ধূমপায়ীদের কী কী স্বাস্থ্যপরীক্ষা করিয়ে রাখা জরুরি। প্রতীকী ছবি।
ধূমপান করলে তার প্রভাব শরীরে পড়বেই। অতিরিক্ত ধূমপান করলে ফুসফুসের যে বারোটা বাজে, সেটা সকলেই জানেন। ধূমপায়ীদের শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা হওয়া অস্বাভাবিক নয়। নিকোটিন ফুসফুসকে পুড়িয়ে দিতে থাকে ধীরে ধীরে। শ্বাসনালি জ্বলেপুড়ে যায়। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গিয়েছে, সিগারেট পুড়লে ধোঁয়ার সঙ্গে বেঞ্জিন, আর্সেনিক, ফর্মালডিহাইডের মতো কমপক্ষে পাঁচ হাজার রাসায়নিক নির্গত হয়। একটা টান দিলে এই সব রাসায়নিকই ঢোকে শরীরে। যা শরীরের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গের ক্ষতি করে। ধূমপায়ীরা বুঝতেই পারেন না, তলে তলে শরীরে কী রোগ বাসা বাঁধছে। ফুসফুসের অবস্থা বেহাল হচ্ছে কি না, তা জটিল রোগ ধরা পড়ার পরেই বোঝা যায়। তখন দেরিও হয়ে যায় অনেকটাই।
ধূমপান যাঁরা করেন, তাঁদের কয়েকটি শারীরিক পরীক্ষা করিয়ে রাখা খুব জরুরি। চিকিৎসকেরা বলছেন, ধূমপানের কারণে শরীরে কোনও রোগ হচ্ছে কি না, তা আগাম ধরা যাবে এই পরীক্ষাগুলি করানো থাকলে।
১) স্পাইরোমেট্রি— এই পরীক্ষা করালে ধরা পড়ে ফুসফুসের অবস্থা কেমন। যে সব ধূমপায়ীদের শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা আছে, শুকনো কাশি হয় তাদের আগে এই টেস্ট করতে বলেন চিকিৎসকেরা। ফুসফুসে কোনও সংক্রমণ হচ্ছে কিনা অথবা ‘ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ’ বা সিওপিডি হতে পারে কিনা, তা আগাম ধরা যায় এই পরীক্ষা করা থাকলে। দিনে ১০ থেকে ১২টা সিগারেট খাওয়ার অভ্যাস কয়েক বছরের মধ্যে সিওপিডিতে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি করে। এই রোগের শুরুতে লাগাতার কাশি ও অল্পস্বল্প শ্বাসকষ্ট থাকে। বেশি পরিশ্রম করলে নিশ্বাসের কষ্ট হয়। এই সব লক্ষণ ধরা পড়লেই পরীক্ষা করানো জরুরি।
২) বুকের এক্স-রে— ধূমপায়ীদের অনেকেই নিউমোনিয়া ও শ্বাসনালির সংক্রমণজনিত রোগে ভোগেন। বুকের এক্স-রে করলে চিকিৎসকেরা ধরতে পারেন, ফুসফুসে কোনও সংক্রমণ হচ্ছে কি না। ফুসফুসে ক্যানসার হওয়ার ঝুঁকিও কতটা। শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা, সিওপিডি, ব্রঙ্কাইটিসের উপসর্গও ধরা পড়ে এই পরীক্ষায়।
৩) সিটি স্ক্যান- শুধুমাত্র বুকের এক্স-রে করে ফুসফুসের সব ধরনের সমস্যা বোঝা যায় না। সে ক্ষেত্রে সিটি স্ক্যান কার্যকরী। ফুসফুসে টিউমার বাসা বাঁধছে কি না, কোনও ক্ষত তৈরি হয়েছে কি না, তা ধরা যায় এই পরীক্ষায়। সিটি স্ক্যান করে ফুসফুসে অস্বাভাবিক কিছু দেখলে তখন ধূমপান দ্রুত ছেড়ে দেওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা।
৪) ইলেকট্রোকার্ডিয়োগ্রাম (ইসিজি)— দীর্ঘ সময় ধরে যাঁরা ধূমপান করছেন, তাঁদের একটি ইসিজি করিয়ে রাখা ভাল। এতে বোঝা যায়, হার্টের অবস্থা কেমন। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, হৃদ্স্পন্দন অনিয়মিত হয়ে গিয়েছে কি না, ধমনীতে রক্ত জমছে কি না, তা ধরা যায় এই পরীক্ষায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy