গাড়ির আসনেই লুকিয়ে বিপদ? প্রতীকী ছবি।
বিপদের হাতছানি গাড়ির ভিতরেও। সে ব্যক্তিগত গাড়ি হোক বা ক্যাব, প্রতি শ্বাসেই নাকি ঢুকছে গাদা গাদা রাসায়নিক। আর সেই রাসায়নিক ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়াচ্ছে। আমেরিকার বিজ্ঞানীদের গবেষণায় এমনটাই দাবি করা হয়েছে। ‘এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি’ বিজ্ঞান পত্রিকায় এই বিষয়ে একটি গবেষণাপত্রও ছাপা হয়েছে।
গাড়ির ভিতরের বাতাস থেকেই ছড়াতে পারে ক্যানসার, গবেষণার মূল বিষয় এটিই। আমেরিকার ডিউক বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা ২০১৫ থেকে ২০২২ সাল অবধি প্রায় ১০১টি বিদ্যুৎ, গ্যাস এবং পেট্রল ও ডিজেল-চালিত গাড়ি পরীক্ষা করে এমন দাবি করেছেন। মুখ্য গবেষক রেবেকা হেনের বক্তব্য, গাড়ির আসন, স্টিয়ারিং তৈরি করতে যে সব রাসায়নিক ব্যবহার করা হয়, তার মধ্যে কয়েকটি মানুষের শরীরের জন্য বিপজ্জনক। এই সব রাসায়নিকের ছোঁয়াচ থেকে চালক তো বটেই, যাত্রীদেরও শরীরে ঢুকতে পারে বিষ। দিনের পর দিন এই সব রাসায়নিকের সংস্পর্শে বেশি সময় ধরে থাকলে ক্যানসারের ঝুঁকি বেড়ে যাবে বলেই মত তাঁদের।
গাড়ির ভিতরে কী কী রাসায়নিক পাওয়া গিয়েছে?
রেবেকার কথায়, ৯৯ শতাংশ গাড়িতেই টিডিসিআইপিপি (ট্রিস ১,৩-ডাইক্লোরো-২-প্রপাইল ফসফেট) নামের এক রাসায়নিক ব্যবহার করা হয়, যা অগ্নিনিরোধক হিসাবে কাজে লাগে। এই রাসায়নিক শ্বাসনালি দিয়ে ঢুকলে ক্যানসারের আশঙ্কা বাড়িয়ে তুলতে পারে। তা ছাড়া গাড়ির আসন তৈরিতে যে ফোম ব্যবহার করা হয়, তাতে পাওয়া গিয়েছে টিসিআইপিপি (ট্রিস ১-ক্লোরো আইসোপ্রপাইল ফসফেট) নামে এক ধরনের রাসায়নিক, যা খুব দ্রুত গাড়ির ভিতরের বাতাসে ছড়িয়ে পড়তে পারে। এই রাসায়নিকও ক্যানসারের কারণ হতে পারে। তবে কেবল ক্যানসার নয়, এই রাসায়নিক দীর্ঘ সময় ধরে শরীরে ঢুকলে স্নায়ু ও প্রজননতন্ত্রের উপরেও প্রভাব ফেলতে পারে। কারও থাইরয়েডের সমস্যা থাকলে তা আরও মারাত্মক হয়ে উঠতে পারে।
আরও কিছু রাসায়নিক পাওয়া গিয়েছে গাড়িতে, যা মারণরোগের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। তার মধ্যে একটি হল টিএনবিপি (ট্রিস-এন-বিউটাইল ফসফেট) এবং অন্যটি টিইপি (১,৩ ডাইক্লোরো-২-প্রপাইল)। এই দুই রাসায়নিকও গাড়ির ভিতরের বাতাসে মিশে যাকে। গরমকালে এদের মাত্রা আরও বেড়ে যায়। গাড়ি যিনি চালাচ্ছেন, অর্থাৎ, চালকের আসনের কাছেই এই দুই রাসায়নিক বেশি মাত্রায় পাওয়া গিয়েছে বলে দাবি গবেষকদের। তাঁরা বলছেন, ঘণ্টাখানেক ধরে গাড়ি চালালে বা গাড়ির ভিতরে বসে থাকলে, এই দুই রাসায়নিকের প্রভাবে শরীরের ক্ষতি হতে পারে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy