রক্ত পরীক্ষার চেয়েও বেশি উপযোগী। মুখ থেকে নেওয়া থুতু বা লালা পরীক্ষা করেই প্রস্টেট ক্যানসার নির্ভুল ভাবে শনাক্ত করা যাবে। কেবল তা-ই নয়, ভবিষ্যতে ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা আছে কি না, তা-ও বলে দেওয়া সম্ভব হবে। এমনটাই দাবি করেছেন লন্ডনের ইনস্টিটিউট অফ ক্যানসার রিসার্চের গবেষকেরা।
ব্রিটেন সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রক ও ইনস্টিটিউট অফ ক্যানসার রিসার্চের যৌথ উদ্যোগে প্রস্টেট ক্যানসারের চিকিৎসায় নতুন পথের হদিশ পেলেন বিজ্ঞানীরা। প্রায় ১২ হাজার মানুষের উপর পরীক্ষাটি করে এই দাবি করা হয়েছে। যাঁরা অংশ নিয়েছিলেন, তাঁদের বয়স ৫৫ থেকে ৬৯ বছরের মধ্যে। ওই বয়সেই প্রস্টেট ক্যানসারের ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি থাকে। গবেষকেরা জানিয়েছেন, প্রত্যেকের থুতু-লালার নমুনা পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে অন্তত ১৩০ জনের ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।
‘নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অফ মেডিসিন’-এ গবেষণার খবরটি প্রকাশিত হয়েছে। গবেষকেরা জানিয়েছেন, ঠিক যে জিনটির মিউটেশন বা রাসায়নিক বদলের কারণে প্রস্টেট ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে, সেই জিনটি রক্তপরীক্ষায় দ্রুত চিহ্নিত করা যায় না। তার জন্য আলাদা করে ডিএনএ অ্যানালিসিস করতে হয়। কিন্তু থুতু বা লালার নমুনা পরীক্ষা করলে সেই জিনটির খোঁজ পাওয়া সম্ভব। গবেষণায় এমনটাই দেখা গিয়েছে।
আরও পড়ুন:
আরও নিশ্চিত হওয়ার জন্য হাজার জন পুরুষের লালার নমুনা পরীক্ষা করে ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে বা ক্যানসার বাসা বাঁধতে শুরু করেছে, এমন ৪৬৮ জনকে আলাদা করেন গবেষকেরা। তার পর বায়োপ্সি ও এমআরআই পরীক্ষা করে ধরা পড়ে, যে সত্যিই তাঁদের শরীরে ক্যানসার কোষের বিভাজন শুরু হয়ে গিয়েছে। পরীক্ষাটি এখানেই শেষ হয়নি। দফায় দফায় বহু জনের উপর পরীক্ষাটি করে তবেই নিশ্চিত তথ্য দিয়েছেন গবেষকেরা।
বয়স ৫০-এর কোঠা পেরোলে প্রস্টেট ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ে। যে কোনও ক্যানসার যদি প্রাথমিক পর্যায়ে ধরা পড়ে, তা হলে সেরে ওঠার সুযোগ বেশি থাকে। বিশেষ করে প্রস্টেট ক্যানসার প্রাথমিক পর্যায়ে ধরা পড়লে ঝুঁকি অনেকটাই কম থাকে। তাই দ্রুত যাতে রোগটি ধরা পড়ে, সেই চেষ্টাই চলছে।