শুধু জল খেলে হবে না, গরমে সুস্থ থাকতে নিতে হবে বাড়তি সতর্কতা। ছবি: সংগৃহীত।
বৈশাখের প্রথম দিন থেকেই হাঁসফাঁস গরম গোটা দক্ষিণবঙ্গে। বৃষ্টিতে ইতি পড়তে উধাও ঠান্ডার আমেজ। আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস বলছে, দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় তাপপ্রবাহের পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। বৃদ্ধি পেতে পারে তাপমাত্রা। বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ বেশি থাকার কারণে অস্বস্তিও থাকবে খুব বেশি। তাই এই সময়ে অতিরিক্ত ঘাম হওয়া স্বাভাবিক। সে কারণে নানা রকম শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে। অনেক সময়েই দেখা যায়, পর্যাপ্ত জল খাওয়ার পরেও কারও কারও পেশিতে টান ধরে। অতিরিক্ত দুর্বল লাগে। একেবারেই কাজ করতে ইচ্ছে করে না। শীতকালে না হয় জল কম খাওয়ার জন্য পেশিতে টান ধরতে পারে, কিন্তু গরমকালে এই ধরনের সমস্যা হয় কেন? চিকিৎসক অদ্রিজা রহমান মুখোপাধ্যায় আনন্দবাজার অনলাইনকে বলেন, “ঘামের সঙ্গে শরীর থেকে অনেকটা নুন বেরিয়ে যায়। শুধু জল খেলে কিন্তু সেই ঘাটতি পূরণ হয় না। ইলেকট্রোলাইটের মাত্রায় হেরফের হলে পেশিতে টান ধরতেই পারে। ক্লান্ত লাগতে পারে। আমরা যাকে ‘হিট এগজ়রশন’ বলে থাকি। নুন-চিনির জল বা ওআরএস খেলে এই পরিস্থিতি অনেকটাই সামাল দেওয়া যায়।”
আবার, প্রচণ্ড গরমে কাজ করতে করতে অনেকে জ্ঞানও হারিয়ে ফেলেন। এই ধরনের উপসর্গ কিন্তু শুধু ‘হিট এগজ়রশন’ নয়। চিকিৎসক অদ্রিজা রহমান মুখোপাধ্যায় বলেন, “বাইরের আবহাওয়ার সঙ্গে সমতা বজায় রাখার জন্য শরীরের নিজস্ব ‘থার্মোস্ট্যাট’ আছে। কিন্তু হঠাৎ করে এসি থেকে অতিরিক্ত গরম কিংবা গরম থেকে একেবারে কনকনে ঠান্ডা ঘরে ঢুকে পড়লে দেহের তাপমাত্রার হেরফের হয়। শরীরের নিজস্ব যে ‘থার্মোস্ট্যাট’ তা সঠিক ভাবে কাজ করতে পারে না। তখন হঠাৎ করে শরীরের সমস্ত কলকব্জা ‘শাট ডাউন’ হয়ে যেতে পারে। সেই মুহূর্তে অজ্ঞান হয়ে যাওয়া অস্বাভাবিক নয়। চিকিৎসা বিজ্ঞানে যাকে হিট স্ট্রোক বলা হয়। সে ক্ষেত্রে শুধু ওআরএস কিন্তু কাজ করবে না। অন্যান্য শারীরিক জটিলতা থাকলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।”
অতিরিক্ত গরম থেকে এই ধরনের অসুস্থতা হচ্ছে কি না,কী দেখলে বুঝবেন?
১) গরমকালে ঘাম তো হবেই। কিন্তু শারীরিক কোনও জটিলতা থাকলে ঘামার ধরন কিন্তু একটু হলেও পাল্টে যায়। পাশাপাশি ত্বকের রং, শ্বাস-প্রশ্বাসের গতিপ্রকৃতি, হৃদ্স্পন্দনের হারের উপরেও নজর রাখা জরুরি।
২) হিট স্ট্রোক বা হিট এগজ়শন হলে দেহের তাপমাত্রা হঠাৎ করে বেড়ে যেতে পারে। ঠিক কতটা বেড়ে গেল, তা বোঝার জন্য থার্মোমিটার দিয়ে দেহের তাপমাত্রা মেপে দেখা যেতে পারে।
৩) শরীর ডিহাইড্রেটেড হয়ে গেলেও কিডনি স্বাভাবিক ভাবে কাজ করা বন্ধ করে দেয়। মূত্রের রং গাঢ় হয়ে গেলে, পরিমাণ কমে গেলেও কিন্তু সতর্ক থাকতে হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy