Advertisement
২৭ ডিসেম্বর ২০২৪
Excercises for Liver

লিভারই শরীরের মহাশয়! তবে সব মোটেই সয় না, লিভারকে ভাল রাখতে সহজ ৫ শরীরচর্চা করতে পারেন

সাম্প্রতিক একটি আন্তর্জাতিক গবেষণা বলছে, ভারতে লিভারের অসুখ, বিশেষত ফ্যাটি লিভারে আক্রান্তের হার গোটা বিশ্বের মোট হারের থেকেও বেশি।

ভারতে লিভারের অসুখ, বিশেষত ফ্যাটি লিভারে আক্রান্তের হার গোটা বিশ্বের মোট হারের থেকেও বেশি।

ভারতে লিভারের অসুখ, বিশেষত ফ্যাটি লিভারে আক্রান্তের হার গোটা বিশ্বের মোট হারের থেকেও বেশি। ছবি : সংগৃহীত।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
শেষ আপডেট: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৩:১০
Share: Save:

লিভার। শরীরের এই একটি প্রত্যঙ্গ একসঙ্গে কত কাজ করে যে শরীরকে ভাল রাখে, তার ইয়ত্তা নেই। শরীরকে দূষণমুক্ত করা থেকে শুরু করে রক্তে শর্করার মাত্রা বজায় রাখা, রক্ত জমাট বাঁধতে না দেওয়া, চর্বি বা ফ্যাটকে ভাঙতে সাহায্য করা, হজমে সাহায্য করা, জরুরি পুষ্টি তৈরি, সংক্রমণ ঠেকানো— এর কাজ গুনে শেষ হওয়ার নয়। চিকিৎসকেরা বলছেন, শরীরের অন্তত ৫০০টি গুরুত্বপূর্ণ কাজে অবিরাম সাহায্য করে চলেছে লিভার। অথচ সেই লিভারই এ যুগের জীবনযাপনের ধারায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সবচেয়ে বেশি।

সাম্প্রতিক একটি আন্তর্জাতিক গবেষণা বলছে, ভারতে লিভারের অসুখ, বিশেষত ফ্যাটি লিভারে আক্রান্তের হার গোটা বিশ্বের মোট হারের থেকেও বেশি। মদ্যপান না করেও যে ফ্যাটি লিভারের অসুখ, যাকে চিকিৎসার ভাষায় বলা হয় নন অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার ডিজ়িজ় (এনএএফএলডি), তাতে আক্রান্ত বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ৩০.২ শতাংশ। ভারতে এই হারই আবার মোট জনসংখ্যার ৩৩ শতাংশ। এর মধ্যে মহিলাদের এই রোগে ভোগার প্রবণতা বেশি (৩৮ শতাংশ) তুলনামূলক ভাবে পুরুষদের মধ্যে এনএএফএলডি কম (৩৩ শতাংশ)। স্বাস্থ্যবিদেরা বলছেন, ভারত এখন সেই পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছে, যেখানে অবিলম্বে লিভারের স্বাস্থ্য নিয়ে সচেতন হওয়া জরুরি। কিছু সহজ শরীরচর্চার মাধ্যমেও লিভারকে ভাল রাখা যায়।

উদ্দেশ্য ঘাম ঝরানো আর প্রতিদিন শরীরচর্চার অভ্যাস তৈরি করা।

উদ্দেশ্য ঘাম ঝরানো আর প্রতিদিন শরীরচর্চার অভ্যাস তৈরি করা। ছবি: সংগৃহীত

১। প্রতিদিন ৩০ মিনিট: শরীরচর্চার জন্য প্রতি দিন স্রেফ ৩০ মিনিট সময় ব্যয় করলেই হবে। এর জন্য অবশ্য জিমে যাওয়ার দরকার নেই। বাড়িতে, রাস্তায়, খোলা মাঠে যেখানে খুশি শারীরিক কসরত করতে পারেন। উদ্দেশ্য হল ঘাম ঝরানো আর প্রতিদিন আধঘণ্টার ওই শরীরচর্চার অভ্যাস তৈরি করা। সেটুকুই আপনার লিভারকে ভাল রাখবে।

‘স্পিড ওয়াকিং’-এর দু’টি নিয়ম আছে।

‘স্পিড ওয়াকিং’-এর দু’টি নিয়ম আছে। ছবি: সংগৃহীত

২। জোরে হাঁটা: লিভারের স্বাস্থ্য ফেরানোর জন্য দ্রুত হাঁটা বা ‘স্পিড ওয়াকিং’-এর কোনও বিকল্প নেই। এই ধরনের হাঁটার দু’টি নিয়ম আছে। খুব জোরে হাঁটলেও একসঙ্গে দু’টি পা কখনও মাটি ছাড়বে না। আরও বিশদে বললে, সামনের পায়ের গোড়ালি যত ক্ষণ না মাটি ছুঁচ্ছে, তত ক্ষণ পিছনের পায়ের আঙুল মাটি ছাড়বে না। দুই, সামনের পা যত ক্ষণ না পিছন দিকে যাচ্ছে, তত ক্ষণ হাঁটু মুড়বে না। সোজা থাকবে। এই ভাবে হাঁটলে পায়ের নীচের দিকের পেশি কাজ করে বেশি। হাঁটু বা অন্যান্য হাড়ের সন্ধিস্থলে চাপ পড়ে না। অথচ হৃৎস্পন্দনও বৃদ্ধি করে। যা লিভারকে অতিরিক্ত চর্বিমুক্ত করতে সাহায্য করে। রোজ এমন ২০-৩০ মিনিটের স্পিড ওয়াকিং লিভারের জন্য ভাল।

প্রথমে ১০-১৫ বার পুশ-আপস বা স্কোয়াট করুন।

প্রথমে ১০-১৫ বার পুশ-আপস বা স্কোয়াট করুন। ছবি: সংগৃহীত

৩। স্ট্রেন্থ ট্রেনিং: যে সমস্ত শারীরিক কসরতে স্ট্রেন্থ ট্রেনিং হয় (যেমন পুশ-আপস, স্কোয়াটস ইত্যাদি), সেগুলি লিভারের জন্য ভাল। এই ধরনের শরীরচর্চা যেমন পেশির ক্ষমতা বৃদ্ধি করে, তেমনই ফ্যাটকে ভাঙতেও সাহায্য করে। প্রথমে অল্প করে শুরু করুন। ১০-১৫ বার পুশ-আপস বা স্কোয়াট করুন। তার পরে ধীরে ধীরে সংখ্যা বৃদ্ধি করুন।

পাইলেটস মানসিক চাপ কমানোর জন্যও ভাল।

পাইলেটস মানসিক চাপ কমানোর জন্যও ভাল। ছবি: সংগৃহীত

৪। পাইলেটস: লিভারের স্বাস্থ্য ভাল রাখার জন্য পাইলেটস ভাল। কারণ পাইলেটস শরীরের নমনীয়তা আর পেশির শক্তি বৃদ্ধির পাশাপাশি নিয়ন্ত্রিত শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে রক্ত সঞ্চালনেও সাহায্য করে। যে হেতু লিভার রক্ত দূষণমুক্ত করে, উন্নত রক্ত সঞ্চালন সেই কাজে সাহায্য করবে। তা ছাড়া পাইলেটস মানসিক চাপ কমানোর ক্ষেত্রেও উপযোগী। যা পরোক্ষে লিভারের স্বাস্থ্য ভাল রাখতে সাহায্য করে। প্রতি দিন ১৫-২০ মিনিটের পাইলেটস লিভারের স্বাস্থ্যের জন্য ভাল। উল্লেখ্য, পাইলেটসের মধ্যে ফ্লোর ম্যাট এক্সারসাইজ় থেকে বহু রকমের ব্যায়াম অন্তর্ভুক্ত।

মেঠো পথ বা পাহাড়ি পথ উপযোগী।

মেঠো পথ বা পাহাড়ি পথ উপযোগী। ছবি: সংগৃহীত

৫। পায়ে হেঁটে ভ্রমণ: রোজ নয়, সপ্তাহে এক দিন যদি প্রকৃতির কোলে অন্তত ৫ মাইল পথ হাঁটতে পারেন, তা-ও লিভারের জন্য ভাল। এই পথ যত কম মসৃণ হয়, ততই উপকৃত হবেন। সে ক্ষেত্রে মেঠো পথ বা পাহাড়ি পথ উপযোগী। কারণ, তাতে শরীরের নীচের ভাগের পেশির সঞ্চালন বেশি হয়। যা শরীরকে দূষণমুক্ত করতে সাহায্য করে। পাশাপাশি, প্রকৃতির কোলে ভ্রমণ মন ভাল রাখে। তার সদর্থক প্রভাব পড়ে লিভারেও।

অন্য বিষয়গুলি:

liver
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy