সব ভুলে প্রাণ খুলে নাচুন। বলছেন মস্তিষ্কের চিকিৎসকেরাও। —ফাইল চিত্র।
হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষণা বলছে, পার্কিনসন্স ডিজিজ়-এর মতো স্নায়ুরোগের রোগীদের ভাল রাখতে পেরেছে নাচ। পার্কিনসন্স ডিজিজ় হল সেই রোগ, যাতে রোগীদের হাত এবং পায়ের স্বাভাবিক সঞ্চালন ব্যাহত হয়। কখনও কাঁপুনি দেখা যায়। কখনও অসাড় ভাব আসে। এমনকি, পার্কিনসন্স হলে নষ্ট হয় শরীরের ভারসম্যও। গবেষণায় দেখা যাচ্ছে, নাচ ওই ধরনের উপসর্গগুলিকে শরীরে সহজে জাঁকিয়ে বসতে দিচ্ছে না। তবে নাচ শুধু যে মস্তিস্কের রোগ ভাল রাখে তা নয়, সেন্টার ফর ডিজিজ় কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন বলছে, নাচ মস্তিষ্কের সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা এমনকি, স্মৃতিশক্তিকেও ভাল রাখতে সাহায্য করে।
কী ভাবে মস্তিষ্ককে ভাল রাখে নাচ?
মেধাবৃদ্ধি: আমেরিকার স্নায়ু্রোগ চিকিৎসক ভার্নন বি উইলিয়ামস জানাচ্ছেন, অ্যারোবিক্স জাতীয় নাচ যে মেধাশক্তিকে ভাল রাখে, তার প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে। উইলিয়ামসের কথায়, ‘‘অ্যারোবিক্স আমাদের মস্তিষ্কে এক ধরনের অণু-আকৃতির পদার্থ তৈরি করে, যা স্নায়ুকোষের বৃদ্ধিতে সহায়ক। এতে মেধাশক্তির পাশাপাশি স্মৃতিশক্তিও উন্নত হয়।’’
পরিকল্পনার দক্ষতা বৃদ্ধি: গবেষণা বলছে, যে কোনও বিষয়ে এগোনোর জন্য পরিকল্পনা অত্যন্ত জরুরি। সফল ভাবে পরিকল্পনা করার শক্তিও বাড়িয়ে দেয় নাচ। ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ এজিংয়ের গবেষণায় বিজ্ঞানীরা দেখেছেন, নাচলে মস্তিষ্কের সেই সমস্ত অংশগুলি উদ্দীপনায় জেগে ওঠে, যেগুলি মানুষের স্মৃতি, কাজের দক্ষতা, পরিকল্পনা করা এবং গুছিয়ে কাজ করার ক্ষমতা নিয়ন্ত্রণ করে।
কঠিন পরীক্ষার মুখোমুখি: নাচ, আরও ভাল ভাবে বললে কিছু বিশেষ ধরনের নাচ, যেমন ট্যাপ ডান্সিং মস্তিষ্ককে প্রতি মুহূর্তে চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি দাঁড় করায়। প্রতিমুহূর্তে ভঙ্গি বদল, তালে তাল মিলিয়ে পরের মুদ্রা মনে করে সেটি পারফর্ম করা— এই সবই মস্তিষ্ককে কঠিন পরীক্ষার সামনে ফেলে। বয়স যতই হোক, ওই প্রক্রিয়া মস্তিষ্ককে সজাগ রাখে।
দূরে রাখে ডিমেনসিয়া: ২০০৩ সালের একটি সমীক্ষা চালিয়েছিল অ্যালবার্ট আইনস্টাইন কলেজ অফ মেডিসিন। 'নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অফ মেডিসিন'-এ প্রকাশিত সেই সমীক্ষার রিপোর্ট বলছে, সাইকেল চালানো, গল্ফ খেলা, সাঁতার, টেনিস, নাচের মতো ১১ রকমের শারীরিক কসরত বয়স্কদের উপর পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে, একমাত্র নাচই ডিমেনসিয়া বা স্মৃতিভ্রংশ রোগের ঝুঁকি কমিয়েছে।
সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা: নাচ সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতাও বৃদ্ধি করে। ২০১২ সালের একটি গবেষণায় দেখা যাচ্ছে, জুম্বা ডান্স মস্তিস্কের চাপ কমানোর পাশাপাশি সেরোটোনিন হরমোন ক্ষরণও বৃদ্ধি করে। ‘হ্যাপি’ হরমোন নামে পরিচিত সেরোটোনিন মস্তিষ্ককে চাপমুক্ত রাখে। যা ঠান্ডা মাথায় সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে সহায়ক।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy