সুশান্তের বাবার এই বয়ান দ্বন্দ্ব তুলে দিয়েছে পরিবারের ভেতরেই। ছবি ইনস্টাগ্রাম থেকে নেওয়া।
অবসাদে আত্মহত্যায় মৃত্যু হয়েছে সুশান্ত সিংহ রাজপুতের। মানসিক যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরেই রবিবার নিজের ঘরে গলায় ফাঁস দেন তিনি। ময়না তদন্ত এবং ভিসেরা রিপোর্ট এবং প্রাথমিক তদন্তে এই তথ্য উঠে এসেছে। সমান্তরাল ভাবে তদন্তে জায়গা করে নিয়েছে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক, পেশাগত শত্রুতা শেষ করে দেয়নি তো ৩৪ বছরের তরতাজা প্রাণ? বলিউডে যা আকছার ঘটে?
এই দিকে আলো ফেলতেই সদ্য প্রয়াত অভিনেতার অন্তিম সংস্কার হওয়ার পরে মঙ্গলবার তাঁর বাবা কেকে সিংহের সঙ্গে কথা বলে মহারাষ্ট্র প্রশাসন। বয়ানে কী উঠে এসেছে? কেকে সিংহ পরিষ্কার জানিয়েছেন, “ছেলেকে অনেক সময়েই মনমরা, বিষণ্ণ দেখতাম। ডিপ্রেশনে ভুগত, জানতামই না!” শুধু সুশান্তের বাবা নন, পরিবারের কেউই জানতেন না ক্রমশ অবসাদে ডুবে যাচ্ছিলেন সুশান্ত। চিকিৎসা নিয়ে ওষুধও খেতেন একটা সময়। ফলে, তাঁদের সন্দেহের তালিকায় আপাতত কেউই নেই।
সুশান্তের বাবার এই বয়ান দ্বন্দ্ব তুলে দিয়েছে পরিবারের ভেতরেই। কারণ, সুশান্তের মামা সিবিআইকে ইতিমধ্যেই বলেছেন, আত্মহত্যা নয়, খুন হয়েছেন অভিনেতা-ভাগ্নে। ভাল করে নাড়াচাড়া করলেই বেরিয়ে আসবে অনেক অজানা তথ্য। সুশান্তের এক ভগ্নিপতি হরিয়ানা প্রশাসনের কর্তাব্যক্তি। তাঁরও সন্দেহ, সুশান্তের এই মৃত্যু নিয়ে।
সুশান্তের তুতো ভাই এবং বিজেপি বিধায়ক নীরজ বাবলু টিনসেল টাউনের অন্দরের এই‘ঘোটালা’র পক্ষেই নাকি মুখ খুলেছেন! তিনি জানিয়েছেন, বলিউডের অন্দরমহল থেকে ইদানীং প্রায়ই হুমকি ফোন পাচ্ছিলেন সুশান্ত। সে দিকে নজর দিলে হয়তো উঠে আসবে অনেক রাঘব বোয়ালের নাম। যাঁদের কলকাঠির জোরে ক্রমশ কোণঠাসা হয়ে পড়েছিলেন অভিনেতা ১০ বছরে চড়চড়িয়ে উন্নতি করার পরেও।
সদ্য প্রয়াত অভিনেতার অন্তিম সংস্কার হওয়ার পরে মঙ্গলবার তাঁর বাবা কেকে সিংহের সঙ্গে কথা বলে মহারাষ্ট্র প্রশাসন। ছবি- ইনস্টাগ্রাম থেকে নেওয়া।
এই অভিযোগের পেছনে নীরজের যুক্তি, অনেকেই সহ্য করতে পারছিলেন না সুশান্তের এই উন্নতি। তাই তাঁকে টেনে নামাতে নানা চাপ দেওয়া হচ্ছিল, যার জেরে এই আত্মহনন। তিনি রীতিমতো হুমকি দিয়ে বলেছেন, সময় মতো সবার কীর্তি ফাঁস করবেন। আপাতত তিনি সুবিচার চেয়ে আবেদন করেছেন মহারাষ্ট্র প্রশাসনের কাছে। কিছুদিনের মধ্যেই দুধ আর জল আলাদা হয়ে যাবে। এঁদের মিলিত আর্জিকে গুরুত্ব দিয়ে ইতিমধ্যে রাজ্যের গৃহমন্ত্রী অনিল দেশমুখ টুইটে আত্মহত্যার পাশাপাশি পেশাগত শত্রুতার দিকটিও খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছেন।
তাই বাবা এবং বাকি আত্মীয়দের পরস্পরবিরোধী বয়ান প্রশ্ন তুলেছে, তদন্তের মোড় ঘোরাতে ইতিমধ্যেই কি চাপ আসতে শুরু করেছে প্রয়াত অভিনেতার পরিবারের ওপর?
একই সঙ্গে বিস্মিত বহুজন, দূরে থাকে বলে ছেলে কেমন আছে, কী করছে...খোঁজ নেবে না, জানবে না পরিবার!
আরও পড়ুন: হোঁচট খেলে হাত টেনে ধরার লোক পায়নি সুশান্ত, লিখলেন সুজিত সরকার
এদিকে পরিবারের পাশাপাশি মুম্বই পুলিশ লাগাতার জিজ্ঞাসাবাদ চালাচ্ছে সুশান্তের একদম কাছের বন্ধু‘পবিত্র রিশতা’খ্যাত মহেশ শেট্টিকে। তাঁর থেকেই প্রথম সবাই জানতে পারেন, অবসাদে ভুগছিলেন অভিনেতা। নিয়মিত ওষুধ নিতে হত। শেষের কিছুদিন সেই ওষুধও বন্ধ করে দেন তিনি।
একপ্রস্থ জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে সুশান্তের ক্রিয়েটিভ ম্যানেজার সিদ্ধার্থ পিঠানিকেও। অভিনেতার আর্থিক অবস্থা, কাজকর্ম, বলিউডে তাঁর অবস্থান সম্বন্ধে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে তাঁকে। আগামী দিনেও আবারও তাঁকে জেরা করা হয়ে পারে, এমনটাই খবর।
আরও পড়ুন: ‘আমি যদি তোমার ভেঙে যাওয়া মনটাকে জোড়া দিতে পারতাম... ’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy