বর্ষার মরসুমে ডেঙ্গি বাড়ছে শহরে। —প্রতীকী ছবি।
বর্ষার মরসুমে ডেঙ্গি বাড়ছে শহরে। শুধু কলকাতা নয়, শহরতলিতেও আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমশ ঊর্ধ্বগামী। গত বছরও ডেঙ্গিতে আক্রান্তের সংখ্যা চিন্তায় ফেলেছিল রাজ্যকে। তবে চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, এ বছর যেন পরিস্থিতি ক্রমশ হাতের বাইরে চলে যাচ্ছে। সাধারণ ভাইরাল জ্বরের সঙ্গে ডেঙ্গিকে গুলিয়ে ফেলে অবহেলা করেই অনেক সময়ে রোগীর অবস্থা আরও গুরুতর হচ্ছে। শিশু থেকে বয়স্ক— বিভিন্ন বয়সের মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন ডেঙ্গিতে। গত কয়েক দিনে ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যাটিও চিন্তার কারণ হয়ে উঠছে। পাশাপাশি, সুস্থতার হারও নেহাত কম নয়।
সাধারণত জ্বর, মাথাযন্ত্রণা, হাত-পায়ের সঙ্গে সারা শরীরে ব্যথা, বমি বমি ভাব, মুখে অরুচি, মলের সঙ্গে রক্তপাত— ডেঙ্গি রোগের অন্যতম লক্ষণ। এই লক্ষণগুলি প্রকাশ পেলে রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া অবশ্যই জরুরি। ডেঙ্গি সেরে গেলেই যে আপনি সুস্থ, এমনটি ভাবার কোনও কারণ নেই। সেরে উঠে হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফেরার পর ফের অসু্স্থ হয়ে পড়েছেন, এমন উদাহরণও কম নেই। তাই সেরে ওঠার পর রোগীর যত্ন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। একই মত চিকিৎসক সুর্বণ গোস্বামীরও। তিনি বলেন, ‘‘ডেঙ্গির জ্বর বেশি দিন থাকে না। ফলে জ্বর চলে যাওয়ার পরে অনেকেরই মনে হয় সুস্থ হয়ে গিয়েছেন। কিন্তু আসল বিপদের শুরু হচ্ছে সেই সময় থেকেই। জ্বর কমে যাওয়ার ২-৭ দিন পর ডেঙ্গির সঙ্কটজনক অবস্থা তৈরি হয়। তাই এই সময়টিতে অত্যন্ত সাবধানে থাকতে হবে।’’ অতিরিক্ত দুর্বলতা, বমি, পাতলা পায়খানা, পেটে ব্যথা, শ্বাসকষ্ট, বুকে ব্যথা— জ্বর কমে যাওয়ার পরেও যদি এই লক্ষণগুলি দেখা দিতে শুরু করে তা হলে অবশ্য হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া জরুরি। এই বিষয়টি নিয়ে সতর্ক থাকলে মৃত্যু এড়ানো যাবে। তেমনটাই জানাচ্ছেন চিকিৎসক।
ডেঙ্গি জ্বর কমে যাওয়ার পরে আর কোন বিষয়গুলি মেনে চললে সঙ্কট এড়ানোর সম্ভাবনা বাড়ে?
১) জ্বর কমে যাওয়ার ৪৮-৭২ ঘণ্টার মধ্যে রোগীকে বাড়তি নজরে রাখতে হবে। রোগীর নিজেরও খানিক সতর্ক থাকা জরুরি। কোনও সমস্যা হলে তা চেপে না রেখে চিকিৎসককে জানাতে হবে।
২) ডেঙ্গি হলে শরীরে জলের ঘাটতি তৈরি হয়। তাই জলের ঘাটতি কতটা কমেছে সেটা মাপার জন্য দিনে ‘পিসিভি’ পরীক্ষা করা জরুরি। এ ছাড়াও প্লেটলেট পরীক্ষা করানো প্রয়োজন। জ্বর চলে যাওয়ার ২-৩ দিন এই পরীক্ষাগুলি প্রতি দিন করাতে হবে।
৩) ডেঙ্গি শরীর ভিতর থেকে দুর্বল করে দেয়। তাই এই সময় পর্যাপ্ত পুষ্টির প্রয়োজন। সঠিক ডায়েট মেনে চললে দুর্বলতা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব। তরল খাবার বেশি করে খাওয়া জরুরি। ঘন ঘন জল খেতে হবে। শরীরে জলের পরিমাণ কমতে দেওয়া যাবে না। সেই সঙ্গে কার্বোহাইড্রেট, ফাইবার, ভিটামিন সি, আয়রন, ভিটামিন ই-তে সমৃদ্ধ খাবার বেশি করে খেতে হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy