Advertisement
০৮ জানুয়ারি ২০২৫
HMPV Cases in Bengaluru

কর্নাটকের পরে গুজরাতেও এইচএমপিভির হানা! কী ভাবে খুদের যত্ন নেবেন, জানালেন চিকিৎসক

ভারতে এইচএমপিভির সংক্রমণের খবরে উদ্বিগ্ন অভিভাবকেরাও। তবে এই ভাইরাস সত্যিই কি কোভিডের মতো প্রাণঘাতী? কী বলছেন চিকিৎসকেরা? সদ্যোজাতদের কি সংক্রমণের আশঙ্কা বেশি?

এইচএমপিভি ভাইরাস শিশুদের জন্য কতটা প্রাণঘাতী?

এইচএমপিভি ভাইরাস শিশুদের জন্য কতটা প্রাণঘাতী? গ্রাফিক: আনন্দবাজাার অনলাইন।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৬ জানুয়ারি ২০২৫ ১৩:০০
Share: Save:

ভারতেও এ বার পাওয়া গেল হিউম্যান মেটানিউমোভাইরাস (এইচএমপিভি)-এর সংক্রমণের হদিস। বেঙ্গালুরুতে আট মাস ও তিন মাস বয়সি দুই শিশুর শরীরে এই ভাইরাসের সংক্রমণ মিলেছে। তবে চিনে ছড়িয়ে পড়া ভাইরাসের সঙ্গে বেঙ্গালুরুতে এইচএমপি ভাইরাসের সংক্রমণের কোনও যোগ নেই বলে জানিয়েছে কেন্দ্র।

ভারতে এই ভাইরাস সংক্রমণের খবরে উদ্বিগ্ন অভিভাবকেরাও। তবে এই ভাইরাস সত্যিই কি কোভিডের মতো প্রাণঘাতী? কী বলছেন চিকিৎসক? সদ্যোজাতদের কি সংক্রমণের আশঙ্কা বেশি? চিকিৎসক সুবর্ণ গোস্বামীর মতে, ‘‘এইচএমপিভি কিন্তু কোভিডের মতো নতুন কোনও ভাইরাস নয়। এই ভাইরাস আমাদের পূর্বপরিচিত। শীতকালে বিভিন্ন দেশেই যে সব ইনফ্লুয়েঞ্জা ও ভাইরাসের প্রকোপ বাড়ে, ‌এইচএমপিভি তাদের মধ্যে অন্যতম। এই ভাইরাসের সংক্রমণ আপনা-আপনিই ঠিক হয়ে যায় পাঁচ থেকে ছ’দিনের মাথায়। সাধারণ সর্দি-কাশি হলে বা ঠান্ডা লাগলে, সে-ও তো কোনও না কোনও ভাইরাসের কারণেই হয়। কিন্তু তখন খুব বাড়াবাড়ি না হলে আমরা রোগটি কোন ভাইরাসের কারণে হয়েছে তা জানতে পরীক্ষা করাতে ছুটি না। প্রতি বছর শীত পড়লে এ দেশে ভাইরাস সংক্রমণের প্রকোপ যে হারে বৃদ্ধি পায়, এ বছরও কিন্তু সেই হারেই বেড়েছে। খুব অস্বাভাবিক কিছু এখনও চোখে পড়েনি। চিনে এই ভাইরাস নিয়ে বেশ হইচই শুরু হয়েছে বটে, কোভিডের পর আমাদের দেশেও এখন সতর্কতা বেড়েছে। তবে এখনও এই ভাইরাস নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার মতো কোনও কারণ দেখছি না।’’

এইচএমপিভি কিন্তু একটু বেশি বয়সি বাচ্চা, অর্থাৎ চার থেকে চোদ্দো বছর বয়সিদের মধ্যে বেশি ছড়ায়, এমনটাই বলছেন সুবর্ণ। এ ছাড়া কোনও ক্রনিক অসুখ থাকলে বা যাঁদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম, তাঁদের ক্ষেত্রে এই ভাইরাসের সংক্রমণ খানিকটা চিন্তার বিষয় হতে পারে। চিকিৎসক আরও বলেন, ‘‘খুব ছোট শিশু বা সদ্যোজাত শিশুদের একটি সুবিধা আছে, কারণ জন্মের সময় বা স্তনদুগ্ধের মাধ্যমে সে মায়ের থেকে যে অ্যান্টিবডিগুলি পেয়েছে সেগুলি তাকে অনেক রোগের হাত থেকে সুরক্ষা দেয়। সদ্যোজাতদের উপর যেমন কোভিডেরও খুব বেশি প্রভাব চোখে পড়েনি, ‌এইচএমপিভি-র ক্ষেত্রেও কিন্তু অন্যদের তুলনায় তারা বেশি সুরক্ষিত। চার বছরের বেশি বয়সি শিশুদের ক্ষেত্রে যদি জ্বর, সর্দি-কাশি হয় তা হলে এই সময় তারা যেন স্কুলে না যায়। এই সময় পুল কার, বদ্ধ ক্লাসরুম কিংবা ভিড় বাস-মেট্রোয় শিশুদের মাস্ক পরে থাকার পরামর্শ দেব। কোনও শিশুর যদি থ্যালাসেমিয়া, ক্যানসারের মতো জটিল রোগ থাকে তাদের ক্ষেত্রে কিন্তু এই ভাইরাসের সংক্রমণ মারাত্মক আকার নিতে পারে, তাদের জন্য বাড়তি সতর্কতা নিতে হবে।’’

এই ভাইরাসের সংক্রমণ কোভিডের মতো প্রাণঘাতী নয়, বলছেন চিকিৎসক শুভম সাহাও। তবে শিশুদের ও খুব বয়স্কদের সাবধানে থাকা জরুরি। কী ভাবে এই শিশুকে সংক্রমণ থেকে দূরে রাখবেন, জানালেন চিকিৎসক।

১) যে কোনও সংক্রমণ ঠেকানোর একমাত্র উপায় যে পরিচ্ছন্নতা, সে কথা আর নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না। এই সময় খুদেকে পরিচ্ছন্নতার পাঠ দিন বেশি করে। তারা যাতে সেই পাঠ মেনে চলে, সেই দিকে নজর দিন। খাওয়ার আগে হাতে সাবান দিতেই হবে, শুধুই যে ভাত খাওয়ার সময় হাত সাবান দিয়ে ধোবে তা নয়, একটা চকোলেট খেতে গেলেও দু’হাত সাবান দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে। অযথা ভয় পাবেন না, কিন্তু সতর্ক থাকতে ভুলবেন না। পরিচ্ছন্নতাই সংক্রমণ রুখতে পারে।

২) বাইরে থেকে এসে সোজা বাথরুমে গিয়ে পোশাক বদলে হাত মুখ সাবান দিয়ে তবেই খুদের কাছে যাবেন। কেননা, বাইরে নানান মানুষের সংস্পর্শে থাকার জন্যে অদৃশ্য ভাইরাস আপনার সঙ্গে বাড়িতে চলে আসতে পারে।

৩) যে সব বাচ্চার অ্যালার্জিজনিত হাঁচি, সর্দি লাগা বা হাঁপানির প্রবণতা আছে, তাদের সাবধানে রাখুন। বাড়ির বাইরে বেরোলে মাস্ক ব্যবহার করতে বলুন।

৪) এই ভাইরাসও ড্রপলেট, অর্থাৎ হাঁচি- কাশি মারফত ছড়ায়। এই ব্যাপারে সাবধানে থাকতে হবে। কারও সর্দিকাশি হলে তার কাছাকাছি যেতে নেই, এই বিষয়টা শিশুদের বুঝিয়ে দিতে হবে।

অন্য বিষয়গুলি:

HMPV Viral infection
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy