বেগুন খেতে ভালবাসেন ভারতীয়েরা। ছবি : সংগৃহীত।
নাম বেগুন হতে পারে। তবে সে বে-গুণ অর্থাৎ গুণহীন মোটেই নয়। বাড়ির বাগানে এমনকি, ছাদের টবেও সামান্য পরিচর্যায় বেড়ে ওঠা এই সব্জি ওজন কমানো থেকে শুরু করে মাথা, পেট, মায় হার্টেরও স্বাস্থ্য ভাল রাখতে সাহায্য় করে, বলছেন পুষ্টিবিদেরা।
এমনিতে ভারতীয়েরা বেগুন বলতে অজ্ঞান। বাংলা-সহ ভারতের সমস্ত প্রদেশেরই কিছু না কিছু নিজস্ব বেগুনের স্বাদু পদ রয়েছে। বাঙালিদের দই বেগুন, বেগুন পোস্তের মতো, কোথাও রয়েছে ভারওয়া বাইঙ্গন, কোথাও বাইঙ্গন মশালা, বাইঙ্গন ভর্তা, বাইঙ্গন কারি, খট্টে বাইঙ্গন— তালিকা শেষ হওয়ার নয়। এর পাশাপাশি বেগুন ভাজা, বেগুন পোড়া তো রয়েছেই। কিন্তু জানেন কি যে বেগুন নিয়ে ভারতে মাতামাতির অন্ত নেই, সেই বেগুন পুরোপুরি ভারতীয় নয়।
ইতিহাস বলছে বেগুন ভারতে এসেছ চিন থেকে। তবে অন্য একটি মত বলছে বেগুন ৩০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দে ভারতীয় এলাকায় এসে পৌঁছয়। বহু পুরনো পুঁথিতেও ওই সবজির কথা বলা আছে। পরে ভারত থেকে বেগু ন গিয়েছে চিন, জাপান, ইউরোপ এবং অন্যান্য এলাকায়। তবে বেগুন যে দেশেরই হোক, পুষ্টিবিদেরা বলছেন বেগুন নিয়মিত খেলে শরীরের ভাল বই খারাপ হবে না। বেগুন ওজন কমানোর জন্য কার্যকরী তো বটেই, তা ছাড়া বেগুনে থাকা খনিজ, ভিটামিন সার্বিক স্বাস্থ্যের জন্যও ভাল।
বেগুনের গুণাগুণ
১। বেগুনে ক্যালোরির পরিমাণ অত্যন্ত কম। অথচ পুষ্টিগুণ বেশি। প্রতি ১০০ গ্রাম বেগুনে রয়েছে ১৫ কিলোক্যালোরি। এ ছাড়া ০.৯ গ্রাম প্রোটিন, ০.৪ গ্রাম ফ্যাট, ২.২গ্রাম কার্বোহাইড্রেট, ২.৭ গ্রাম ফাইবার। বেগুনে পলিফেনলও রয়েছে। যা থেকে ক্লোরোজেনিক অ্যাসিড তৈরি হয়। ক্লোরোজেনিক অ্যাসিড ফ্যাট ঝরাতে সাহায্য করে। গবেষণা বলছে, যাঁদের ওজন বেশি, তাদের নিয়মিত ক্লোরোজেনিক অ্যাসিড দিয়ে দেখা গিয়েছে, তাঁদের ওজন কমেছে।
২। নাসিকের পুষ্টিবিদ করিশ্মা পাটিল বলছেন, ‘‘বেগুনে রয়েছে ৯২ শতাংশ জল। তার মানে কেউ বেগুন খেলে তার দ্রুত পেট ভরবে। খিদেও পাবে দেরিতে।’’ এ ছাড়া বেগুনে কমপ্লেক্স কার্বোহাইড্রেট আছে বলেও জানিয়েছেন করিশ্মা। তাতে সহজে রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়বে না।
৩। বেগুনে ক্লোরোজেনিক অ্যাসিডের পাশাপাশি রয়েছে অ্যান্থোসেনিন উপাদান। ওই উপাদান অ্যান্টি অক্সিড্যান্টের মতো কাজ করে। ক্যানসারকে দূরে রাখতে সাহায্য করে, মধুমেহ রোগ এমনকি, স্নায়ুরোগের সম্ভাবনাও কমায়।
৪। অ্যান্টি অক্সিড্যান্টের ঘাটতি মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। অ্যালঝাইমার্সের মতো রোগও হতে পারে। বেগুনে থাকা ভিটামিন সি এবং ই সেই ঝুঁকি কমায়।
৫। এলডিএল বা ‘খারাপ কোলেস্টেরল’-এর পরিমাণ কম রাখে বেগুন। এলডিএল হৃদরোগের অন্যতম কারণ। তা ছাড়া বেগুন হার্টের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী এইচডিএল বা ‘ভাল কোলেস্টেরল’ বৃদ্ধিতেও সাহায্য করে।
সতর্কতা
পুণের ক্লিনিকাল পুষ্টিবিদ চিকিৎসক গীতা ধরমাটি অবশ্য বলছেন, ‘‘গুণ যেমন আছে, তেমন ক্ষেত্র বিশেষে সমস্যাও তৈরি করতে পারে বেগুন।’’ তিনি বলছেন বেগুনে রয়েছে স্যাপোনিনস। যা কোনও কোনও ক্ষেত্রে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সংক্রান্ত অসুখের কারণ হতে পারে। গীতা জানাচ্ছেন, যাঁদের বেগুনে অ্যালার্জি রয়েছে তাদের সাবধানে বেগুন খাওয়া উচিত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy