মূত্রনালির সংক্রমণের সঙ্গে ফ্রিজের যোগসূত্র কী? প্রতীকী ছবি।
নিজেদের অসাবধানতা ও অসতর্কতার কারণে যে সব অসুখ শরীরে দানা বাঁধে, তার মধ্যে অন্যতম মূত্রনালির সংক্রমণ। রেচনতন্ত্রের কোনও অংশে জীবাণুঘটিত সংক্রমণ হলে চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায়, তাকেই বলে ‘ইউরিনারি ট্র্যাক্ট ইনফেকশন’ (ইউটিআই)। তখন প্রস্রাবের জায়গায় জ্বালা অনুভূত হয়, মূত্রত্যাগ করতে গেলেই যন্ত্রণা হয়, তলপেটে অসহ্য ব্যথা ভোগায়। কিডনি, মূত্রনালি, মূত্রথলি বা একাধিক অংশেই এই ধরনের সংক্রমণ হতে পারে। মহিলারাই বেশি ভোগেন এই রোগে। যার কারণ হিসেবে অস্বাস্থ্যকর ও অপরিচ্ছন্ন শৌচাগারকেই দায়ী করা হয়। কিন্তু মূত্রনালির সংক্রমণ লাগাতার ভোগাতে থাকলে তার কারণ শুধু শৌচাগার না-ও হতে পারে। এর জন্য দায়ী হতে পারে আপনার বাড়ির ফ্রিজও।
অবাক লাগলেও সত্যি। ফ্রিজ থেকেও মূত্রনালির সংক্রমণ হতে পারে, এমনই দাবি করেছেন আমেরিকান গবেষকেরা। তবে শুধু আমেরিকা নয়, গুরুগ্রামের সিকে বিড়লা হাসপাতালের স্ত্রীরোগ চিকিৎসক দীপিকা আগরওয়ালও এমনই দাবি করেছেন। চিকিৎসকের বক্তব্য, মূত্রনালির সংক্রমণের জন্য মূলত দায়ী 'ই কোলাই' নামক একটি ব্যাক্টেরিয়া। এই ব্যাক্টেরিয়া শুধু যে অপরিচ্ছন্ন শৌচাগার থেকে ছড়ায়, তা নয়। বরং বাসি-পচা মাছ বা মাংস থেকেও ছড়াতে পারে। ফ্রিজে যদি খুব বেশি দিন ধরে কাঁচা মাছ বা মাংস রেখে দেন, তা হলে বিভিন্ন রকম ব্যাক্টেরিয়া তাতে জন্মাবে। জীবাণুদের আঁতুরঘর হয়ে উঠবে ফ্রিজ। কিছু ক্ষেত্রে রান্নার পরেও খাবারের মধ্যে এই ধরনের ব্যাক্টেরিয়া থেকে যায়। পরবর্তী কালে সেখান থেকেই পেটের সমস্যা, অ্যালার্জি ও সংক্রমণজনিত রোগ দেখা দেয়। মূত্রনালির সংক্রমণও সেই ভাবেই হতে পারে।
২০২৩ সালে মার্কিন গবেষকদের একটি সমীক্ষাতেও দাবি করা হয়েছিল, দোকান থেকে যে কাঁচা মাংস কিনে আনা হয়, তার বেশির ভাগেরই মধ্যে ই কোলাই ব্যাক্টেরিয়ার অস্তিত্ব পাওয়া গিয়েছে। এমনকি প্রক্রিয়াজাত মাংস, প্যাকেটবন্দি কাঁচা মাংস বা চিকেন নাগেটসেও এমন ব্যাক্টেরিয়া পাওয়া গিয়েছে, যা শরীরে ঢুকলে সংক্রমণ জনিত অসুখের ঝুঁকি বাড়াবে। তাই মাছ বা মাংস বেশি দিন ফ্রিজে রাখা ঠিক নয়। আর তা ফের ভাল করে ধুয়ে নিয়ে উচ্চ তাপে রান্না করা উচিত। বেশি তাপে কোনও জীবাণুই বাঁচতে পারে না।
মূত্রনালিতে সংক্রমণ হলে বেশি করে জল খাওয়া ছাড়া উপায় নেই। এই সময়ে প্রোবায়োটিক জাতীয় খাদ্য বেশি পরিমাণে খাওয়া উচিত। এই ধরনের খাবার ব্যাক্টেরিয়া সংক্রমণের ঝুঁকি কমায়। দই প্রোবায়োটিকের ভাল উৎস। দই খেলেও উপকার পেতে পারেন। বাটারমিল্কও খেতে পারেন। টক দই দিয়ে লস্যি বা ঘোল বানিয়েও খাওয়া যায়। ভিটামিন সি রয়েছে, এমন ফল বেশি খেতে হবে। ভিটামিন সি প্রস্রাবের সময় জ্বালা ভাব কমাতে সাহায্য করে। খাদ্যতালিকায় মুসাম্বি, কমলালেবু, কিউয়ি, ব্রকোলি, পেঁপে, স্ট্রবেরি রাখা যেতে পারে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy