রাতে ঘুম কম হলে দিনের বেলা ঘুম পাওয়া বা ক্লান্ত লাগা স্বাভাবিক। কিন্তু যদি সব সময়েই এমন ঘুম পেতে থাকে, প্রচণ্ড ক্লান্ত লাগে,তা হলে বুঝতে হবে এটা স্বাভাবিক নয়। অনেকেই বলেন, বেলা গড়ালেই ঘুম পেতে শুরু করে, সারা ক্ষণ হাইও ওঠে। কেন হয় এমন?
সর্ব ক্ষণ ঘুম পাওয়া, ঝিমুনি লাগার কারণ হাইপারসমনিয়া হতে পারে। এমন এক শারীরিক অবস্থা, যেখানে ৮-১০ ঘণ্টা ঘুমোনোর পরেও সব সময়ে ঘুম পেতে থাকে। পরিশ্রম না করেও খুব ক্লান্ত লাগে। দিনের বেলাতেই ঝিমুনি বেশি আসে, ঘন ঘন হাই উঠতে থাকে। ‘ন্যাশনাল সেন্টার ফর বায়োটেকনোলজি ইনফরমেশন’ (এনসিবিআই)-দেশের জনসংখ্যার ৪ থেকে ৬ শতাংশই ভোগেন এই শারীরিক সমস্যায়। আর হাইপারসমনিয়া একেবারে সেরে যাবে এমন কোনও ওষুধ বা থেরাপি নেই। কেবল একে নিয়ন্ত্রণে রাখতে কিছু অভ্যাস রপ্ত করতে হয়।
কী ভাবে বুঝবেন আপনি হাইপারসমনিয়ায় আক্রান্ত?
রাতে টানা ১১ ঘণ্টা ঘুমিয়েও সকালে উঠতে পারছেন না।
ঘুম ভাঙার পরেই প্রচণ্ড ক্লান্ত লাগছে, রাগের মাত্রাও বাড়ছে।
সারা দিন ঘন ঘন হাই উঠবে, উদ্বেগ-অবসাদও হতে পারে।
মাথা যন্ত্রণা ভোগাবে, মাইগ্রেনের সমস্যাও দেখা দিতে পারে।
ভুলে যাওয়ার প্রবণতা বাড়বে।
চোখে ব্য়থা, চোখ থেকে অনবরত জল পড়বে, চোখ জ্বালা করবে।
নিজস্ব চিন্তাভাবনাও গুলিয়ে যেতে থাকবে, সিদ্ধান্ত নিতে দেরি হবে।
আরও পড়ুন:
কেন হয় এমন সমস্যা? সমাধান কিসে?
এনসিবিআই-এর তথ্য বলছে, বিভিন্ন রকম শারীরিক ও মানসিক সমস্যা থেকে হাইপারসমনিয়া হতে পারে। যেমন ‘স্লিপিং ডিজ়অর্ডার’ বা অনিদ্রার সমস্যা থাকলে তা থেকে হাইপারসমনিয়ার লক্ষণ দেখা দিতে পারে। যাঁরা স্লিপ অ্যাপনিয়ায় ভুগছেন বা দীর্ঘকালীন অবসাদের শিকার, বাইপোলার ডিজ়অর্ডার রয়েছে অথবা ক্যানসারের মতো রোগ রয়েছে এবং তার জন্য ওষুধ খাচ্ছেন, তাঁদের হতে পারে। তা ছাড়া দিবারাত্র মোবাইল, টিভি বা ল্যাপটপের পর্দায় চোখ রাখলে, অস্বাস্থ্যকর খাবার খেলে ও অতিরিক্ত মদ্যপান করলে এমন সমস্যা হতে পারে।
এর থেকে রেহাই পাওয়ার উপায় হল খাওয়াদাওয়ায় নিয়ন্ত্রণ ও পর্যাপ্ত ঘুম। রাতে ৭-৮ ঘণ্টা ঘুমই যথেষ্ট। সকালে উঠে হাঁটাহাঁটি বা যে কোনও শারীরিক কসরত করতে হবে। সুষম খাবারই খেতে হবে, অ্যালকোহলের নেশা কমালে ভাল। বেলা ৩টের পরে আর চা-কফি বা অতিরিক্ত ক্যাফিন আছে এমন পানীয় খাবেন না। অতিরিক্ত ওজন বা থাইরয়েডের সমস্যা থাকলেও এমন হতে পারে। সে জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ওষুধ খেতে হবে বা ডায়েট ঠিক করতে হবে।