বিনোদন থেকে প্রয়োজন মেটে মোবাইলেই। কাজ, কাজ ফুরোলো অবসর— চোখ সরে না মোবাইল অথবা ল্যাপটপের পর্দা থেকে। যত ক্ষণ ঘুম তত ক্ষণ বিশ্রাম। তার পরে আর চোখের বিরাম নেই। দিনের পর দিন অতিরিক্ত পরিশ্রমের প্রভাব পড়তে পারে চোখেও।
স্বাস্থ্য এবং পরিবার কল্যাণ মন্ত্রেকর অধীনে ২০১৫ থেকে ২০১৯ সালে দৃষ্টিহীনতা নিয়ে একটি সমীক্ষা হয়। তাতেই উঠে এসেছে, ভারতে ৬৬ লক্ষ নাগরিক দৃষ্টিহীন। ৫৫ কোটি মানুষ দৃষ্টিক্ষীণতার শিকার।
ফলে দৃষ্টিশক্তি কমে আসার আগেই, চোখের যত্ন প্রয়োজন। কিন্তু কী ভাবে? বাড়িতে বড়রা ছোটদের বলেন গাজর, দুধ, শাকসব্জি খেতে। ভিটামিন এ খেলে চোখের জ্যোতি বাড়বে। কিন্তু শুধু কি পুষ্টিকর খাবার খেলেই হবে? আর কী ভাবে চোখ ভাল থাকবে?
মুম্বইয়ের চক্ষুচিকিৎসক জয় গোয়েল বলছেন, দৃষ্টিশক্তি ভাল রাখতে বেশ কয়েকটি বিষয় জরুরি। চোখের সমস্যা দূর করার জন্য মোবাইলের পর্দায় চোখ রাখার সময় যেমন বেঁধে ফেলতে হবে, তেমনই রয়েছে বেশ কিছু নিয়মও।
১. চোখের সমস্যা থাক বা না থাক নিয়ম করে ছোট থেকে বড় সকলকেরই চিকিৎসকের গিয়ে চোখ পরীক্ষা করানো জরুরি। ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথি, গ্লকোমার মতো সমস্যা শুরুতে ধরা পড়লে চিকিৎসা অনেক সহজ হয়। চিকিৎসকের কথায়, অনেক সমস্যা শুরুতে ধরা পড়ে না, কিছু লক্ষণ চট করে বোঝাও যায় না। কিন্তু পরীক্ষা-নিরীক্ষায় তা চিহ্নিত হতে পারে।
আরও পড়ুন:
২. নোংরা হাতে বার বার চোখ রগড়ানো, অন্যের প্রসাধনী, তোয়ালে ব্যবহার করা একেবারেই ঠিক নয়। এতে এক জনের থেকে অন্যের সংক্রমণ ঘটতে পারে। চোখ লাল হওয়া, জল পড়ার মতো সমস্যা হলেও সাবধান হতে হবে। পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা সব সময়ই জরুরি। কাজল, আইলাইনার, মাস্কারা, আইশ্যাডো— অনেক কিছুই সাজগোজের জন্য ব্যবহার হয়। দিনের শেষে সেই মেকআপ তুলে ফেলতেই হবে।
৩. সূর্যের ক্ষতিকর অতিবেগনি রশ্মি চোখের ক্ষতি করে। চশমা বা সানগ্লাসে ইউভিএ, ইউভিবি থেকে সুরক্ষার জন্য পরত থাকা দরকার। তা ছাড়া মোবাইল বা ল্যাপটপের পর্দা থেকে নির্গত রশ্মির হাত থেকে চোখ বাঁচাতে অ্যান্টিগ্লেয়ার লেন্স ব্যবহারের পরামর্শও দেন চিকিৎসকেরা।
৪. স্ক্রিন টাইম বা কম্পিউটারের পর্দায় চোখ রেখে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাজ করতে হলে ২০-২০-২০ রুল অনুসরণ জরুরি। এই নিয়ম বলছে ২০ মিনিট অন্তর ২০ সেকেন্ড ধরে ২০ ফুট দূরত্বের কোনও কিছু দেখতে হবে। চোখের সামনে খোলা জানালা থাকলে সে দিকে তাকিয়েও ২০ সেকেন্ড বিরতি নেওয়া যায়।
৫. চোখের জ্যোতি বাড়াতে ভিটামিন এ, সি,ই, ক্যালশিয়াম, জ়িঙ্ক-সহ খনিজ রাখতে হবে খাদ্যতালিকায়। খেতে হবে মাছ, শাকসব্জি। পাশাপাশি চোখের জল যাতে শুকিয়ে না যায়, সে জন্য নিয়ম করে মাপমতো জল খাওয়াও জরুরি। না হলে চোখে জ্বালা দেওয়া, কড়কড় করার মতো নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে।