স্রেফ স্রেফ মায়ের কথায় সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসেন গোবিন্দ, ‘প্রতারণা’ মানতে পারেননি নীলম
এক দিকে নীলম, অন্য দিকে সুনীতা। সম্পর্কের দোটানায় পড়ে যান গোবিন্দ। একসঙ্গে বেশ কিছু ছবি করার সূত্রে নীলমের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ক্রমে গাঢ় হয়।
নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২৭ জুলাই ২০২০ ১৬:১০
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৮
প্রযোজক প্রাণলাল মেটার অফিসে প্রথম নীলমকে দেখেছিলেন গোবিন্দ। পরে তিনি এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, হ্রস্ব সাদা পোশাকে নীলমকে তাঁর পরির মতো মনে হয়েছিল। প্রথম দেখাতেই নীলমের প্রেমে পড়ে যান তিনি।
০২১৮
পরে গোবিন্দ-নীলম জুটির বেশ কিছু সুপারহিট সিনেমা দর্শকদের মন জয় করেছে। কিন্তু পর্দার বাইরে তাঁদের রোমান্স অসম্পূর্ণ থেকে যায়। নীলমকে পাননি গোবিন্দ।
০৩১৮
সাধারণ পরিবার থেকে উঠে আসা গোবিন্দ কঠোর পরিশ্রমের পরে একটু একটু করে জায়গা করে নেন ইন্ডাস্ট্রিতে। কেরিয়ারের প্রথম দিকে নায়িকাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ দৃশ্যে অভিনয় করতে তাঁর খুব সমস্যা হত।
০৪১৮
নায়িকার সঙ্গে অন্তরঙ্গ দৃশ্যে গোবিন্দর আড়ষ্টভাব পছন্দ হত না পরিচালকদের। সে সময় গোবিন্দকে পরামর্শ দেন তাঁর ভাই। বলেন, তিনি যেন বাস্তব জীবনেও প্রেম করেন। বান্ধবীর সঙ্গে সময় কাটালে তিনি নায়িকাদের সঙ্গেও সহজ হতে পারবেন।
০৫১৮
সে রকম এক সময়ে গোবিন্দর জীবনে আসেন সুনীতা। প্রথমে সম্পর্ক ছিল নিছক বন্ধুত্বের। কিন্তু এক সময় সুনীতার কাছে অঙ্গীকারবদ্ধ হন গোবিন্দ। তখনও অবশ্য তিনি সুপারস্টার হননি।
০৬১৮
সুনীতার সান্নিধ্য তাঁর ব্যক্তিত্বে পরিবর্তন এনেছিল। পর্দায় নায়িকাদের সঙ্গে সহজ হতে পেরেছিলেন তিনি। পরে স্বীকার করেছিলেন গোবিন্দ। কিন্তু তারকা হয়ে যাওয়ার পরে জীবনের সমীকরণ পাল্টে যায় অনেকটাই।
০৭১৮
একদিকে নীলম, অন্য়দিকে সুনীতা। সম্পর্কের দোটানায় পড়ে যান গোবিন্দ। একসঙ্গে বেশ কিছু ছবি করার সূত্রে নীলমের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ক্রমে গাঢ় হয়।
০৮১৮
গোবিন্দর পরিবারে আসা যাওয়া ছিল নীলমের। নীলমকে পছন্দ করতেন গোবিন্দর বাবা-ও। কিন্তু বেঁকে বসেন গোবিন্দর মা। তিনি ছেলেকে স্পষ্ট বলেন, সুনীতার কাছে করা প্রতিশ্রুতি তাঁকে রক্ষা করতেই হবে।
০৯১৮
কিন্তু তখন সুনীতাকে বিয়ে করার ইচ্ছে ছিল না গোবিন্দর। তিনি তখন নীলমের প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছেন। তাঁর মা বলেন, বিয়ে করলে তাঁকে সুনীতাকেই করতে হবে।
১০১৮
অথচ নীলমের সঙ্গেও গোবিন্দর আলাপের প্রথম পর্বও যে খুব মসৃণ ছিল, তা নয়। বরং, প্রথম আলাপের পরে গোবিন্দ কথা বলতেও ভয় পেতেন নীলমের সঙ্গে। কারণ গোবিন্দ তখন ইংরিজি ভাল বলতে পারতেন না। ফলে সঙ্কোচে তিনি নীলমের থেকে কিছুটা দূরত্ব বজায় রাখতেন।
১১১৮
ধীরে ধীরে বরফ গলতে থাকে। নীলম বেশিরভাগ সময়েই সেটে চুপচাপ থাকতেন। অন্যদিকে, গোবিন্দ মজা করতেন তাঁর সঙ্গে। দু’জনের ব্যক্তিত্বে আকাশপাতাল পার্থক্য বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি প্রেমের পথে।
১২১৮
নীলমকে তাঁর এতটাই পছন্দ ছিল, সুনীতাকেও নাকি গোবিন্দ বলতেন নীলমের মতো হতে। তাঁর মতো সাজতে বা ফ্যাশন-সচেতন হতে। কিন্তু শেষ অবধি নীলম আর গোবিন্দর বিয়ে হল না। কারণ, মায়ের আদেশ অমান্য় করতে পারেননি গোবিন্দ।
১৩১৮
মায়ের কথা শুনে গোবিন্দ জীবনসঙ্গিনী হিসেবে মেনে নেন সুনীতাকেই। দু’জনে বিয়ে করেন ১৯৮৭ সালে। কিন্তু তাঁদের বিয়ে অনেক দিন গোপন ছিল ইন্ডাস্ট্রিতে। গোবিন্দ চাননি তাঁর ‘বিবাহিত’ পরিচয়ের জেরে ক্ষতিগ্রস্ত হোক ফ্যান ফলোয়িং।
১৪১৮
কিন্তু এক সময় প্রকাশিত হয়ে পড়ে গোবিন্দর বিবাহিত পরিচয়। সে কথা জানতে পেরে নীলম ভেঙে পড়েন। তিনি বুঝতে পারেন, সুনীতার সঙ্গে সম্পর্কে থাকার সময়েই তাঁর সঙ্গেও গোবিন্দ ঘনিষ্ঠ হয়েছিলেন। গোবিন্দর এই প্রতারণা মেনে নিতে পারেননি নীলম।
১৫১৮
গোবিন্দর সঙ্গে সব সম্পর্ক ভেঙে দিয়ে নীলম মন দেন শুধমাত্র নিজের কেরিয়ারে। কিন্তু সেখানেও বিধি বাম! প্রত্য়াশিত উচ্চতায় পৌঁছতে পারেননি তিনি। ২০০০ সালে নীলম বিয়ে করেন প্রবাসী শিল্পপতির ছেলে রীতেশ শেঠিয়াকে। কিন্তু সেই বিয়ে দীর্ঘস্থায়ী হয়নি।
১৬১৮
২০১১ সালে নীলম বিয়ে করেন অভিনেতা সমীর সোনিকে। ‘হম সাথ সাথ হ্যায়’ ছবির শুটিংয়ে দু’জনের আলাপ হয়েছিল। বিয়ের দু’ বছর পরে সমীর ও নীলম একটি কন্যাসন্তান দত্তক নেন। মেয়ের নাম তাঁরা রেখেছেন ‘অহনা’। সংসার সামলানোর পাশাপাশি নীলম এখন প্রতিষ্ঠিত জুয়েলারি ডিজাইনার।
১৭১৮
গোবিন্দর সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে কোনওদিন মুখ খোলেননি নীলম। তবে গোবিন্দ তাঁদের প্রেম নিয়ে বহুবার বলেছেন। তাঁর কথায়, ধনী পরিবারের মেয়ে নীলমের সঙ্গে তাঁর মানসিকতা ও সামাজিক অবস্থানের বহু পার্থক্য ছিল। কিন্তু সে সব তাঁদের সম্পর্কে ছায়া ফেলেনি।
১৮১৮
ভবিষ্যতের জন্য নীলমকে সবসময়েই শুভেচ্ছা জানিয়ে এসেছেন তাঁর প্রাক্তন প্রণয়ী চিচি। কিন্তু নীলম সবসময়েই গোবিন্দর প্রসঙ্গে নীরবতা বজায় রেখেছেন। তৃতীয় মুখ হয়ে কোনওদিন আসতে চাননি গোবিন্দ-সুনীতার দাম্পত্যেও।