চলে গেলেন স্বাতীলেখা সেনগুপ্ত।
প্রয়াত অভিনেত্রী স্বাতীলেখা সেনগুপ্ত। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে কলকাতার এক বেসরকারি হাসপাতালে বুধবার তাঁর মৃত্যু হয়। দীর্ঘ দিন ধরে কিডনির সমস্যায় ভুগছিলেন তিনি। ডায়ালিসিস চলছিল তাঁর। এমনকি, ২১ দিন আইসিইউতেও ভর্তি ছিলেন স্বাতীলেখা। চলতি বছর ২২ মে ৭১-এ পা দিয়েছিলেন বর্ষীয়ান অভিনেত্রী। মঞ্চ দাপিয়ে বেড়ানো সেই অভিনেত্রীর পথ চলা থমকে গেল বুধবার। চলে গেলেন সত্যজিৎ রায়ের ‘বিমলা’।
১৯৮৪ সালে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় এবং ভিক্টর বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে পর্দায় অভিনয়ের যাত্রা শুরু স্বাতীলেখার। সত্যজিৎ রায়ের বিখ্যাত ছবি ‘ঘরে বাইরে’-র ‘বিমলা’ অভিনয় নিয়ে আজও প্রশংসায় পঞ্চমুখ বাংলা ছবির দর্শক। সেই থেকে সৌমিত্র ও স্বাতীলেখার জুটিকে পছন্দ করেছিলেন অনুরাগীরা। কিন্তু তার পরে মঞ্চের বাইরে দেখা যায়নি তাঁকে। দীর্ঘ ৩১ বছর পরে সৌমিত্রর সঙ্গেই পর্দায় ফিরলেন তিনি। প্রযোজক-পরিচালক নন্দিতা রায় ও শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের হাত ধরে বড় পর্দায় দেখা যায় তাঁকে। ‘বেলা শেষে’ ছবিতে সৌমিত্র-স্বাতীলেখার রসায়ন দেখে আপ্লুত দর্শকদের জন্য ফের ‘বেলাশুরু’-তে অভিনয় করেন তাঁরা। কিন্তু ছবি মু্ক্তি পাওয়ার আগেই চলে গেলেন নায়ক-নায়িকা। গত বছর নভেম্বর মাসে মৃত্যু হয় সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের। বুধবার চলে গেলেন স্বাতীলেখাও।
‘ঘরে বাইরে’-তে সেই সময় দাঁড়িয়ে সন্দীপ-বিমলার চুম্বন দৃশ্য ঝড় তুলেছিল দর্শক মহলে। সেই যুগে বাংলা ছবিতে চুম্বন জল-ভাত ছিল না। স্বাতীলেখা বলেছিলেন, ‘‘কিন্তু জানো, আমার কোনও অসুবিধা হয়নি। ৭-৮ বার টেক দিতে হয়েছিল। বারবার ওঁর শালে আমার হাত চাপা পড়ে যাচ্ছিল। কিন্তু ওই দৃশ্যে শাঁখা পলা দেখানোটা খুব দরকার ছিল, অর্থাৎ এয়ো-স্ত্রী র চিহ্ন। সৌমিত্রবাবু এত সহজ করে দিলেন বিষয়টি, নবাগতা আমি কত সহজেই করে ফেললাম বিষয়টি। এখনও মনে পড়ে।’’
১৯৭০ সালে ইলাহাবাদে মঞ্চজীবন শুরু তাঁর। মঞ্চজীবনে পেয়েছেন বিভি করন্থ, তাপস সেন এবং খালেদ চৌধুরীর মতো ব্যক্তিত্বের সান্নিধ্য। ১৯৭৮ সালে ‘নান্দীকার’ নাট্যদলের সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধেন তিনি। সেখানেই আলাপ ও প্রেম হয় নাট্যব্যক্তিত্ব রুদ্রপ্রসাদ সেনগুপ্তের সঙ্গে। তার পরে বিয়ে এবং সংসার। ভারতীয় নাট্যজগতে তাঁর অবদানের জন্য সঙ্গীত নাটক অ্যাকাডেমি পুরস্কারও পেয়েছিলেন প্রয়াত অভিনেত্রী। তাঁর কন্যা সোহিনী সেনগুপ্তও একই ভাবে নাট্য ও পর্দার জগতে নিজের পরিচয় তৈরি করেছেন। মঞ্চে ‘শঙ্খপুরের সুকন্যা’, ‘মাধবী’, ‘পাতা ঝরে যায়’ ইত্যাদিতে তাঁর প্রতিভার স্বাক্ষর রেখাছিলেন স্বাতীলেখা। নান্দীকার-এর বেশ কিছু নাটকের সঙ্গীত পরিচালকের দায়িত্বও পালন করেছেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy