উজান গঙ্গোপাধ্যায়। ছবি: সংগৃহীত।
দুই নৌকায় পা উজান গঙ্গোপাধ্যায়ের। এক দিকে অক্সফোর্ডের হাতছানি, অন্য দিকে সিনেমা বানানোর ইচ্ছেডাক! সোমবার বৃষ্টিমুখর দুপুরে সেই ভাবনায় ডুব দিলেন উজান। পোস্ট দিলেন ফেসবুকে। কোথাও কি আক্ষেপের চোরাস্রোত বইছে মনের আঙিনায়? আনন্দবাজার অনলাইনের কাছে নিজের ভাবনা প্রকাশ করলেন উজান।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজিতে স্নাতকোত্তরের পরে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে বিশ্বসাহিত্যে স্নাতকোত্তর। এর পরে অক্সফোর্ডেই উচ্চশিক্ষার পরিকল্পনা ছিল তাঁর। ভারত, ব্রিটেন ও দক্ষিণ আফ্রিকায় সেন্সরশিপের কাজের পদ্ধতি, রাজ্য সরকারের হস্তক্ষেপ ও ডিজিটাল মিডিয়ার সঙ্গে সেন্সরশিপের বিবর্তন নিয়ে গবেষণা করেছেন তিনি। অক্সফোর্ডের অধ্যাপকেরা বলেছিলেন, “এত ভাল ফল করার পরে সকলে পিএইচডির জন্য ঝাঁপিয়ে পড়ে।” উজানের কথায়, “উচ্চশিক্ষার আগে আমি কেন বিরতি নিলাম, সেটা তাঁদের ভাল করে বুঝিয়েছিলাম আমি। তাঁদের মধ্যে কেউ কেউ এখনও আশা করে আছেন, তাঁদের তত্ত্বাবধানে কোনও গবেষণার কাজে যোগ দেব।”
তবে এই বিরতির মেয়াদ সীমিত। এই মুহূর্তে উচ্চশিক্ষার জন্য ব্রিটেনে পাড়ি দেওয়ার পরিকল্পনা নেই যদিও। অক্সফোর্ডের হাতছানি উপেক্ষা করা বড়ই কঠিন, স্বীকারোক্তি উজানের। দু’বছর ধরে এই অনুভূতি বয়ে বেড়াচ্ছেন তিনি। তবে ছেলের উচ্চশিক্ষা নিয়ে দ্বিমত পোষণ করেন কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায় এবং চূর্ণী গঙ্গোপাধ্যায়।
এই প্রসঙ্গে উজানের বক্তব্য, “মা-বাবা দু’জন দুটো দলে। বাবা চান আমি সিনেমা জগতে থেকে যাই। আরও সিনেমার গল্প লিখি। আরও ভাল অভিনয় করি। তবে তা শুধু বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়।” অভিনেতা আরও যোগ করলেন, “অন্য দিকে মা বলেন, ‘তুমি এক জন স্কলার। তাই অ্যাকাডেমি জগতে আরও আনন্দে থাকবে তুমি।’ আমি দুই পক্ষের মতামত সম্পর্কে ওয়াকিবহাল। দু’জনের মতামতকেই সম্মান করি। আমি জানি, আমি কী করছি এই মুহূর্তে।”
“এই সিনে-পোকা আমায়, তোমার মাকেও ‘চুপিচুপি’ ডেকেছিল এক দিন…বাপ-মা তো, তাই এই পেশার চেনা অনিশ্চয়তা সন্তানের জীবনে ভাবতে শঙ্কা হয়!” উজানের পোস্টে মন্তব্য কৌশিক গঙ্গোপা্ধ্যায়ের। অন্য দিকে, চূর্ণী গঙ্গোপাধ্যায় লিখেছেন, “আমার দৃঢ় বিশ্বাস তুমি আবার পারবে। সেই সুদূর ঠান্ডা সূর্যহীন দেশের হাতছানিও বড় সাংঘাতিক। তা উপেক্ষা কোরো না।”
স্কুলজীবন থেকেই পড়াশোনার পাশাপাশি বিতর্কসভা, আবৃত্তি, ম্যাগাজ়িনের কভার ডিজ়াইন, গিটার বাজানো চলত জোরকদমে। এই সব কিছুর মিলিত বহিঃপ্রকাশ হল সিনেমা, মত উজানের। বললেন, “ছোটবেলা থেকেই সিনেমার গল্প বলার প্রতি প্যাশন রয়েছে। এখন হাতেকলমে সেটা করতে পারছি। তাই বিরতি নিয়ে আক্ষেপ নেই কোথাও। মর্যাদা দিতে পেরেছি নিজের ইচ্ছেকে।”
বর্তমানে বেশ কিছু ওয়েব শো-এর চিত্রনাট্য লেখার কাজ চলছে। সর্বভারতীয় স্তরে একটি অ্যানিমেটেড শো-এর চিত্রনাট্য ও পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছেন। “অভিনয় জগতে নিজের ছাপটুকু রেখে যেতে চাই, তা সে যত ছোট ছাপ হোক”, বললেন উজান।
কিন্তু অভিনয় জগতে নিজের পোক্ত জায়গা তৈরি করার পরে উচ্চশিক্ষায় যোগ দিলে সিনেমার কাজ স্থগিত রাখতে হবে। সে ক্ষেত্রে বিষণ্ণতা ঘিরে ধরবে? খানিক ভেবে নিয়ে উজানের উত্তর, “সমুদ্রের বেগ, উথালপাথাল তো থাকবেই। কাজের ভারসাম্য রাখার চেষ্টা করব। স্কুলজীবনে ঠিকঠাক করতে পেরেছি। তার পরে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় থেকে একটু চাপ হয়েছে বইকি! আমি জানি সহজ হবে না। সব দিক দিয়ে বিবেচনা করতে হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy