Swastika Mukherjee wears traditional saree for Durga Puja at Cima art gallery and compares herself with Frida Kahlo dgtl
Swastika Mukherjee
দুধে ধোয়া শাড়ি, কানে আবোল তাবোল, স্বস্তিকার পুজোর সাজে আর কোন বিশেষ সংযোজন?
‘‘দুধ কা ধুলা হুয়া সাধারণত কটাক্ষ করে বলা হয়। তবে আজ আমি সত্যি দুধে ধোয়া শাড়ি পরেছি। সারা শাড়িতে দুধের গন্ধ”, বললেন অভিনেত্রী।
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতাশেষ আপডেট: ০৪ অক্টোবর ২০২৪ ১৫:৩১
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১১
এ বছরের দুর্গাপুজো যেন অন্য বারের তুলনায় একটু হলেও আলাদা। দ্রোহকালে পুজো, তবে কাজ থামলে চলবে না। তাই তারকা থেকে সাধারণ মানুষ যেমন প্রতিবাদে পথে নামছেন সমান তালেই চলেছে তাঁদের কর্মজীবন। তাই এ বছরের পুজোয় সিমা আর্ট গ্যালারির শাড়িতে সাজলেন অভিনেত্রী স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়। কিন্তু সাজে রইল কখনও রক্তকরবীর নন্দিনীর ছোঁয়া, কখনও হয়ে উঠলেন ফ্রিদা কাহলো।
গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।
০২১১
স্বস্তিকা বরারই পোশাকের ক্ষেত্রে ছক ভাঙতে চান। সেই জায়গা থেকে তিনি পছন্দ করলেন লাল টুকটুকে একটা সুতির কাঞ্চিপূরম শাড়ি। সারা গায়ে ছোট্ট ছোট্ট সোনালি জরির কাজ। শাড়িটা পরেছেন কিন্তু ব্লাউজ় নয়, কাফতানের সঙ্গে। গলায় মণিপুরি হার, খোঁপায় লাল রঙ্গন ফুল, হাতে শাঁখা। সাজে রয়েছে ‘রক্তকরবী’র নন্দিনীর ছোঁয়া। সঙ্গে জুতো নয়, বরং চটি পরে ছবি তুললেন।
০৩১১
স্বস্তিকা শুটের ফাঁকেই জানান, সিমার সঙ্গে তাঁর বহু বছরের সম্পর্ক। বাবা সন্তু মুখোপাধ্যায় জীবিত থাকতে প্রতি বছর পুজোর সময় বাড়ির জন্য বিছানার চাদর কিনে নিয়ে যেতেন। সেই ধারা আজও অব্যাহত। স্বস্তিকাও এ ক্ষেত্রে বাবার জুতোতেই পা গলিয়েছেন।
০৪১১
স্বস্তিকার পরবর্তী সাজে ছিল প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের ছোঁয়া। খাঁটি তসরের উপর কলমকারি করা। তবে শাড়ি পড়া মাত্রই নিজেকে যেন ‘দুধ কা ধুলা হুয়া’র সঙ্গে তুলনা করলেন অভিনেত্রী। আসলে শাড়িটা যে খাঁটি, তার প্রমাণই যেন দিতে চাইলেন অভিনেত্রী। নিজেই বললেন, ‘‘দুধ কা ধুলা হুয়া সাধারণত কটাক্ষ করে বলা হয়। তবে আজ আমি সত্যি দুধে ধোয়া শাড়ি পরেছি। সারা শাড়িতে দুধের গন্ধ।’’ খাঁটি কলকারি শাড়ি যে হেতু ছাগলের দুধ দিয়ে ধোয়া হয় সেই কারণে একটা গন্ধ থাকেই। এটাই প্রমাণ যে, তাঁর পরনের শাড়িটি কিন্তু খাঁটি।
০৫১১
এই শাড়ির সঙ্গে যে হালকা রঙের জ্যাকেট পরেছিলেন তাতে ছিল কাশ্মীরি কাজ। পিঠে লেখা ‘পিস্’ অর্থাৎ শান্তি। ইউরোপে এই ধরনের জ্যাকেট প্রায় বিপ্লব ঘটিয়েছে। বিপুল চাহিদাও রয়েছে। এ বছরের পুজোর ফ্যাশনে সিমার অন্যতম আকর্ষণ এই জ্যাকেট বেজায় পছন্দ হয়েছে স্বস্তিকারও।
০৬১১
শাড়িটা পরেছিলেন ধুতির মতো করে। চুলে এ বারও ফুল। তবে এ বার তাঁর চুলে লাল জবা, সঙ্গে রুপোর ভারি গয়না। গোটা সাজটাই পোশাকশিল্পী অভিষেক রায়ের পরিকল্পনা। তিনি অবশ্য এ বছরের পুজোয় কলকাতার গরমে ধুতির মতো করে শাড়ির পরার পরামর্শই দিলেন। এর ফাঁকে অভিষেক বললেন, ‘‘স্বস্তিকাকে একটা ফিউশন লুক দেওয়ার চেষ্টা করেছি এই সাজে। তবে ওকে যাই পরাই মানিয়ে যায়।’’
০৭১১
আশ্বিন মাসে পুজো হলেও কলকাতায় যেন অধিকাংশ সময় গরম। সেই কথা মাথায় রেখেই স্বস্তিকার পরবর্তী শাড়ি গোলাপি ধূসর রঙের মিশ্রণে তৈরি এই হ্যান্ডলুম শাড়ি। সঙ্গে ক্রুশুরে কাজ করা সাদা ব্লাউজ়। নাকে রুপোর নথ, ইয়ার কাফে অবশ্য ষোলো আনা বাঙালিয়ানা। সুকুমার রায়ের আবোল তাবোল। এই সাজের সঙ্গেও চুলে রঙিন ফুল, কপালে গোলাপি টিপ।
০৮১১
অভিনেত্রী ফুলের প্রতি নিজের ভালবাসার কথা জানাতে গিয়ে তাঁর অন্য এক নামের উদ্ঘাটন করলেন। ফুলের প্রতি ভাল লাগা তাঁর ফ্রিদা কাহলোকে দেখে। অভিনেত্রীর বোন তাঁকে ডাকেন ‘ফুলকুমারী’ নামে।
০৯১১
পোশাক নিয়ে কখনওই তাঁর খুব বেশি ছুতমার্গ নেই। তবে ফুল তাঁর বড্ড প্রিয়। পুজোর ক'টা দিন ফুল দিয়ে নিজেকে সাজাতে চান তিনি। তবে, সে ক্ষেত্রে সাজের ধরন হবে খানিকটা মেক্সিকোর চিত্রশিল্পী ফ্রিদা কাহলোর মতো। আসলে স্বস্তিকা ফ্রিদার সঙ্গে নিজের বেশ কিছু মিল খুঁজে পান। যার মধ্যে অন্যতম হল সাজে ফুলের ব্যবহার। স্বস্তিকার কথায়, ‘‘আসলে ফ্রিদা এমন একজন নারী, যিনি ওই সময়ে দাঁড়িয়ে যেমনটা ভেবেছিলেন, তা এই সময় আমাদের চলার পথে মনে হয় যেন আমাদেরই কথা। ফ্রিদা এমন এক বৈগ্রহিক ব্যক্তিত্ব যাঁকে অনুকরণ করতে ইচ্ছে হয়। নারী হিসাবে ওঁর লড়াই ও স্বতঃস্ফূর্ত চিন্তাভাবনা এই সময় অনেককে পথ দেখাচ্ছে।’’
১০১১
এমন বিপ্লবের সময় স্বস্তিকা সাজপোশাকের ক্ষেত্রে ফ্রিদাকে মিস্ করছেন। অভিনেত্রীর কথায়, ‘‘আমার বিশ্বাস, ফ্রিদা এমন সময় বেঁচে থাকলে ইনস্টাগ্রামের দুনিয়ায় তাঁর অনুসরণকারীর সংখ্যা সর্বাধিক হত। তিনি কী ভাবে সাজগোজ করছেন সেই ছবি যদি দিতেন, আমি অবশ্যই নকল করতাম সেই সাজ।’’
১১১১
নবমীর রাতের জন্য স্বস্তিকা বেছে নিয়েছিলেন সোনালি টিস্যুর শাড়ি। নাম দিলেন গয়না শাড়ি। যদিও এই শাড়ির সঙ্গে খুব বেশি কিছু গয়না পরেননি অভিনেত্রী। কপালে লাল গুঁড়ো টিপ, চুলে লাল ফুল ও আঙুলে লাল আংটি। স্বস্তিকার কথায়, ‘‘আসলে এই শাড়িটা এতটা ঝলমলে, গয়না শাড়ি বলা ভাল। এই ধরনের হালকা অথচ জমকালো শাড়ি নবমীর রাতের জন্য ভাবা যেতেই পারে। এর সঙ্গে গুঁড়ো টিপ পরেছি, সেটা আমার মায়ের থেকে পাওয়া। বেনারস গেলেই মা কিনে আনতেন, এখন কলকাতাতেই পাওয়া যায়।’’