বাইরের খাবার থেকে ক্রমশ মুখ ফেরাতে শুরু করেছেন। প্রতীকী চিত্র।
হৃদ্রোগ, ডায়াবিটিস, কোলেস্টেরলের মতো শারীরিক সমস্যা ইদানীং সবচেয়ে বেশি ভোগাচ্ছে। পরিসংখ্যান বলছে, গত কয়েক বছরে গোটা পৃথিবীতে ৬১ শতাংশ মৃত্যুর জন্য দায়ী এই রোগগুলি। শেষ নয় এখানেই। দেশে প্রতি বছর শুধুমাত্র হার্ট অ্যাটাক হয়ে মৃত্যুর ঘটনা ঘটে সবচেয়ে বেশি। সামগ্রিক এই চিত্রটি সত্যিই আশঙ্কার। তবে পরিস্থিতি বদলের প্রস্ততি নিচ্ছে কম বয়সিরা। এ ধরনের ক্রনিক অসুখের উৎস হল খাদ্যাভ্যাস। তাই ঝুঁকি এড়াতে খাওদাওয়ায় নিয়ম ভাঙতে নয়, বরং মানতে শুরু করেছেন অনেকে। বাইরের খাবার থেকে ক্রমশ মুখ ফেরাতে শুরু করেছেন।
কোলেস্টরল কিংবা উচ্চ রক্তচাপ, রোগের নাম যা-ই হোক, বাইরের খাবারের প্রতি অগাধ ভালবাসা থেকেই শরীরে বাসা বাঁধে এই রোগগুলি। আর তাই সুস্থ এবং সুরক্ষিত থাকার জন্য প্রক্রিয়াজাত খাবার, পিৎজ়া, বার্গার, রোল, চাউমিনের প্রতি আকর্ষণ কমে আসছে। সচেতনতার পরিমাণ বৃদ্ধি পাচ্ছে ক্রমশ। এই সচেতনতা অল্প বয়সিদের মধ্যে তো বটেই, এমনকি, প্রৌঢ়ত্বের দিকে যাঁরা এক পা বাড়িয়ে রেখেছেন, তাঁদের মধ্যেও সুস্থ থাকতে চাওয়ার ইচ্ছা প্রবল হয়ে উঠেছে। সাম্প্রতিক সমীক্ষা তেমনটাই বলছে। ‘ইন্ডিয়া ডায়েটিক অ্যাসোসিয়েশন’— এর আয়োজিত সমীক্ষায় বিষয়টি স্পষ্ট হয়েছে। সমীক্ষা জানাচ্ছে, ক্রনিক কিছু শারীরিক সমস্যার নেপথ্যে রয়েছে খাদ্যাভ্যাস এবং দৈনন্দিন জীবনধারা। বাইরের খাবার খাওয়া অন্যতম বড় কারণ। চটজলদি সুস্বাদু খাবার খেতে ভাল লাগে, স্বাদের যত্ন নেয় কিন্তু শরীরে এই খারাপ প্রভাব পড়তে থাকে। ধীরে ধীরে বিভিন্ন রোগবালাইয়ের আঁতুড়ঘর হয়ে ওঠে শরীর।
পুষ্টিবিদেদের মতে, বাইরের নানা ধরনের খাবার খাওয়ার ফলে শরীরে প্রয়োজনীয় উপাদানের ঘাটতি তৈরি হয়। শাকসব্জি, ফল, ভাত, রুটিতে রয়েছে ভরপুর পরিমাণে ফাইবার, কার্বোহাইড্রেট, ভিটামিন, মিনারেলসের মতো উপাদান। যেগুলি পেটের স্বাস্থ্য ভাল রাখে। হৃদ্রোগের ঝুঁকি কমায়। রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে। সমীক্ষায় উঠে এসেছে, প্রায় ৬৩ শতাংশ মানুষ প্রতি সপ্তাহে এই ধরনের খাবার খান। আর ১৯ শতাংশের রোজেন খাবার হল এইগুলি। আর সেই কারণেই পৃথিবীতে ডায়াবেটিক, হদ্রোগে আক্রান্তের সংখ্যা এত বেশি।
সংখ্যাটি আশঙ্কার হলেও আশার আলোও কিন্তু দেখা যাচ্ছে। বাইরে খাবার যে দীর্ঘ দিন সুস্থ থাকতে দেবে না, তা উপলব্ধি করেছেন অনেকেই। আর তাই সুযোগ পেলেই দোকান, রেস্তরাঁর খাবারে কামড় বসাচ্ছেন না অনেক। বরং ব্যস্ততম জীবনেও ভরসা রাখছেন বাড়ির তৈরি খাবারে।
কিন্তু খাদ্যাভ্যাসে বদল আনার সিদ্ধান্ত কি কার্যকর হচ্ছে? চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, তাৎক্ষণিক ভাবে তা বুঝতে না পারলেও ভবিষ্যতে এর সুফল বোঝা যাবে। বাইরের খাবার কম খেলে এই ধরনের রোগ থেকে দূরে থাকা যাবে, সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই। তবে খাদ্যাভ্যাসে বদল আনলেই সুস্থ থাকা অনেক বেশ সহজ হয়ে যায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy