গরম পড়লে মাথাব্যথা, বৃষ্টি নামলে মাথায় যন্ত্রণা, অফিসে জরুরি মিটিং চলছে, দেখবেন হঠাৎ মাথায় ঢিপঢিপ করে ব্যথা শুরু হল। মাইগ্রেনের ব্যথা শুরু হওয়ার নির্দিষ্ট সময় নেই। যখন-তখন ব্যথা শুরু হতে পারে। বিশেষ করে চড়া রোদে বেশি ক্ষণ থাকলে, যন্ত্রণা আরও বাড়ে। হয়তো অফিস যাচ্ছেন, দেখবেন রোদ থেকে ঠান্ডা ঘরে ঢোকার পরেই মাথার দু’পাশে তীব্র যন্ত্রণা শুরু হল। সেই সময়কার মতো ব্যথা কমানোর ওষুধ খেয়ে খানিক আরাম পেলেন বটে, তবে বাড়ি ফিরে দেখবেন রাতের দিকে যন্ত্রণা আরও প্রবল হয়ে দেখা দিয়েছে। গরমের সময়ে মাথাব্যথার সমস্যা বাড়ে। তাই ঘন ঘন ব্যথানাশক ওষুধ না খেয়ে, কী করা উচিত তা জেনে রাখা জরুরি।
মাইগ্রেনের ব্যথা যখন-তখন আসে, আর একটানা চলতে থাকে। এক বার যন্ত্রণা শুরু হলে মনে হয় চারপাশটা যেন দুলছে। চোখের সামনেটা অন্ধকার হয়ে যাচ্ছে। সেই সঙ্গেই গা গোলানো, বমি ভাব থাকে। চিকিৎসক অরুণাংশু তালুকদার জানাচ্ছেন, মাইগ্রেন সেরে যায় কয়েক ঘণ্টায়, কখনও আবার বেশ কয়েক দিন ধরে ভোগায় এই সমস্যা। একটানা বেশ ক’দিন থাকার কারণে এই যন্ত্রণা শরীর কাবু করে দেয়। মাইগ্রেন সারানোর সুনির্দিষ্ট কোনও চিকিৎসা নেই। জীবনধারায় কিছু পরিবর্তন এবং স্বাস্থ্যকর কিছু খাবার ডায়েটে রাখলে মাইগ্রেনের সমস্যা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়।
গরমে মাইগ্রেনের ব্যথা ভোগালে কী করবেন?
মাইগ্রেন শুরু হলে বমি বমি ভাব আসে, শরীরে অস্বস্তি শুরু হয়। এই সমস্যা দূর করতে আদা চায়ে চুমুক দিতে পারেন। আদার অ্যান্টি-ইমফ্ল্যামেটরি গুণ আছে। প্রদাহ কমিয়ে ব্যথা সারাতে পারে।
আরও পড়ুন:
বাইরে বেরোলে ছাতা বা টুপি অবশ্যই ব্যবহার করতে হবে। মাইগ্রেন যাঁদের রয়েছে, তাঁরা চেষ্টা করবেন মাথা-মুখ ওড়নায় জড়িয়ে নিতে। চোখে রোদচশমা অবশ্যই পরতে হবে।
চিকিৎসকের পরামর্শ, দিনে অন্ততপক্ষে আড়াই থেকে তিন লিটার জল খেতেই হবে। বাইরে বেরোলেই নিজের ব্যাগে জলের বোতল রাখতে ভুলবেন না। শরীর খারাপ লাগলেই ছায়ায় বসে অল্প অল্প করে জল খান। সম্ভব হলে নুন-চিনির জল ব্যাগে রাখুন।
রোদ থেকে ঠান্ডা ঘরে ঢুকেই এসির তাপমাত্রা কমিয়ে দেবেন না। প্রচণ্ড গরম থেকে হঠাৎই কনকনে ঠান্ডায় থাকলে, শরীর এই তাপমাত্রার হেরফের মানিয়ে নিতে পারবে না। ফলে মাথাব্যথা আরও বাড়বে। এসির তাপমাত্রা ২৫ থেকে ২৭ ডিগ্রিতে মধ্যেই রাখা ভাল।
কম্পিউটারের সামনে বসে দীর্ঘ ক্ষণ কাজ করার অভ্যাস থাকলে মাঝেমাঝেই উঠুন। চোখে জল দিন। একটানা মোবাইলে চোখ রাখবেন না।
ইউক্যালিপটাস অয়েল, মিন্ট অয়েল দিয়ে মাথায় মালিশ করলে মাইগ্রেনের ব্যথায় আরাম পাওয়া যায়। বাইরে বেরোলে ব্যাগে এসেনশিয়াল অয়েল রেখে দিন।
ব্যথা বাড়লে সিগারেট খাবেন না। ঠান্ডা পানীয় খেলেও ব্যথা বাড়বে। ভাজাভুজি বা অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া চলবেই না। ব্যাগে রাখুন ড্রাই ফ্রুট্স, বাদাম ও নানা ধরনের বীজ। বাদামে ম্যাগনেশিয়াম থাকে, যা ব্যথা কমাতে সাহায্য করে। কাঠবাদাম, কাজুবাদাম, আখরোট খাওয়ার অভ্যাস করা যেতেই পারে।