টানা হাজার দিন ধরে ঋতুস্রাব চলেছে। অর্থাৎ, প্রায় বছর তিনেক ধরে এক দিনের জন্যও বন্ধ হয়নি। পেটের যন্ত্রণাতেও ভুগেছেন তরুণী। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, বিরলের মধ্যে বিরলতম পরিস্থিতির শিকার হয়েছিলেন তিনি। কী রোগ হয়েছিল তাঁর?
তরুণী আমেরিকার বাসিন্দা। অনলাইনে তিনি তাঁর অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন। বলেছেন, তিন বছর ধরে ঋতুস্রাব হয়ে চলেছিল তাঁর। শরীরে আয়রনের মাত্রা কমে গিয়েছিল। অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন তিনি। কী থেকে এমন ঘটছে, তা বুঝতেও পারেননি। পরে চিকিৎসকের কাছে গিয়ে ধরা পড়ে, তিনি বিরল শারীরিক সমস্যার শিকার।
তরুণীর হিস্টেরোস্কোপি করা হয়, তাতেই পড়ে সমস্যা। প্রথমে চিকিৎসকেরা ভেবেছিলেন, তরুণী হয়তো পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোমে ভুগছেন বা হয়তো তাঁর জরায়ুতে সিস্টের সংখ্যা বাড়ছে। পরে জানা যায়, সে সব কিছুই নয়। তাঁর শরীরে জরায়ুর গঠনেই অস্বাভাবিকতা রয়েছে। বাইকর্নুয়েট জরায়ুর কারণেই এমন পরিস্থিতির মুখে পড়তে হয়েছে তাঁকে।
আরও পড়ুন:
বাইকর্নুয়েট জরায়ু কী?
জরায়ুর গঠন যখন দেখতে ঠিক হার্টের আকৃতির হয়, চিকিৎসা বিজ্ঞানের পরিভাষায় এই ধরনের জরায়ুকে ‘বাইকর্নুয়েট’ জরায়ু বলা হয়। সারা বিশ্বে মাত্র ১০০০ জন মহিলার এই ধরনের জরায়ু রয়েছে। এর পোশাকি নাম ‘বাইকর্নুয়েট ইউটেরাস ইউনিকলি সার্ভিক্স’ অর্থাৎ জরায়ুর মুখ একটি, কিন্তু তা বিভক্ত দু’টি প্রকোষ্ঠে। এমন জরায়ু থাকলে গর্ভধারণেও সমস্যা হতে পারে।
জন্মগত ভাবেই জরায়ুর এমন গঠন হয়। শুরুতে বোঝা যায় না, তবে ঋতুস্রাবে জটিলতা বা গর্ভধারণে সমস্যা হলে তখন পরীক্ষা করলে ধরা পড়ে। এ ক্ষেত্রে জরায়ুর দু'টি প্রকোষ্ঠ তৈরি হয়, যার একটি ইংরেজির ‘ভি’ অক্ষরের মতো ও অন্যটি ‘টি’ অক্ষরের মতো। মায়ের গর্ভে ভ্রূণের যখন বিকাশ ঘটে, তখন থেকেই এই অস্বাভাবিকতা শুরু হয়। পরবর্তী সময়ে গিয়ে জরায়ুর আকার বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে অস্বাভাবিকতাও বাড়ে। জরায়ুর আকার ঠিক করতে জটিল অস্ত্রোপচার করার প্রয়োজন হয়।