক্ষাক্ষেত্র, সংসার— সর্বত্র যাপনের গতি বাড়ছে। আর তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে গিয়ে মনের উপর চাপও বাড়ছে। সেই চাপ থেকে মুক্তি পেতে বেড়েছে ধূমপান। তার উপর অনেকে আবার মনে করেন যে ধূমপান কমাতে পারে ওজন। তা আদৌ সত্যি নয়। তবে চেষ্টা ছাড়েন না মেয়েরা।
শহরে বদলাতে থাকা এই পরিস্থিতি প্রসঙ্গে এক বেসরকারি হাসপাতালে ফুসফুস সংক্রান্ত রোগের চিকিৎসক সিভারেসমি উনিত্থন বলেন, ‘‘রোগীদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে দেখেছি, মূলত মানসিক চাপের কারণেই গত ৪-৫ বছরে অনেক মেয়ে ধূমপানে আসক্ত হয়েছে। কর্মক্ষেত্র এবং ব্যক্তিগত পরিধি, দু’ক্ষেত্রেই চাপ অনেক বাড়ছে। আর একটি বিষয় খেয়াল করেছি, মেয়েরা কাজের জায়গায় গিয়ে অনেক সময়ে মনে করছেন, তাঁরা পুরুষদের থেকে পিছিয়ে পড়বেন যদি ধূমপান না করেন। কারণ, যে কোনও কর্মক্ষেত্রেই পুরুষদের মধ্যে দল বেঁধে ধূমপান করতে যাওয়ার একটি প্রবণতা রয়েছে। তা করতে গিয়ে মেয়েরা আসক্ত হয়ে পড়ছেন। আর ধূমপান ছাড়তে তাঁদের অনেক বেশি কষ্ট হচ্ছে।’’
তবে শারীরিক কারণে মেয়েদের মধ্যে ধূমপান ছাড়তে চাওয়ার ইচ্ছাও বেশি দেখা যায়। অনেকে সন্তাধারণের পরিকল্পনা করতে শুরু করলে ধূমপান ছাড়তে চান। কিন্তু চিকিৎসকরা দেখেছেন, মেয়েরা ধূমপান ছাড়তে অনেক বেশি সমস্যায় পড়ছেন।
তবে ধূমপানের অভ্যাস ত্যাগ করার পথ বাতলে দিচ্ছেন শহরের এক বেসরকারি হাসপাতালের মনোবিদ সঞ্জয় গার্গ। তিনি বলেন, ‘‘ধূমপান ছাড়ার ক্ষেত্রে দু’টি ধাপ রয়েছে। এক তো হল ওষুধ। অন্যটি কাউন্সেলিং। জীবনের সব ধরনের চাপ সামলানোর জন্য ধূমপানের বিকল্প কী হতে পারে, তা নিয়ে আলোচনা করা দরকার।’’
চিকিৎসকদের বক্তব্য, সবার আগে জরুরি সচেতনতা। ধূমপানের অভ্যাস হয়ে গেলে তা ছাড়া যে অনেক কঠিন, তা জানতে হবে। এবং ধূমপান কতটা শারীরিক ক্ষতি ডেকে আনতে পারে, তা-ও বার বার বলে যেতে হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy