মহাপীঠ-তারাপীঠের সেটে সেই বজরা। —নিজস্ব চিত্র
দাসানি-২ স্টুডিওর প্রবেশপথের বাঁ দিকের দুটো ফ্লোর পেরিয়ে খোলা চত্বর। সেই চত্বরেই দেখা গেল বিশাল এক মকরমুখী বজরা নৌকা বানানোর তোড়জোড়। হাতুড়ি ঠোকাঠুকির শব্দ ভেসে বেড়াচ্ছে বাতাসে। চলছে বজরার গায়ে ছবি আঁকা। স্টুডিওয় আসা কৌতূহলী লোকজন ভিড় করেছেন বজরার চারপাশে। কয়েক দিন ধরে তৈরি হল বজরা। বজরা ঘিরে নীল ক্রোমা কাপড়। দৃশ্যে নীল কাপড় উধাও হয়ে দেখা যাবে নদীর ওপর বজরা। খোঁজ নিয়ে জানা গেল, এটা আসলে নতুন ধারাবাহিক ‘মহাপীঠ তারাপীঠ’-এর সেট।
সবাই জানেন, সতীর ছিন্নভিন্ন দেহের এক অংশ পড়েছিল তারাপীঠেও। তারাপীঠ সতীর একান্ন পীঠের একটি। মা তারা এবং সাধক বামাখ্যাপার কাহিনি দেখানো হবে ধারাবাহিকে। এই কাহিনির কিছু দৃশ্য শুট হল বজরায়।
ধারাবাহিকের আর্ট ডিরেক্টর জয় চন্দ্র চন্দ্রকে পাওয়া গেল। অভিজ্ঞতা শেয়ার করলেন জয়, ‘‘এই সেটটা একেবারে অন্য রকম। প্রায় সত্তর ফুট লম্বা, আসল বজরার কাছাকাছি সাইজ। এটা এমন ভাবে তৈরি যে জলের উপর যে ভাবে বজরা দোলে সে ভাবে এটাকেও দোলানো সম্ভব।’’
বজরার গায়ে এক ধরনের পটচিত্র দেখতে পাওয়া যাচ্ছে। জয় বললেন, ‘দেবদেবীর পটচিত্র বজরার গায়ে ব্যবহার করা হয়েছে। সেইসঙ্গে আছে কিছু নকশাও।’’ বজরা মকরমুখী কেন? তিনি যোগ করলেন, ‘‘মকর যমুনার বাহন। সে কথা মনে রেখেই মাঙ্গলিক চিহ্ন হিসেবে মকরের মুখ ব্যবহার করেছি।’’
এত বড় বজরা বানানোর প্রয়োজন হল কেন? ধারাবাহিকের পরিচালক শিবাংশু ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘তারাপীঠ মন্দিরের প্রতিষ্ঠাতা জয়দত্ত বণিক বজরায় বাণিজ্য করতে যান। তিনি মা তারার ঘোর বিরোধী। কিন্তু এই বজরাতেই মা তারার কিছু লীলা হয়। তার পর থেকেই জয়দত্ত তারার উপাসক হন এবং মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন। তো সে জন্যই...। এর আগে এই ধরনের সেট বাংলা সিরিয়ালে হয়নি। এত বড় একটা বজরা জলে ভাসছে, বজরার ঘরে চরিত্র নিয়ে শুট হচ্ছে...দেখার ইমপ্যাক্টটাই অন্য রকম। আমরা চেষ্টা করেছি যাতে ভিজুয়ালি রিচ করা যায়। বজরায় শুট করে খুব আনন্দ পাচ্ছি। দর্শকরাও খুব আনন্দ পাবেন বলে মনে করি।’’
ধারাবাহিকের ক্রিয়েটিভ ডিরেক্টর সৃজিত রায় বললেন, ‘‘এটা টিমওয়ার্ক। সম্পূর্ণ কৃতিত্ব জয় চন্দ্র চন্দ্র’র। আমাদের টিম যে রকম ভেবেছে তিনি ঠিক সে রকম বজরা রূপায়ণ করেছেন। ক্রোমাতে শুট হলেও পরে কম্পিউটার গ্রাফিক্সে বজরা জলে ভাসিয়েছেন রজত দলুই। সব মিলিয়ে এই বজরা দর্শকদের কাছে একটা চমক হতে চলেছে।’’
ধারাবাহিকের প্রোডিউসার সুব্রত রায় অবশ্য বজরাটিকে আলাদা ভাবে দেখছেন না। বললেন, ‘‘গল্পে ছিল বলেই বজরা বানানো হয়েছে। বণিকের হিউজ বজরা তো এ রকমই হওয়া উচিত।’’
ধারাবাহিকে প্রথমে দেখা যাবে তারাপীঠ সৃষ্টির কাহিনি। যে অংশের শুট হয়েছে বোলপুরে। তার পরেই দর্শক দেখতে পাবেন বজরার দৃশ্য, তারা মা ও জয়দত্ত বণিকের কাহিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy