কাঞ্চন মল্লিক।
ব্যারাকপুরের প্রার্থী রাজ চক্রবর্তীর পরেই আনন্দবাজার ডিজিটালের কাছে মুখ খুললেন শাসকদলের আর এক প্রার্থী কাঞ্চন মল্লিক। সরাসরি তোপ দাগলেন পরিচালক ইন্দ্রাশিস আচার্য এবং বাম দলের বিরুদ্ধে। তাঁর অভিযোগ, ‘‘নির্বাচন এখনও শেষ হল না। আমরা এখনও মনোনীত প্রার্থী। নির্বাচিত প্রার্থীও নই। তার আগেই হঠাৎ করে নেটমাধ্যমে আমাদের ব্যক্তিগত নম্বর ফাঁস! এটা সভ্যতা? কিছুতেই ফোন খোলা রাখতে পারছি না।’’ এখানেই শেষ নয়। উত্তরপাড়ার প্রার্থীর প্রশ্ন, ‘‘কেন বেছে বেছে শাসকদল আর বিজেপি প্রার্থীদের নম্বরই শুধু দেওয়া হল? এর থেকেই প্রমাণিত, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে এই পোস্ট ছড়িয়েছে বাম দল।’’ তার পরেই তাঁর কটাক্ষ, করোনার কাজ কি রং দেখে হবে? বাম দলের সুজন চক্রবর্তী, দেবদূত ঘোষ, বাদশা মৈত্রর, শ্রীলেখা মিত্র, ঐশী ঘোষের ব্যক্তিগত যোগাযোগ নম্বর কেন দেওয়া হল না? বাম দল কাজ করতে চায় না?
কোন ঘটনা থেকে বিতর্কের সূত্রপাত?
সোমবার জনৈক নেটাগরিকের একটি পোস্ট শেয়ার করেন পরিচালক ইন্দ্রাশিস আচার্য। পোস্টে সমস্ত দলের রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের যোগাযোগ নম্বর ছিল। তালিকার শুরুতে লেখা কয়েকটি কথা, ‘করোনায় ভয় কিসের? আপনার পাশে মানুষের কাজ করার জন্য প্রাণ আনচান করা নেতারা! মাস্ক, স্যানিটাইজার, রক্ত, অক্সিজেন, অ্যাম্বুলেন্সের জন্য এক্ষুণি ফোন করুন...’। পোস্ট শেয়ার করতেই তা দেখতে দেখতে ভাইরাল হয়ে যায়। ফোনের পর ফোন আসতে থাকে তারকা প্রার্থীদের কাছে। প্রতিবাদ জানাতে থাকেন তিতিবিরক্ত তারকা প্রার্থীরা। যদিও পোস্ট শেয়ার করার পর আনন্দবাজার ডিজিটালকে ইন্দ্রাশিস জানান, ‘‘কাউকে কটাক্ষ, ব্যঙ্গ কিচ্ছু করিনি। যাঁরা চেয়েও কাজ করে উঠতে পারছিলেন না তাঁদের সাহায্য করেছি মাত্র। এমন ভয়ঙ্কর দিনে তাঁরা যদি সত্যিই মানুষের কাজে আসতে পারেন তাহলে মানুষেরও উপকার। তাঁরা এবং তাঁদের দলও প্রচার পাবে।’’
এখানেই আপত্তি কাঞ্চনের। তাঁর দাবি, ‘‘আমপানের সময় দুর্বার’ সমিতির জন্য, আমার সীমিত ক্ষমতা অনুযায়ী কাজ করেছি। তবে ঢাকঢোল পিটিয়ে জানাইনি। তার মানে এই, ‘কাজ করার সুযোগ করে দিচ্ছি’ অজুহাত খাড়া করে আমাদের ব্যক্তিগত নম্বর প্রকাশ্যে নিয়ে আসা হবে?’’ কাঞ্চনের যুক্তি, আজ একই ভাবে যদি ইন্দ্রাশিস আচার্য সহ বাম দলের সদস্য, সমর্থক এবং মনোনীত প্রার্থীদের নম্বর ফাঁস করে দেওয়া হয়, ওঁরা মেনে নেবেন? অভিনেতার দাবি, তিনি ফাঁস হয়ে যাওয়া নম্বরের ফোনটি খুলতে পারছেন না। ক্রমাগত সেখানে ফোন, মেসেজ আসছে। ‘‘আমি অবশ্যই সাহায্যপ্রার্থীকে সাহায্য করব। কিন্তু গোটা রাজ্যের দায় কি আমার একার?’’ পাল্টা প্রশ্ন ছুঁড়েছেন তিনিও। একই সঙ্গে হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন, এই ‘অসভ্যতা’ বন্ধ করতে প্রয়োজনে তিনি আইনি সাহায্য নেবেন।
বাম দলের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ কতখানি সত্যি? জানতে আনন্দবাজার ডিজিটাল কথা বলেছিল বাম সমর্থক, অভিনেতা শ্রীলেখা মিত্রের সঙ্গেও। তাঁর সাফ জবাব, ‘‘আমার কাছেও এই পোস্টটি এসেছিল। দেখে আমারও হাত নিশপিশ করছিল পোস্ট করার জন্য। কিন্তু করিনি। কোথাও গিয়ে আমার মনে হয়েছিল, এ ভাবে কারোর ব্যক্তিগত যোগাযোগ নম্বর বোধ হয় ফাঁস করে দেওয়া উচিত নয়।’’ পাশাপাশি প্রশংসাও করেছেন পোস্টটির, ‘‘বাম দল আক্ষরিক অর্থেই শিক্ষিত। যদি করেই থাকে, তা হলে সত্যিই বুদ্ধিদীপ্ত বদমায়েশি করেছে।’’
একই সঙ্গে তাঁর কটাক্ষ ‘বিজেমূল’-এর প্রতিও। দাবি, শাসকদল এবং বিরোধী পক্ষ হয়তো জেনে বুঝেই পরস্পরের নম্বর ছড়িয়ে দিয়েছে। এখন যত দোষ বাম দলের। এই নিয়েও ঘোর আপত্তি কাঞ্চনের। তাঁর কথায়, ইন্দ্রাশিস আচার্যও তাঁর সামাজিক পাতায় নাকি ঠিক এই অভিযোগই তুলেছেন। এই মিথ্যে অপবাদ একেবারেই মানছেন না তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy