Yo Yo Honey Singh: What was the mystery of his life’s 2 years dgtl
Yo Yo Honey Singh
Yo Yo Honey Singh: একটি গানের জন্য নেন ৭০ লক্ষ! শাহরুখের হাতে চড় খেয়ে দু’বছর ‘গায়েব’ হয়ে যান হানি সিংহ
র্যাপার, পপ গায়ক, সুরকার, গীতিকার এবং অভিনেতা। হানি সিংহের পরিচয় দিতে গেলে এতগুলি শব্দ খরচ করতে হয়।
নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২২ জুলাই ২০২১ ১২:৩২
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১২৪
কোনও গডফাদার ছাড়াই বলিউডে এসেছিলেন। প্রথম সুযোগেই করেছিলেন বাজিমাত। র্যাপার, পপ গায়ক, সুরকার, গীতিকার এবং অভিনেতা। হানি সিংহের পরিচয় দিতে গেলে এতগুলি শব্দ খরচ করতে হয়।
০২২৪
খুব অল্প সময়ের মধ্যেই ইউটিউবার হানি হয়ে উঠেছিলেন বলিউডের সর্বোচ্চ পারিশ্রমিক পাওয়া প্রথম সারির গায়কদের মধ্যে এক জন। অমিতাভ, শাহরুখ, সলমনের সঙ্গেও কাজ করেছেন তিনি।
০৩২৪
কেরিয়ারের শীর্ষে থাকার সময় জনপ্রিয় এই গায়ক আচমকা রহস্যজনক ভাবে ইন্ডাস্ট্রি থেকে ‘অদৃশ্য’ হয়ে যান। টানা দু’বছর তাঁর কোনও খোঁজ ছিল না।
০৪২৪
ইয়ো ইয়ো হানি সিংহের আসল নাম হিরদেশ সিংহ। ১৯৮৩ সালের ১৫ মার্চ পঞ্জাবের হোসিয়াপুরের এক শিখ পরিবারে জন্ম।
০৫২৪
পরিবারের সকলে ভালবেসে তাঁকে হানি বলে ডাকতেন। পরে বড় হয়ে তিনি নিজের পরিচয় বানিয়ে ফেলেন এই নাম দিয়েই।
০৬২৪
বরাবরই সঙ্গীতে আগ্রহ ছিল তাঁর। ছোট থেকেই বিভিন্ন গানের প্রতিযোগিতায় যোগ দিতেন। গান নিয়েই যে তিনি কেরিয়ার গড়তে চান সে ব্যাপারে নিশ্চিত ছিলেন হানি।
০৭২৪
ব্রিটেনের ট্রিনিটি স্কুলে সঙ্গীত নিয়ে পড়াশোনা করেছেন। সেখানেই নামের আগে যোগ করার জন্য ‘ইয়ো ইয়ো’ শব্দযুগল পেয়ে যান তিনি। ‘ইয়ো ইয়ো’-র অর্থ হল আপনার আপন। কলেজে বন্ধুরা এই শব্দটির ব্যবহার করতেন খুব। সেখান থেকেই এটি শিখেছিলেন হানি।
০৮২৪
দেশে ফিরে হানি নিজের একটি ব্যান্ড বানিয়ে ফেলেন। তাঁর সঙ্গে ব্যান্ডের হয়ে কাজ করতেন বাদশা এবং রফতার নামে দু’জন র্যাপার। তাঁদের ব্যান্ড মূলত পঞ্জাবি গান গাইত।
০৯২৪
নিজেদের লেখা, নিজেদের সুর এবং নিজেদের কণ্ঠ- তিন মিলিয়ে পঞ্জাবি র্যাপ গানের অ্যালবাম বানাতে শুরু করেন তাঁরা। সেই ভিডিয়ো ইউটিউবে আপলোড করতেন।
১০২৪
ক্রমে জনপ্রিয় হয়ে উঠছিলেন তাঁরা। দিলজিৎ দোসাঞ্জ তখন ‘লায়ন অব পঞ্জাব’ নামে একটি ছবি করছিলেন। সেই ছবির একটি গান গেয়েছিলেন হানি। ২০১১ সালের ওই গান সে বছর বিবিসি-র এশিয়ান ডাউনলোড তালিকায় প্রথম হয়েছিল।
১১২৪
ওই বছরই হানির গানের অ্যালবাম ‘ইন্টারন্যাশনাল ভিলেজার’ মুক্তি পায়। এই অ্যালবামের প্রতিটি গান সুপারহিট হয়েছিল।
১২২৪
পঞ্জাবি ইন্ডাস্ট্রিতে জনপ্রিয় এই গায়ক এ বার বলিউডে ডাক পেতে শুরু করেন। বলিউডে তাঁর প্রথম গান ‘শকল পে মত জা’ ছবির। হানি যে গানে হাত দিচ্ছিলেন সেটাই সুপারহিট হয়ে যাচ্ছিল তখন।
১৩২৪
এর পর ‘মস্তান’ ছবির গানের প্রস্তাব পান তিনি। এই ছবির একটি গানের জন্য ৭০ লাখ টাকা পারিশ্রমিক নিয়েছিলেন তিনি। এখনও পর্যন্ত বলিউডে একটি গানের জন্য এটিই সর্বোচ্চ পারিশ্রমিক।
১৪২৪
বলিউডে গান, টেলিভিশনে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যোগদান, ইউটিউব চ্যানেল— সব দিকই সমান্তরাল ভাবে সামলাচ্ছিলেন হানি। বলিউড এবং ইউটিউব দু’টিতেই সমান জনপ্রিয় হয়ে উঠছিলেন ক্রমশ। যুব সমাজের কাছে হানি হয়ে উঠেছিলেন রকস্টার।
১৫২৪
শাহরুখ, সলমন, অক্ষয়, অমিতাভদের সঙ্গে কাজ করে ফেলেছিলেন তিনি। শাহরুখের খুব ঘনিষ্ঠ হয়ে উঠেছিলেন তিনি। গানের পাশাপাশি কয়েকটি ছবিতেও অভিনয় করে ফেলেছিলেন তত দিনে।
১৬২৪
২০১৪ সালে ‘হ্যাপি নিউ ইয়ার’ ছবি করছিলেন শাহরুখ। এই ছবিতে হানির একটি গান রাখতে চেয়েছিলেন শাহরুখ। কিন্তু ছবির সুরকারের সেটা পছন্দ ছিল না। হানিকে কাজ দিতে পারেননি ঠিকই, কিন্তু বিষয়টিকে হালকা করার জন্য শাহরুখ ছবির প্রচারমূলক অনুষ্ঠানে বন্ধু হানিকে সঙ্গে নিয়ে যান।
১৭২৪
এই সময়টিই হানির জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছিল। ওই প্রচারমূলক অনুষ্ঠানে কোনও একটি বিষয় নিয়ে শাহরুখের সঙ্গে তর্ক জুড়ে দিয়েছিলেন হানি। বলিউড বাদশাও বিষয়টি সহ্য করেননি। প্রকাশ্যে হানিকে চড় পর্যন্ত মেরেছিলেন শাহরুখ।
১৮২৪
কী নিয়ে তাঁদের মধ্যে ঝামেলা হয়েছিল তা আজও পরিষ্কার নয়। তবে এর পর শুধু শাহরুখের জীবন থেকেই নয়, বলিউড থেকেও যেন গায়েব হয়ে যান হানি। দু’বছর সে ভাবে তাঁর কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি। নিজেকে সারা ক্ষণই বাড়িতে বন্দি রাখতেন। কয়েক জন ছাড়া কারও সঙ্গে কথা বলতেন না। গান গাওয়াও ছেড়ে দিয়েছিলেন।
১৯২৪
অনুরাগীরা যখন হানির একটা ঝলক পাওয়ার জন্য ব্যাকুল হয়ে পড়েছিলেন, সে সময়ই মুখে অক্সিজেন মাস্ক লাগানো হানির একটি ছবি ভাইরাল হয়। ছবি দেখে হানির অনুরাগীদের মধ্যে প্রচুর প্রশ্নের দেখা দেয়। তখনও কেউ বুঝে উঠতে পারছিলেন না যে আসলে কী হয়েছে হানি।
২০২৪
পরে জানা যায়, চণ্ডীগড়ের একটি হাসপাতালে হানি ভর্তি ছিলেন সে সময়। অতিরিক্ত মাদক সেবনে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। নিজেকে সুস্থ করে তুলতেই চিকিৎসা করাচ্ছিলেন।
২১২৪
টানা দু’বছর ওই একটি মাত্র ছবি ছাড়া হানির এক ঝলকও দেখতি পাননি কেউ। দু’বছর পর নিজেই সকলের সামনে হাজির হন তিনি। সবাইকে অবাক করে দিয়ে তাঁর অদৃশ্য হয়ে যাওয়ার কারণ জানান।
২২২৪
এক সাক্ষাৎকারে হানি জানিয়েছিলেন, তিনি বাইপোলার ডিজঅর্ডার-এ আক্রান্ত হয়েছিলেন। তারই চিকিৎসা করাচ্ছিলেন। পুরোপুরি সুস্থ হয়ে তবেই সকলের সামনে হাজির হয়েছেন।
২৩২৪
তবে আজও হানির এই কথাগুলো পুরোপুরি মানতে পারেন না অনেকেই। তাঁদের মতে, শাহরুখের সঙ্গে লড়াই তাঁকে ইন্ডাস্ট্রি থেকে সরিয়ে দিয়েছিল।
২৪২৪
এই দু’বছরে অনেক কিছু বদলে গিয়েছিল। হানির চেয়ে কম পারিশ্রমিকের অনেক র্যাপার পেয়ে গিয়েছিল বলিউড। হানি কাজ করছেন ঠিকই কিন্তু তাঁকে নিয়ে আর সেই আবেগ বা উত্তেজনা নেই অনুগামীদের মধ্যে।