এইচআইভির ওষুধ কি সত্যিই এসে গেল! প্রতীকী ছবি।
এডসের মতো মারণ রোগের চিকিৎসায় কি তবে আশার আলো দেখা গেল? এমন একটি ওষুধ আবিষ্কৃত হয়েছে, যা এডসের মতো দুরারোগ্য ব্যধি সারিয়ে দিতে পারে বলেই দাবি দক্ষিণ আফ্রিকার একদল বিজ্ঞানীর। দক্ষিণ আফ্রিকার বিভিন্ন জায়গায় ও উগান্ডায় এই নতুন ওষুধের পরীক্ষামূলক প্রয়োগ চলছে মানুষের উপরে।
চিকিৎসা বিজ্ঞানের উন্নতিতে এখন ক্যানসারের চিকিৎসাতেও আশার আলো দেখা গিয়েছে। ক্যানসার সারিয়ে সুস্থ হচ্ছেন বহু মানুষ। এডসের চিকিৎসা এখনও সেই পর্যায়ে না গেলেও ধীরে ধীরে এইচআইভিকে রোখার উপায়ও হাতে আসছে গবেষকদের। হিউম্যান ইমিউনো ডেফিসিয়েন্সি ভাইরাস বা এইচআইভি এক বার মানব শরীরে প্রবেশ করলে তা আক্রমণ করে দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বা ইমিউনিটি ব্যবস্থাকে। এই ভাইরাস শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে এমন ভাবে তছনছ করে দেয় যে, সামান্য অসুখও তখন বাড়াবাড়ি পর্যায়ে চলে যেতে পারে। এখনও পর্যন্ত এই রোগ সম্পূর্ণ ভাবে নিরাময় করার মতো কোনও ওষুধ বা চিকিৎসা পদ্ধতি আবিষ্কার করা যায়নি। তবে নতুন ওষুধটি এডস প্রতিরোধ করতে পারলে তা চিকিৎসা ক্ষেত্রে একটি মাইলফলক হতে পারে বলেই মনে করা হচ্ছে।
ওষুধটির নাম লেনাক্যাপাভির। দক্ষিণ আফ্রিকার গবেষক লিন্ডা-গেইল বেকারের মত, এই ওষুধটি ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে দিলে কাজ হবে বেশি। বছরে দু’বার ছ’মাস অন্তর দেওয়া যেতে পারে এই ইঞ্জেকশন। দক্ষিণ আফ্রিকা ও উগান্ডায় পাঁচ হাজার জনের উপর এই ওষুধের পরীক্ষামূলক প্রয়োগ হয়েছে। ওষুধটি মানুষের শরীরে কার্যকরী হচ্ছে বলেই মনে করা হচ্ছে। তবে যাঁদের ইঞ্জেকশন দেওয়া হয়েছে, তাঁদের পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। ওষুধটি কতটা কার্যকর হচ্ছে সে দিকে নজর রাখছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)-ও। মানুষের শরীরে লেনাক্যাপাভির যদি পুরোপুরি সফল হয় এবং এর কোনও রকম পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা না যায়, তা হলে বিশ্বজুড়েই ওষুধটিকে অনুমোদন দেওয়া হতে পারে বলে জানানো হয়েছে।
এইচআইভি মানুষের শরীরে ঢুকলে সবচেয়ে আগে শরীরের রোগ প্রতিরোধী টি-কোষকে নিশানা করে। খুব দ্রুত জিনগত ভাবে বদলে যেতে পারে এই ভাইরাস। মানুষের শরীরে ঢুকলে তাড়াতাড়ি বিভাজিত হয়ে সংখ্যাতেও বাড়তে পারে। শরীরের রোগ প্রতিরোধী কোষগুলিকে নষ্ট করতে শুরু করে। ফলে শরীর দুর্বল হয়ে শুরু করে। সাধারণ কোনও সংক্রমণ হলেও তা বড় ঝুঁকির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। প্রাণ সংশয়ের সম্ভাবনা বাড়ে। গবেষকেরা জানাচ্ছেন, নতুন ওষুধটি শরীরের এই রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকেই সক্রিয় করে তুলবে। টি-কোষকে এমন ভাবে শক্তি জোগাবে, যাতে তা ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়তে পারে। অর্থাৎ এইচআইভিকে রুখতে শরীরের ভিতরে প্রতিরোধের প্রাচীর গড়ে তুলবে। এর আগে এডস রুখতে যে প্রতিষেধকগুলি তৈরি করা হয়েছিল, তাদের বেশির ভাগেরই কার্যকারিতা এক মাসের বেশি স্থায়ী হয়নি। নতুন এই ওষুধ কতটা কার্যকর হতে পারে, সেটাই এখন দেখার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy