নচিকেতা চক্রবর্তী।
২৯ বছর আগে বাংলা আধুনিক গানের দুনিয়ায় প্রথম বদল এনেছিল তাঁর গান। রাজনৈতিকমনস্ক শ্রোতারা ভেবেছিলেন, তিনি সম্ভবত বাম সমর্থক। ২৯ বছর পরেও তাঁকে নিয়ে সেই ধোঁয়াশা। সম্প্রতি, গায়ক ফের মুখর মুখ্যমন্ত্রীর সমর্থনে। যদিও মঞ্চে তাঁর কণ্ঠে শোনা গিয়েছে ‘পথে এ বার নামো সাথী পথেই হবে পথ চেনা’-র মতো গান। যা সাধারণত বাম মঞ্চে শোনা যায়। ধোঁয়াশা কাটাতে স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠেছে, নচিকেতা আসলে কোন মতে বিশ্বাসী? কেনই বা তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমর্থক?
শিল্পী তাঁর গানের মতোই স্পষ্টবক্তা। সাফ জানিয়েছেন, ‘‘আমি আদতে স্বাধীন বামপন্থী। যদিও নিজস্ব কোনও দল নেই আমার।’’ তার পরেই তাঁর দাবি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে কী দেবেন! তিনিই মুখ্যমন্ত্রীর থেকে কখনও কিছু চাননি। কারণ, ২৯ বছর ধরে তাঁর গান শ্রোতাদের কাছে প্রাসঙ্গিক। আজও শ্রোতারা তাঁকে পাগলের মতো ভালবাসেন। তাতেই তিনি পূর্ণ। পাশাপাশি তাঁর যুক্তি, বামপন্থার সমস্ত গুণ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মধ্যে তিনি দেখতে পান। তাই তিনি মুখ্যমন্ত্রীর পাশে। উদাহরণ হিসেবে বলেন, রং দিয়ে রাজনৈতিক মতাদর্শকে মাপতে তিনি রাজি নন। তাই ৩৪ বছরের বাম রাজত্বের অবসান ঘটাতে তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে লড়াইয়ে নেমেছিলেন।
নচিকেতা বরাবর মানবদরদী। তাঁর ‘বৃদ্ধাশ্রম’, ‘ডাক্তার’ সহ একাধিক গান সে কথাই বলে। শিল্পী ‘নির্বাচন বনাম মানুষের জীবন’ নিয়েও তাই সরব। সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নের উত্তরে তাঁর ক্ষোভ, দেশ অতিমারিতে জর্জরিত। তার মধ্যেই বাংলায় ৮ দফা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। বিস্মিত শিল্পী এই পরিস্থিতিতেও কেন ৮ দফা ভোট হচ্ছে, তা কিছুতেই বুঝে উঠতে পারছেন না। তামিলনাড়ুর উদাহরণ টেনে তাঁর মত, ‘‘রাজ্যের অবস্থা বুঝে বাংলাতেও তামিলনাড়ুর মতোই এক দফায় নির্বাচন শেষ করে দেওয়া উচিত ছিল।’’ তার পরেই রাজ্য সরকারের স্বপক্ষে তিনি, শাসকদলের কিছুই করার নেই। পুরোটাই কেন্দ্রীয় সরকারের তুঘলকি শাসনের নামান্তর। এর কোনও প্রতিবাদ হবে না? শিল্পীর আশ্বাস, নতুন গান বেঁধে প্রতিবারের মতোই প্রতিবাদ জানাবেন তিনি।
ভারত লড়ছে অতিমারির বিরুদ্ধে। প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী এককাট্টা হয়ে লড়ছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে। সত্যিই তিনি এতটা প্রভাবশালী? নচিকেতার জবাব, ‘‘সবার কৌতূহল, কেন আমি মুখ্যমন্ত্রীর পাশে! আশা করি উত্তর মিলেছে। শুধুমাত্র মুখ্যমন্ত্রীকে ঠেকাতে বাংলায় ২২ বার ছুটে এলেন নরেন্দ্র মোদী। অমিত শাহ তো নিত্য যাত্রী। কেবল রেশন কার্ডটাই নেই তাঁদের।’’ নচিকেতার আশা, বুথে, ইভিএম মেশিনে কারচুপি না হলে শাসকদলই জিতবে। পাশাপাশি লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির বেশি সংখ্যক আসন দখলকেও সাদা চোখে দেখছেন না শিল্পী। সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে সে কথা জানাতেও ভোলেননি তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy