সৌরসেনী ও মিমি
জীবনের যে কোনও পদে দ্বিতীয় স্থান বোধহয় সবচেয়ে নিরাপদ। দ্বিতীয়র সামনে হাতছানি পয়লার! তবে এক বার যদি শীর্ষস্থান মুঠোবন্দি হয়, তবে উত্তরণের পথ কি বন্ধ? তাই মনে মনে যতই ইচ্ছে থাকুক, চট করে নিজেকে কোনও বিষয়ে পয়লা রেটিং দিতে চান না টলিউডের সেলেব্রেটি মহল। কিছুটা গদিচ্যুত হওয়ার আশঙ্কা, কিছুটা বিনয় আর কিছুটা সাবধানী হওয়ার চেষ্টা... এই তিনের দোলাচল তাঁদের মনে। আজ পয়লা বৈশাখে সেলেবদের কাছে আমাদের প্রশ্ন ছিল, জীবনের কোন কোন ক্ষেত্রে তাঁরা নিজেকে এক নম্বর রেটিং দেবেন...
গ্ল্যামারের চৌহদ্দি পেরিয়ে ভোট চাইতে জনতার দ্বারে মিমি চক্রবর্তী। প্রশ্ন রাখতেই বললেন, ‘‘নিজেকে পয়লা রেটিং দেওয়া সবচেয়ে কঠিন কাজ। মা বলেন, আমার মতো মেয়ে পেয়ে তিনি খুব গর্বিত। কিন্তু আমি সেটা মানি না। আমি নিজেকে একটা বিষয়েই পয়লা রেটিং দেব। আমার পোষ্যদের মা হিসেবে আমি এক নম্বর।’’ ইনস্টাগ্রামে যাঁরা মিমিকে ফলো করেন, তাঁরা এ কথার সত্যতা মিলিয়ে নিতে পারবেন।
টেলিভিশনের ‘রাসমণি’ দিতিপ্রিয়া রায় বয়সে কাঁচা হতে পারে। তবে কথাবার্তায় বেশ পরিণত। ‘‘শুটিং সামলেও ভাল রেজ়াল্ট করেছি। তাই বন্ধুরা বলে, আমি পড়াশোনায় এক নম্বর। তবে ওরা যে আমাকে তোল্লাই দিতে এ কথা বলে, সেটা বুঝি। মেয়ে হিসেবে ফার্স্ট না হলেও নিজেকে অনেক নম্বর দেব,’’ বলল কিশোরী। একই মত সৌরসেনী মৈত্রের। মডেলিংয়ে সাফল্য পাওয়ার পরে বড় পর্দাতেও ছাপ ফেলার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন নবাগতা। প্রশ্ন করতেই প্রথমে খিলখিলিয়ে উঠলেন। ‘‘মেয়ে, নাতনি আর ভাইঝি হিসেবে আমি এক নম্বর। কাকার সঙ্গে খুব ভাল সম্পর্ক আমার। আলসেমি আর খারাপ জোকস বলতে আমি অবশ্যই পয়লা।’’ সঙ্গে যোগ করলেন, ‘‘প্রেমের ব্যাপারে বন্ধুদের উপদেশ দিতেও আমি কিন্তু ফার্স্ট।’’
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
প্রথম হওয়া মানে অনেকে ভাবেন, হাড্ডাহাড্ডি লড়াই। আর নিজেকে পয়লা রেটিং দিলে ইন্ডাস্ট্রিতে ঠোকাঠুকি লেগে যাবে, আশঙ্কা অনির্বাণ ভট্টাচার্যের। তাঁর সাফ জবাব, ‘‘আমি কখনও প্রথম হইনি। হতে চাইও না।’’ পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায়কে এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে তিনিও বিনয়ের সঙ্গে উত্তর দিলেন, ‘‘আমার মধ্যে ফার্স্ট হওয়ার মতো কোনও গুণ নেই। তবে বন্ধুরা বলে, রসবোধ ও শব্দের খেলায় আমি ফার্স্ট। বাণিজ্যিক ও ফেস্টিভ্যাল ছবির মধ্যে ভারসাম্য রাখতেও ওদের মতে, আমি এক নম্বর।’’
আবীর ও ঋদ্ধি
ব্যক্তি ও পেশাদার জীবনের টানাপড়েনে অনেক সময়েই মানুষ নিজেকে খুশি করতে পারে না। সেই দুর্লভ গুণটি অর্জন করেছেন কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, ‘‘বিশ্বস্ত বন্ধু হিসেবে, সৎ মানুষ হিসেবে নিজেকে পয়লা রেটিং দেব। নিজেকেও আমি খুশি করতে পেরেছি।’’ তবে পরিচালক হিসেবে তিনি প্রথম নন। ‘‘আমার মতে, সেটা কেউই অর্জন করতে পারেননি। আমরা সকলে এই পথের যাত্রী।’’
যিশু-আবীর-অনির্বাণের মধ্যে প্রতিযোগিতায় দর্শকের একটা বৃহত্তর অংশ আবীর চট্টোপাধ্যায়কে এগিয়ে রাখবেন। তবে অভিনেতা বললেন, ‘‘পারফেকশন একটা মিথ। ফার্স্ট হয়ে গেলে তো এগোনোর আর পথ নেই। তবে বাবা হিসেবে আরও উপরের র্যাঙ্কে যেতে চাই। বন্ধুরা বলে, স্মার্ট কাজ করতে আমি পয়লা। আসলে স্মার্ট কাজ মানে লোকে ভাবে ফাঁকিবাজির কাজ। আদতে কিন্তু সেটা নয়,’’ মত তাঁর।
ছেলে আর বন্ধু হিসেবে নিজেকে এগিয়ে রাখতে চান ঋদ্ধি সেন। তাঁর কথায়, ‘‘বয়ফ্রেন্ড হিসেবে উন্নতির সুযোগ আছে। ‘নগরকীর্তন’-এ আমার পারফরম্যান্স নিয়ে আমি খুবই খুশি। তবে অভিনয়ের ক্ষেত্রে পয়লা কখনও বলা যায় না।’’
টলিউডের এই বাহিনীতে মোক্ষম উত্তর দিয়েছেন সোহিনী সরকার। পার্টি হোস্ট করতে আর খরচ করতে তিনি ফার্স্ট। তবে জবাবে প্রথমেই নায়িকা বলেছিলেন, ‘‘সময়ে লোকের কাছে টাকা চেয়ে নিতে আমি একেবারে পয়লা নম্বর নই। কিন্তু সেটা মনে-প্রাণে হতে চাই।’’
সাধে কি বলা হচ্ছে, পয়লার রেসে সোহিনী সবচেয়ে জোরে দৌড়চ্ছেন!
ছবি: দেবর্ষি সরকার
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy