Advertisement
২৮ জানুয়ারি ২০২৫
Rare neurological disease Guillain-Barre Syndrome

গিলেন-বারি সিনড্রোমে মৃত্যু মহারাষ্ট্রে, পুণেতে আক্রান্ত ১০১, কেন হচ্ছে স্নায়ুর এই বিরল রোগ? কারা আক্রান্ত?

গিলেন-বারি সিনড্রোম স্নায়ুর এক বিরল রোগ, যা শরীরকে পক্ষাঘাতগ্রস্ত করে দিতে পারে কিছু দিনের মধ্যেই। স্নায়ু দুর্বল হতে শুরু করে, পেশি অসাড় হয়ে যায়। রোগীর হাঁটাচলা করা বা কথা বলার ক্ষমতা থাকে না অনেক সময়েই।

Around 59 people in Pune have been affected with Guillain-Barre Syndrome, what is this disease

কেন পুণে, মহারাষ্ট্রে বাড়ছে বিরল স্নায়ুর রোগ, কী থেকে হচ্ছে? প্রতীকী ছবি।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
শেষ আপডেট: ২৭ জানুয়ারি ২০২৫ ১৪:০৫
Share: Save:

গিলেন-বারি সিনড্রোম (জিবিএস) ক্রমেই চিন্তার কারণ হয়ে উঠছে। এই রোগে আক্রান্ত হয়ে মহারাষ্ট্রে এক জনের মৃত্যু হয়েছে। পুণেতে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১০১ জন, যাঁদের মধ্যে অন্তত ৬০ জনের শারীরিক অবস্থা সঙ্কটজনক। তাঁদের ভেন্টিলেটর সাপোর্টে রাখতে হয়েছে। মহারাষ্ট্র স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে, আক্রান্তদের মধ্যে ১৯ জনের বয়স ৯ বছরের নীচে। চিকিৎসকদের অনুমান, ভাইরাস থেকেই হচ্ছে এই রোগ।

গিলেন-বারি সিনড্রোম স্নায়ুর এক বিরল রোগ, যা শরীরকে পক্ষাঘাতগ্রস্ত করে দিতে পারে কিছু দিনের মধ্যেই। স্নায়ু দুর্বল হতে শুরু করে, পেশি অসাড় হয়ে যায়। রোগীর মুখ বেঁকে যেতে পারে, হাঁটাচলা করা বা কথা বলার ক্ষমতা থাকে না অনেক সময়েই। সেই সঙ্গে দেখা দিতে পারে শ্বাসকষ্ট। চিকিৎসকেরা বলেন এটি ‘অটোইমিউন ডিজ়অর্ডার’, অর্থাৎ যখন নিজের শরীরেরই রোগ প্রতিরোধ শক্তি নিজেরই স্নায়ুতন্ত্রকে দুর্বল করতে শুরু করে।

কাদের হচ্ছে এই রোগ?

এই বিষয়ে স্নায়ুরোগ চিকিৎসক অনিমেষ কর বলেন, “কম্পাইলোব্যাক্টর, সাইটোমেগালোভাইরাসের মতো কয়েক রকম ভাইরাসের সংক্রমণে এই রোগ হতে পারে। কোভিডের পরে গিলেন-বারি সিনড্রোমে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছিল। সাধারণত দেখা যায়, যাঁরা শ্বাসযন্ত্রের কোনও রোগ সারিয়ে উঠছেন বা ভাইরাল গ্যাস্ট্রোএন্টেরাইটিসের মতো রোগে ভুগেছেন, তাঁদেরই পরে গিয়ে গিলেন-বারি সিনড্রোম হয়েছে।” অনেক সময়ে কোনও ওষুধ বা প্রতিষেধকের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াতেও এই রোগ হতে পারে।

পুণেতে যাঁরা আক্রান্ত, তাঁদের অনেকেরই ভয়ঙ্কর শ্বাসের সমস্যা দেখা গিয়েছে। অক্সিজেন সাপোর্ট দিতে হচ্ছে। ওই রোগীদের রক্তের নমুনা নিয়ে পরীক্ষা করছে ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চ (আইসিএমআর)। আক্রান্তদের ৯ জনের শরীরে নোরোভাইরাস পাওয়া গিয়েছে, ৩ জনের রক্তে ক্যাম্পাইলোব্যাক্টর জেজুনি নামে এক ধরনের ভাইরাসের খোঁজ মিলেছে।

কতটা ভয়ঙ্কর হতে পারে গিলেন-বারি?

মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা নষ্ট হয়ে যেতে পারে এই রোগে। এমনটাই বলছেন স্নায়ুরোগ চিকিৎসক কিশলয় করণ। তাঁর কথায়, “রোগীর যদি শ্বাসকষ্ট বাড়তে থাকে, তা হলে চিন্তার কারণ আছে। অনেক সময়েই দেখা যায়, রোগীর রেসপিরেটরি প্যারালাইসিস হয়ে গিয়েছে। তখন ভেন্টিলেটর সাপোর্ট দিতেই হবে। সেই সময়ে রোগী কথাও বলতে পারবে না, শ্বাসও নিতে পারবে না।”

এই রোগ কি সারে?

গিলেন-বারি সিনড্রোম শুরুতেই ধরা পড়লে সঠিক চিকিৎসায় তা সেরে যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে দু’রকম টেস্ট করা হয়— ‘নার্ভ কন্ডাকশন ভেলোসিটি টেস্ট’ (এনসিভি) ও ‘সেরিব্রোস্পাইনাল ফ্লুইড’(সিএসএফ) টেস্ট। রোগ ধরা পড়লে তার দু’রকম চিকিৎসা পদ্ধতি রয়েছে। অনিমেষ জানালেন ‘ইন্ট্রাভেনাস ইমিউনোগ্লোবিউলিন’ (আইভিআইজি) ও প্লাজ়মা থেরাপি করে চিকিৎসা করা হয়। প্লাজ়মা থেরাপি গুটি কয়েক হাসপাতালেই হয়, ইমিউনোথেরাপিই বেশি করা হয়। এতে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা নিয়ন্ত্রিত হয়, স্নায়ুর জোর বাড়ে।

চিকিৎসক কিশলয় করণ জানাচ্ছেন, এই রোগে শরীরে রক্ত জমাট বাঁধতে পারে। সে ক্ষেত্রে রোগীকে দীর্ঘ সময় পর্যবেক্ষণেও রাখতে হতে পারে। তা কয়েক সপ্তাহ থেকে কয়েক মাস অবধি হতে পারে। গিলেন-বারি সিনড্রোম কিন্তু ছোঁয়াচে নয়, অর্থাৎ এক জনের থেকে অন্য জনের শরীরে রোগ ছড়ানোর আশঙ্কা নেই। তবে দূষিত জল, খাবার থেকে ভাইরাস সংক্রমণের আশঙ্কা একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যায় না।

অন্য বিষয়গুলি:

Neurological Disease Guillain-Barré syndrome Rare Disease Pune Maharashtra Immune System Nerve trouble
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy