ভুজঙ্গাসন অভ্যাস করবেন কেন? ছবি: সংগৃহীত।
‘যোগ’ শব্দের অর্থ হল সংযোগ। ভারতীয় সাধনধারার অন্যতম যোগ বৃহতের সঙ্গে আত্মনের সংযোগের কথা বলে। তার জন্য দরকার বিশেষ ‘আধার’। এই ‘আধার’ আর কিছুই নয়, মানবশরীর। তাই যোগচর্চার অন্যতম অঙ্গ হল যোগাসন। বিবিধ যোগাসনেরও একটি হল ভুজঙ্গাসন। প্রাত্যহিক জীবনে এই আসনের গুরুত্ব বিপুল।
ইদানীং অল্পবয়সিদের মধ্যে ঘাড়, পিঠ কিংবা কোমরের ব্যথার দাপট বেড়েছে। একটানা চেয়ার-টেবিলে বসে কাজ করা, নিয়মিত শরীরচর্চা না করার জন্য অনেক সময়েই এই ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। তবে যোগ প্রশিক্ষকেরা বলছেন, এই সমস্যা থেকে মুক্তি মিলতে পারে ভুজঙ্গাসনে। ‘ভুজঙ্গ’ শব্দের অর্থ ‘সাপ’। সাপের ফণা তোলার মতো ভঙ্গিমায় এই আসনটি অভ্যাস করতে হয়।
কী ভাবে অভ্যাস করবেন ভুজঙ্গাসন?
উপুড় হয়ে ম্যাটের উপর শুয়ে পড়ুন। পা সোজা করে রাখুন। শ্বাসপ্রশ্বাস যেন স্বাভাবিক থাকে। দুই হাতের তালু কাঁধের পাশে মাটিতে রাখুন, কনুই থাকবে শরীর ঘেঁষে। আগুপিছু করে আরামদায়ক ভাবে নিজের অবস্থান ঠিক করে নিন। কপাল মাটিতে স্পর্শ চোখ বন্ধ করুন।
এ বার ধীরে ধীরে শ্বাস নিতে নিতে মাথা ও বুক উপরের দিকে তুলুন। ভাঁজ করা হাত পাশে থাকবে। কিন্তু চেষ্টা করবেন হাতে ভর না দিয়ে পেট-সহ শরীরের নীচের অংশে ভর দিয়ে মাথা ও বুক উপরের দিকে তোলার।
খেয়াল রাখবেন, নাভি যেন মাটি থেকে ৩ ইঞ্চি উপরে ওঠে। আর একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল মাটি থেকে নাভি উঠলেও শ্রোণি অঞ্চল কিন্তু মাটিতে ঠেকে থাকবে। ভুজঙ্গাসনের ক্ষেত্রে এই অবস্থান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
এ বার দুই হাতে ভর দিয়ে শরীর যতটা সম্ভব উপরের দিকে তোলার চেষ্টা করুন। মাথা পিছন দিকে হেলিয়ে রাখুন। এর ফলে ঘাড়ে একটু টান পড়বে।
এই ভঙ্গিতে ৩০ সেকেন্ড থাকতে পারেন। অভ্যাস হয়ে গেলে ১ মিনিট পর্যন্ত সময় বৃদ্ধি করা যেতে পারে। আসন শেষে শবাসনে ফিরে আসুন। এই ভাবে অন্তত ২ থেকে ৩ বার ভুজঙ্গাসন অভ্যাস করুন।
কেন করবেন ভুজঙ্গাসন?
১) একনাগাড়ে চেয়ার- টেবিলে বসে কম্পিউটারে কাজ করলে ঘাড় ও পিঠের পেশি শক্ত হয়ে যেতে পারে। এই আসন অভ্যাসে মেরুদণ্ড সংলগ্ন পেশিগুলির রক্ত সঞ্চালন বাড়ে ও ব্যথার হাত থেকে রেহাই মেলে।
২) শিরদাঁড়ার নমনীয়তা নষ্ট হয়ে গেলে শরীরের সমস্ত স্নায়ু বা নার্ভের কাজকর্ম ব্যাহত হয়। কারণ, মস্তিষ্ক থেকে গোটা শরীরের যাবতীয় স্নায়ু মেরুদণ্ডের ভিতরে থাকা সুষুম্নাকাণ্ডের মাধ্যমেই ছড়িয়ে থাকে।
৩) নিয়মিত ভুজঙ্গাসন অভ্যাস করলে মেরুদণ্ডে রক্ত চলাচল বাড়ে বলে স্নায়ুতন্ত্র উজ্জীবিত হয় ও সঠিক ভাবে কাজ করতে পারে। যে কোনও স্ত্রীরোগে এই আসনটি অভ্যাস করলে সমস্যা বাড়তে পারে না। ভুজঙ্গাসন করলে ফুসফুস প্রসারিত হয়। অ্যাজ়মা বা হাঁপানির রোগীদের জন্য এই আসন অত্যন্ত উপযোগী। নিয়মিত অভ্যাস করলে পেটের মধ্যে থাকা সব ক’টি প্রত্যঙ্গের ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। লিভার ও কিডনি ভাল থাকে, হজমশক্তি বাড়ে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy