Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Nomophobia

ফোন ছাড়া থাকতে ভয় পান? ‘নোমোফোবিয়া’-র নাগপাশে বন্দি হয়ে গেলেন না তো?

কেউ জলে নামতে ভয় পান। আবার, কেউ ভয় পান প্রেমে পড়তে। কারও আবার খাবার দেখলে ভয় লাগে। কিন্তু মোবাইল হাতছাড়া হওয়ার ভয়? তা-ও আবার হয় নাকি?

Nomophobia

ফোন ছাড়া এক মুহূর্ত থাকতে পারেন না? ছবি: সংগৃহীত।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ০৯:৩০
Share: Save:

সারা দিন পর বাড়ি ফিরে মোবাইল ফোনটি চার্জে দিয়েছেন। কিন্তু এমন জায়গায় ফোনটি রেখেছেন যেন চার্জে বসিয়েও তা হাতের নাগালে থাকে। স্নানঘরে গিয়েও সেই এক অবস্থা! জরুরি কোনও ফোন আসার কথা হয়তো নেই। কিন্তু স্নান করার ওই ১০-১৫ মিনিটে কত কী ‘চোখ’ছাড়া হয়ে যায়, সেই ভয় থেকেই যন্ত্রটি সঙ্গে রাখতে হয়। ঘুমোতে যাওয়ার সময়েও তাই। রাতে কেউ যদি নতুন কিছু পোস্ট করে, ঘুমিয়ে পড়লে তা দেখা হবে না। মাথার আশপাশে সুইচবোর্ড নেই। তাতে কী? প্রয়োজনে বিছানার একপাশে ‘এক্সটেনশন’ বোর্ড টেনে আনা যেতে পারে। কিন্তু ফোন হাতছাড়া করা যাবে না। এই ফোন হাতছাড়া হওয়ার উদ্বেগ, ভয়কে চিকিৎসা বিজ্ঞানে বলা হয় ‘নোমোফোবিয়া’ বা ‘নো-মোবাইল-ফোবিয়া’।

‘ফোবিয়া’র আভিধানিক অর্থ হল ভয়। এমন কোনও জিনিস যা চোখের সামনে দেখলে বা কোনও ঘটনা ঘটলে মনের মধ্যে উদ্বেগ বা ভয় সৃষ্টি হয়। কেউ যেমন জলে নামতে ভয় পান। আবার, কেউ ভয় পান প্রেমে পড়তে। কারও আবার খাবার দেখলে ভয় লাগে। কিন্তু মোবাইল হাতছাড়া হওয়ার ভয়? সকালে ঘুম থেকে উঠে চোখ খোলা থেকে ঘুমোতে যাওয়ার আগে পর্যন্ত যে চলমান বস্তুটি আমাদের জীবনের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে গিয়েছে, সেটি হঠাৎ খারাপ হয়ে গেলে, বন্ধ থাকলে কিংবা কিছুক্ষণের জন্য কাছ ছাড়া হলেও কি মনের মধ্যে উদ্বেগের জন্ম হয়? মনোবিদেরা বলছেন, হয়। দেশ-বিদেশের বিভিন্ন গবেষণায় সে প্রমাণ মিলেছে। মোবাইলের প্রতি আসক্তি পড়ুয়াদের যে পড়াশোনার ক্ষতি করে সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই। সঙ্গে মানসিক স্বাস্থ্যেরও ক্ষতি করে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে, এই আসক্তির পিছনে রয়েছে সমাজমাধ্যমের কারসাজি এবং অনলাইন গেম। বড়দের ক্ষেত্রে বিষয়টি অন্যরকম। তাঁদের আবার ফোনের প্রতি অতিরিক্ত নির্ভরশীলতাও ‘নোমোফোবিয়া’-র জন্ম দেয়।

‘নোমোফোবিয়া’-য় আক্রান্ত হওয়ার লক্ষণ কী?

Nomophobia

ছবি: সংগৃহীত।

১) সর্বক্ষণ ফোনের নোটিফিকেশন চেক করা। কী মেসেজ এল, আদৌ কোনও মেসেজ এল কি না, তাই নিয়ে মনের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি হওয়া।

২) যত ক্ষণ না হাতে ফোনটি আসছে তত ক্ষণ মনের মধ্যে কী হল, কী হয়ে যাচ্ছে, মনের মধ্যে তা নিয়ে ভয় কাজ করতে থাকে।

৩) ফোনের ব্যাটারি লো সিগন্যাল দেখালে বা বন্ধ হয়ে গেলেই অনেকের প্যানিক অ্যাটাক হয়। কী করবেন ভেবে পান না। অস্থির হয়ে ওঠেন।

৪) সারা ক্ষণ সমাজমাধ্যমে থাকতে না পারার উদ্বেগ বেশি দেখা যায় তরুণ প্রজন্মের মধ্যে। সারা ক্ষণ মনের মধ্যে অদ্ভুত এক অস্থিরতা কাজ করতে থাকে।

৫) হাতের কাছে ফোন না থাকার কষ্টে অনেক সময় ‘উইথড্রয়াল সিম্পটম’ও দেখা যায়। অনিদ্রাজনিত সমস্যা, অবসাদ, খাবারে অনীহা, সারা ক্ষণ খিটখিট করার মতো লক্ষণ দেখা যায়।

সময়মতো এই অসুখের চিকিৎসা না করালে কী হতে পারে?

দিনের পর দিন এই ধরনের সমস্যাকে এড়িয়ে গেলে তা মানসিক স্বাস্থ্যের পক্ষে বিপজ্জনক হয়ে দাঁড়াতে পারে। মানসিক চাপ, অবসাদ, একাকিত্বের সমস্যা বেড়ে যেতে পারে। দীর্ঘ দিন ধরে এমনটা চলতে থাকলে ঘুমের স্বাভাবিক চক্র বিঘ্নিত হতে পারে। পরিস্থিতি জটিল হলে অবশ্যই মনোবিদের পরামর্শ নিতে হবে।

সুরাহা মিলবে কোন পথে?

১) স্মার্টফোন ব্যবহারের সময় সম্পর্কে নিজেকেই সচেতন হতে হবে।

২) আবসাদ, উদ্বেগ বাড়তে পারে এমন জিনিস ফোনে না দেখাই ভাল।

৩) সমাজমাধ্যম থেকে নিজেকে সরিয়ে রাখার অভ্যাস করতে হবে।

অন্য বিষয়গুলি:

Mobile Phone Nomophobia
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy