গ্রাফিক: তিয়াসা দাস।
লকডাউন পরবর্তী টলিপাড়ায় ব্রাত্য হতে চলেছে সিনেমা!
সিরিয়াল পাড়ায় শুটিং শুরু নিয়ে ফেডারেশন থেকে আর্টিস্ট ফোরাম দফায় দফায় আলোচনায় বসলেও সিনেমা ছিল সেই সব মিটিং-এ কার্যত ব্রাত্য। টলিপাড়ার লক্ষ্মী কি তবে ধারাবাহিকের হাত ধরেই নতুন বসতি গড়বে?
কী বলছেন চলচ্চিত্র পরিচালকরা?
লকডাউনে একের পর এক ছোট ছবি বা শর্টস তৈরি করে দর্শককে নতুন ভাবনার সন্ধান দিয়েছেন শিবপ্রসাদ-নন্দিতা। কিন্তু আনলক-১ ফেসে শুটিং নিয়ে ঠিক কী ভাবছে তাঁদের প্রযোজনা সংস্থা?আনন্দবাজার ডিজিটালকে শিবপ্রসাদ বললেন, “আমাদের অনেকগুলো ছবি তৈরি আছে। ‘ব্রহ্মা জানেন গোপন কম্মটি’ মুক্তি পাবে আবার। ‘বেলাশুরু’ আর ‘লক্ষ্মী ছেলে’ও তৈরি। এখনই শুটের প্রয়োজন নেই আমাদের। এমনিতেই গরমে আমি শুট করি না। টপ সানে শুট হয় না। সব কিছু দেখি আগে। আমরা একটু সময় নিতে চাই”, নিজেদের প্ল্যান বুঝিয়ে দিলেন পরিচালক শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়।
আরও পড়ুন: ‘দাদা আমি বাঁচতে চাই’, লকডাউনে নীতার আর্তি আমায় তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে: পাওলি
টলিপাড়ার মিটিংয়ে সিনেমা ছিল কার্যত ব্রাত্য।
মঙ্গলবার সন্ধেবেলার মিটিং প্রসঙ্গে ইম্পার সভাপতি পিয়া সেনগুপ্তও বলেন, ‘‘আজকে সিনেমা সংক্রান্ত মিটিংটা হয়নি। পুরোপুরি সিরিয়াল নিয়েই মিটিংয়ে কথা হয়েছে। ফেডারেশন বা আর্টিস্ট ফোরাম আজ সিনেমা নিয়ে প্রস্তুত ছিল না। ওরা ওদের প্রস্তাবিত নির্দেশিকা আমাদেরকে পাঠাবে। ইম্পার সদস্যরা নিজেদের মধ্যে সেগুলো আলোচনা করার পর আমাদের (ইম্পার) পরবর্তী পদক্ষেপ জানাতে পারব।’’
তা হলে কি সরকারি ছাড়পত্র পেলেও সিনেমায় বিরতি টানছে টলিউড?
পরিচালক রাজ চক্রবর্তীর গলাতেও অপেক্ষার সুর। তিনি বললেন, “সরকার ক্লিন জোনে শুটের কথা বলেছেন। এটা ভাল বিষয়। তবে কোনটা কখন ক্লিন জোন হচ্ছে সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে। আমি ধরে নিলাম এই সময় জঙ্গলে শুট করতে গেলাম, কিন্তু আমার ইউনিটকে সেখানকার মানুষ কি ঢুকতে দেবে? এখন কিছু দিন অপেক্ষা করাই ভাল। আমাদের সব ফোরামের সঙ্গে কথা বলতে হবে। অভিনেতা আর টেকনিশিয়ান যাঁরা মাঠে নেমে কাজ করেন, তাঁরা আদপে কাজ করবেন কি না সেটা জানতে হবে। কালকেই কিছু করে ফেলা যাবে না! আর আমি সেপ্টেম্বরে বাবা হওয়ার পরেই বাড়ি থেকে বেরোব।”
লকডাউনেই চারটে নতুন ছবির চিত্রনাট্য লিখে ফেলেছেন পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায়। তাঁর কথায়: “নতুন সব ছবির প্রি প্রোডাকশনের কাজ শুরু করে দিয়েছি ইতিমধ্যেই। প্রি প্রোডাকশনের কাজ মানেও ছবিরই কাজ! তবে এ বছর ফ্লোরে আমার কোনও ছবি যাবে না।’’
লকডাউন পরবর্তী সময়ে টলিউড কি তবে ধারাবাহিক নির্ভর হয়ে যাবে?
শিবপ্রসাদ থেকে রাজ, উভয়েই তা এক কথায় অস্বীকার করেন। তাঁরা জানান, যে যার মতো ছবির কাজ করবে। যাদের ছবি তৈরি তারা এই মুহূর্তে ছবি করবে না, আর যাদের ছবির কাজ বাকি তারা নির্দেশ মেনে কাজ শুরু করবে। শিবপ্রসাদ বলেন, ‘‘আমাদের হাউজ বছরে একটা ছবি করে। তাই এখনই ছবি শুরুর তাড়া নেই। অন্য দিকে যে হাউজ ১২টা ছবি বানায় তারা নির্দেশ মেনে শুটিং ফ্লোরে কিছু দিন পরে নিশ্চয় যাবে।’’
বিষয়টা আরও পরিষ্কার হয় পরিচালক অরিন্দম শীলের বক্তব্যে। অরিন্দম বলেন, “আগে টেলিপাড়া কাজ শুরু করুক। তার পর টলিপাড়া। ভাবতে ভাল লাগছে, আলোচনা শুরু হয়েছে যখন, পথ একটা বেরোবেই। অর্থাৎ, দিন আনি দিন খাই টেকনিশিয়ানদের মুখগুলো কাজের আনন্দে, রোজগারের আনন্দে আবার ঝলমলিয়ে উঠবে। আর ঘনিষ্ঠ দৃশ্য নিয়ে এত ভেবে কী হবে? ধারবাহিকে এর প্রয়োজন পড়ে না। ওটা বড় পর্দার জন্য। এখনই তো একসঙ্গে ১০টা ছবির কাজ শুরু হচ্ছে না। তাই, যখন ছবির মতো করে ছবির কাজ শুরু করা যাবে তখন দেখা যাবে। আমি এ রকমটাই ভাবছি।”
আরও পড়ুন: ভিকি ডোনার থেকে গুলাবো সিতাবো, ‘ওয়ান্ডার বয়’ আয়ুষ্মানের যাত্রা শুরু টিভি থেকেই
কবে ফিরবে শুটিংয়ের সেই দিন? পরিচালকদের মধ্যেই নানা প্রশ্ন উঁকি দিচ্ছে। কিন্তু প্রযোজক কী ভাবছেন?
এসভিএফ-এর কর্ণধার মহেন্দ্র সোনি বললেন, “আমরা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। অপেক্ষা করছি নিয়মিত শুটিংয়ের নির্দেশাবলীর উপর। আমাদের কাজ শুরু করার কোনও তাড়া নেই। আমরা শুটের কথা তখনই ভাবব যখন কাজের ধারা পুরোটাই স্পষ্ট বোঝা যাবে। ফ্লোরে প্রত্যেকের নিরাপত্তাই আমাদের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এ মুহূর্তে যা নির্দেশ আছে তাতে ধারাবাহিক আর ওয়েবের কাজ করা গেলেও ছবির কাজ করা যাবে না। তাই ‘গোলন্দাজ’-এর কাজ আপাতত করছি না।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy