Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

কী উপহার সাজিয়ে দেব

পার্টি হোক কী বিয়েবাড়ি। রোজই নেমন্তন্ন। কিন্তু উপহার কী দেবেন? খোঁজ দিলেন সোমঋতা ভট্টাচার্য।পার্টি হোক কী বিয়েবাড়ি। রোজই নেমন্তন্ন। কিন্তু উপহার কী দেবেন? খোঁজ দিলেন সোমঋতা ভট্টাচার্য।

শেষ আপডেট: ১৮ ডিসেম্বর ২০১৫ ০০:০০
Share: Save:

আঠাশটা। নাহ্‌, কমবেশি একটাও নেই। গুনে গুনে ঠিক আঠাশ।

কিন্তু এতগুলো বিয়ের জন্য গিফ্‌ট বাছাই? সে যে বড় বিষম কাজ! রীতিমতো ল্যাপটপে আলাদা আলাদা ফাইল বানিয়ে প্ল্যানিং চলছে।

তা, গুঞ্জা-র ল্যাপিতে একবার উঁকি মেরে দেখা যাক তবে...

গয়নাগাঁটি চাইলে

একমাত্র খুড়তুতো দিদি টিকলি-র বিয়েতে গলায় পরার জমকালো একটা কিছু দিতেই হবে। এমনটাই দাবি গুঞ্জার মা-বাবার। সোনার দিকেই যে ঝুঁকতে হবে, এমনটা কে মাথার দিব্যি দিয়েছে? রুপো, ডোকরা, মিনাকারি, ওনিক্স, ড্রুজি, টার্কোয়াজ—এই সবের গয়না তো এখন ভীষণ ‘ইন’! রুপোর মিশেলে আফগানি এথনো কিছু নেকলেস দেখে চমকে গিয়েছে ওরাও। এক্সক্লুসিভ ডিজাইন সব।

সাউথ সিটি মলের একটি দোকানের তরফে পরিতোষ সরকার বললেন, ‘‘নতুন ধরনের, একটু অন্য রকমের গয়নার দিকে ঝোঁক বাড়ছে। বিয়ের মরসুমে সেগুলোর বিক্রি বেশি। নিজেরা পরার জন্য তো বটেই, গিফ্‌ট দেওয়ার জন্যও অনেকেই কিনছেন সেই সব গয়না।’’ এই যেমন, রুপো বা মিনাকারি-র ঝুমকি, বালি, হাতপুল, মাঙ্গটিকা, কাফ, অ্যাঙ্কলেট, হাসলি, কোরাল বিড্‌স-এর ব্রেসলেট, ব্যাঙ্গল, আফগানি ট্রাইবাল, জিপসি গয়না, যেগুলো বিয়ের উপহার হিসেবে দেওয়ার পক্ষেও যথেষ্ট জমকালো, এবং সে সব গয়না যে কোনও অনুষ্ঠানে বা রোজকার প্রয়োজনেও পরা যাবে ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে, দিব্যি।

ঘর-গেরস্থালির জন্য

যারা বিয়ের পরে ছোটখাটো একটা ফ্ল্যাটে নতুন সংসার পাতবে, তাদের বাসস্থানকে আনকোরা সাজিয়ে তুলতে জরুরি কিছু হালফ্যাশনের জিনিস। এমএনসি চাকুরে দীপ্তায়নের বিয়ে সামনের মাসেই। ইতিহাসের লেকচারার মৌ-এর সঙ্গে। তাঁর কথায়, ‘‘ছোট দু’কামরার ফ্ল্যাট হলেও কিছু আকর্ষণীয় জিনিস দিয়ে বেশ সুন্দর সাজানো যায়। সে রকমই ভাবছি আমি আর মৌ। এখন কিন্তু সে সবে অপশনের ছড়াছড়ি।’’ শহরের বিভিন্ন শপিং মলের দোকানগুলোয় বা বিভিন্ন শপিং ওয়েবসাইটে খোঁজ মিলতে পারে সাদা, খয়েরি, নীল, হলুদ, সবুজ, এ রকম নানা রঙের সেরামিকের টি-সেট, বিয়ার মাগের সেট, হুকা জাগ ও গ্লাস, ডিজিটাল প্রিন্টেড বা কটন কনফেটি কোস্টার, কলমকারি ডিজিটাল প্রিন্টেড কাঠের ট্রে, পিতলের রুপোলি রঙের ওয়াল ব্র্যাকেট, ট্রিঙ্কেট বক্স, পিতলের রুপোলি রঙের মুঘল বক্স, সেরামিকের হ্যান্ড-ক্রাফ্টেড উইন্ড চাইম, উইন্ড বেল, ভাস, কলমকারি ডিজিটাল প্রিন্টেড ঘড়ি, রুপোর ফোটো ফ্রেম, চেট্টিনাড হ্যান্ডহেল্ড আয়না, অরিগ্যামি পাত্র, পিতলের কাট-ওয়ার্ক অথবা ডুম শেপড্ সিলিং ল্যাম্প, টর্চ ল্যান্টার্ন, গ্লাস ল্যান্টার্ন, নিকেলের টি-লাইট হোল্ডার, মুনস্টার-সিল‌ভার ক্যান্ডল স্ট্যান্ড, ব্রাস মুঘল হ্যাঙ্গিং লাইট, ভোটিভ লাইট, হ্যান্ড-উভেন কটন, ইক্কত, কোটা দরিয়া তসরের পর্দা…

অনলাইনে তো বটেই, এই উপহারগুলো কিনে নিতে পারেন শহরের আর্ট মেলাগুলোতেও। দু’তরফ থেকেই নেমন্তন্ন থাকলে এই ‘কাপ্‌ল গিফ্‌ট’গুলোর কথা ভাবা যেতেই পারে।

একটু ‘আর্টিস্টিক’ যারা

যাঁরা আর্ট-এর সমঝদার, তাদের জন্য মধুবনী পেন্টিং, তিব্বতি টাঙ্কা পেন্টিং, মধ্যপ্রদেশীয় উপজাতির গোন্ড পেন্টিং, রাজা রবি বর্মার ক্যানভাস প্রিন্ট পেন্টিং, কালীঘাটের পেন্টিং হতেই পারে সুন্দর পরিণয়-উপহার। বিভিন্ন আর্ট মেলা, প্রদর্শনী থেকে কেনা যায় নবীন-প্রবীণ শিল্পীদের কাজ। তা সে পেন্টিং হোক, ভাস্কর্য বা কোনও ইনস্টলেশন। গড়িয়াহাটের একটি ছবি বাঁধাইয়ের দোকানি বিশ্বনাথ মণ্ডলও বলছেন, ‘‘শীতের সময়টাতে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অনেকেই পেন্টিং বাঁধাতে দেন। তার পরে সেগুলোকে রঙিন কাগজে মুড়ে উপহার হিসেবে নিয়ে যান। গোটা শীতকালটাই তো নানা অনুষ্ঠানের মরসুম।’’

‘কঠোর’ ভাবে ছেলেদের জন্য

মেয়েরা গয়না পাবে। শাড়ি। আরও কত কী! কিন্তু ভাই বা কোনও ছেলে বন্ধুর বিয়ে থাকলে? উপহারের তালিকা বানানোটা কি কঠিন হয়ে যায় আরও? না, ঠিক সে রকমটাও নয়। দেশি-বিদেশি বিভিন্ন ব্র্যান্ডের সুগন্ধি এবং ঘড়ি। ফরাসি সুগন্ধি বা ‘লো দো তোয়ালেত’-এর কদর বেশ! মেট্রো-সেক্সুয়ালরাও পিছিয়ে নেই গয়নাগাঁটিতে। ওনিক্স, ড্রুজি, টার্কোয়াজ-এর কিছু ব্রেসলেট তাঁদেরও পছন্দ। খুব কাছের কারও বিয়েতে হিরে-প্ল্যটিনামের ছোঁয়া রয়ে গেলে তো কেয়া বাত!

এই ভাবেই টুকটাক প্ল্যানিং গুটিয়ে আনা গিয়েছে। তার পরেও অভ্যাসের বশে ইন্টারনেট ঘাঁটতে ঘাঁটতে দু’চারটে মোক্ষম জিনিস খুঁজে পেয়েছে গুঞ্জা। কাকে এগুলো উপহার দেওয়া যায় তা অবশ্য ঠিক করে উঠতে পারেনি। কাউকে না দিলে কিনে রেখে দেবে নিজের জন্যই। যেমন কাঠ আর মার্বেলের চাকি-বেলুন। যে-সে জিনিস নয়, প্রায় ৭ হাজার টাকার কাছাকাছি দাম! রান্নাঘরে রাখলে গোটা বাড়িটাকেই মনে হবে যেন রাজস্থানের কোনও এক রাজার সাতমহলা। বা প্রায় ১০ হাজার টাকার কাঠের মশলার পাত্রের সেট। এমনকী দেশি-বিদেশি বেশ কিছু মাস্টার পরিচালকের সর্বকালের সেরা সিনেমার পোস্টার। ফ্রেম করে টাঙালে চেহারাই খুলে যাবে ঘরের।

অভিনবত্ব যখন সব কিছুতেই, উপহারও হয়ে যাক না ‘আউট অফ দ্য বক্স’!

অন্য বিষয়গুলি:

trendy gifts somrita bhattacharya
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE